বড়দের মতো শিশুরও মাথাব্যথা হতে পারে। এটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। তবে শিশু এবং বয়স্কদের মাথাব্যথায় কিছুটা পার্থক্য আছে। শিশুর মাথাব্যথা দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী হয় না। কোনো কোনো সময় এক-আধ ঘণ্টার মধ্যে সেরে যায়। শিশুর মাথাব্যথার সঙ্গে বমি ও বমি ভাব বয়স্কদের তুলনায় বেশি পরিলক্ষিত হয়।
সাধারণত গরমে, বদহজমজনিত কারণ বা অস্বস্তি, ঘুম কম হলে, সারাক্ষণ ডিভাইসের দিকে তাকিয়ে থাকলে এবং এমনকি স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তা থেকেও শিশু মাথাব্যথার শিকার হয়ে থাকে। অনেকে আবার স্কুল ফাঁকি দেওয়ার ফন্দি হিসেবে মাথাব্যথার আশ্রয় নিয়ে থাকে। খুব অল্প কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর অসুখের কারণে শিশুর মাথাব্যথা হয়ে থাকে।
অনেক সময় শিশুর চোখের সমস্যাজনিত কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। মাথাব্যথার সঙ্গে যদি চোখে কোনো উপসর্গ দেখা দেয়, পড়ার সময় যদি চোখ দিয়ে পানি বের হয়, বই চোখের কাছে টেনে নেয়– তাহলে এর সহজ সমাধান হচ্ছে চোখের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
বেশির ভাগ শিশু রোদ সহ্য করতে পারে না। কখনও এমন হয়, স্কুলে পিটি করার সময় বা অ্যাসেমব্লির সময় হঠাৎ করে শিশুর মাথাব্যথা শুরু হয়ে যায়। এসব ক্ষেত্রে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে শিশুকে ছাতা, ক্যাপ ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে অভিভাবকদের স্কুলে গিয়ে শ্রেণিশিক্ষক বা পিটি শিক্ষকের সঙ্গে শিশুর রোদজনিত সমস্যা নিয়ে মতবিনিময় করতে হবে।
শিশুর যদি মাইগ্রেনের সমস্যা হয় এবং মাথাব্যথার কারণ যদি বংশগত হয়, তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অনেক সময় শিশুর সাইনোসাইটিস, ব্রেইন টিউমারের কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ব্যথা তীব্রতর নাও হতে পারে। অনেক সময় মাথাব্যথা বমির পর হালকা হয়ে যায়। শিশুর মৃগীরোগ বা এপিলেপ্সি রোগ হলেও মাথাব্যথা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে খিঁচুনির সমস্যা নাও থাকতে পারে।
মাথাব্যথা হলে প্যারাসিটামল সেবনের জন্য কেউ আর আজকাল চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া প্যারাসিটামল বা ব্যথার ওষুধ সেবন করা উচিত নয়। শিশুর মাথাব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে বা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে শিশুর রোগের কারণ অনুযায়ী চক্ষুবিশেষজ্ঞ, নাক-কান-গলা রোগবিশেষজ্ঞ বা নিউরোলজিস্টের শরণাপন্ন হোন।
লেখক: অধ্যাপক, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, ঢাকা
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে: ট্রাম্প
ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ইসরায়েল ও ইরান সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির প্রক্রিয়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধাপে ধাপে কার্যকর হবে এবং এই যুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে।
রয়টার্স ও আল জাজিরা ট্রাম্পের ট্রুথ সোশালে করা পোস্টের বরাতে এ খবর দিয়েছে। তবে ইরান বা ইসরায়েলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য আসেনি।
আরো পড়ুন:
কাতারে মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার ‘উচ্চ সতর্কতা’ জারি
‘ইরানে রেজিম চেঞ্জ হলে কে ক্ষমতায় বসবে, তা কেউ বলে দিতে পারে না’
ট্রাম্প এক বিবৃতিতে জানান, “ইসরায়েল ও ইরান পরস্পরের চলমান সামরিক অভিযান শেষ করে আগামী ৬ ঘণ্টার মধ্যে একটি প্রাথমিক যুদ্ধবিরতিতে যাবে। এই যুদ্ধবিরতি প্রথমে ১২ ঘণ্টার জন্য কার্যকর হবে। এরপর ২৪ ঘণ্টা পূর্ণ হলে যুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ বলে বিবেচিত হবে।”
তিনি আরো বলেন, “ইরান প্রথমে যুদ্ধবিরতি শুরু করবে এবং ১২ ঘণ্টা পরে ইসরায়েলও তাদের অভিযান বন্ধ করবে। একে একে দুই দেশই শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক আচরণ করবে।”
ট্রাম্প এই সমঝোতাকে একটি বড় সাফল্য হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এই ১২ দিনের যুদ্ধ কয়েক বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতে রূপ নিতে পারত, কিন্তু তা হয়নি এবং আর কখনোই হবে না।”
ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, “এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং অবশেষে দুই পক্ষকে একটি সমঝোতায় আনতে পেরেছে।”
সোমবার (২৩ জুন) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় কাতার ও ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক ঘণ্টা পরেই এই ঘোষণা দেন ট্রাম্প।
ঢাকা/ফিরোজ