পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং ভারতে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণের ঘটনায় প্রভাব পড়েছে বিমান সংস্থাগুলোর ব্যবসায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থা ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলছে। বিকল্প রুটে চলাচলের কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতে লাগছে বাড়তি সময়। এতে খরচ হচ্ছে অতিরিক্ত জ্বালানি। তবে হজ ফ্লাইট পরিচালনায় কোনো প্রভাব পড়ছে না।

গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক সংঘাতের কারণে ঢাকামুখী তিনটি ফ্লাইটকে রুট পরিবর্তন করে অন্য গন্তব্যে অবতরণ করতে হয়েছে। সেগুলো কুয়েত ও তুরস্ক থেকে আসছিল। গতকাল ভোরে রুট পরিবর্তনের কারণে মধ্যপ্রাচ্যগামী ফ্লাইটগুলো পৌঁছাতে প্রায় আধাঘণ্টা সময় বেশি লেগেছে। পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলছে সব সংস্থা। তবে ভারতের আকাশসীমায় চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

বিবৃতিতে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম জানান, ভারত-পাকিস্তান আকাশপথ বর্তমানে অনিরাপদ বিবেচিত হওয়ায় বাংলাদেশমুখী তিনটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট তাদের গন্তব্য পরিবর্তন করেছে। এর মধ্যে তুরস্ক থেকে রওনা হওয়া টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট পাকিস্তানের আকাশপথ এড়িয়ে ওমানের মাসকট বিমানবন্দরে অবতরণ করে। কুয়েত থেকে রওনা হওয়া জাজিরা এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটকে ঘুরিয়ে দুবাইয়ে নেওয়া হয়। একই এয়ারলাইন্সের আরেকটি ফ্লাইট কুয়েতে ফিরে যায়।

গতকাল বিকেলে কামরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘যে ফ্লাইটগুলো অন্য গন্তব্যে অবতরণ করেছিল, সেগুলো ঢাকায় পৌঁছাতে শুরু করেছে। এখন বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক।’

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এবিএম রওশন কবীর সমকালকে বলেন, সকাল থেকেই পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলছে বিমানগুলো। ওমান উপসাগর হয়ে আরব আমিরাতের ওপর দিয়ে উড়োজাহাজগুলো গন্তব্যে চলে যাচ্ছে। এ জন্য ফ্লাইটের সময় ৩০ মিনিট বেশি লাগছে। এতে জ্বালানি খরচ বাড়বে। তবে টিকিটের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে বিমানের অপারেশন বিভাগ তাৎক্ষণিক অন্য দেশের আকাশসীমা ব্যবহারে অনুমতি নিয়ে রুট পরিবর্তন করতে পারে। সেটাই করা হয়েছে। তবে হজ ফ্লাইটে অসুবিধা হবে না।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ মহাব্যবস্থাপক মো.

কামরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় যেতে বুধবার সকাল থেকে বিকল্প রুট ব্যবহার করছে তাদের বিমানগুলো। করাচির পরিবর্তে মুম্বাইয়ের আকাশসীমা ব্যবহার করে সংযুক্ত আরব-আমিরাত যাচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ ল ইট

এছাড়াও পড়ুন:

হেলিকপ্টারে বউ-সন্তান নিয়ে ফিরলেন রকেট

গত ১৭ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় থাকেন রাকিবুল ইসলাম রকেট। সেখানে তিনি বিয়ে করেন কম্বোডিয়ান এক তরুণীকে। সেই থেকে বাবা-মায়ের একটি স্বপ্ন, ছেলে একদিন হেলিকপ্টারে চড়ে প্রবাসী স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ফিরবে গ্রামে। সেই দৃশ্য দেখবে সাত গ্রামের মানুষ। অবশেষে বাবা-মায়ের সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিলেন রাকিবুল ইসলাম রকেট।

সোমবার (৫ মে) সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের পালশা গ্রামে হেলিকপ্টারযোগে স্ত্রী, কন্যা সন্তান, শাশুড়ি ও শ্যালককে নিয়ে পৌঁছান রকেট। হেলিকপ্টার অবতরণের খবরে ওই এলাকার পালশা উচ্চবিদ্যালয় মাঠ ও রকেটের বাড়ির সামনে জড়ো হন হাজারো মানুষ। প্রবাসী বউকে একনজর দেখতে এবং হেলিকপ্টার দেখার উৎসাহে বিভিন্ন এলাকার মানুষ ছুটে আসেন সেখানে।

রকেট পালশা গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত কৃষক আব্দুর রশিদ প্রামাণিকের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে যাত্রা করে হেলিকপ্টারটি পালশা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। হেলিকপ্টার থেকে নামার পর রকেট ও তার পরিবারকে ফুলের মালা দিয়ে স্বাগত জানান স্বজন ও প্রতিবেশীরা। এলাকায় আনন্দ-উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে।

রকেটের বড় ভাই রাসেল রানা বলেন, ‍“রকেট মালয়েশিয়ায় কাজ করেন। সেখানেই তার সঙ্গে পরিচয় হয় কম্বোডিয়ান তরুণীর। পরে তাকে বিয়ে করেন রকেট। তাদের ঘরে কন্যাসন্তান রয়েছে।” 

তিনি আরো বলেন, “বিয়ের পর থেকেই বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল, রকেট যেন হেলিকপ্টারে করে বউ-সন্তান নিয়ে গ্রামে ফেরে। সেই ইচ্ছা পূরণ করতেই এই আয়োজন।”

প্রতিবেশী মেরাজুল ইসলাম বলেন, “১৭ বছর আগে রকেট মালয়েশিয়ায় যান। শুনেছি, সেখানে এখন শ্রমিক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসাও করেন তিনি। সেই ছেলে আজ হেলিকপ্টারে করে বিদেশি বউ ও সন্তান নিয়ে ফিরে এসেছে। এটা আমাদের সবার জন্য আনন্দের।”

রকেটের মা রাফিয়া বেগম বলেন, “আমার ছেলে ১৭ বছর পর বাড়িতে ফিরেছে। তাই ইচ্ছা ছিল, ও যেন হেলিকপ্টারে বউ-সন্তান নিয়ে আসে। আজ সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই আশপাশের গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ বাড়ি ও বিদ্যালয় মাঠে ভিড় করেছে।”

রাকিবুল ইসলাম রকেট বলেন, “বাবা–মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। দীর্ঘদিন পর নিজ গ্রামে এসে আত্মীয়-স্বজন আর প্রতিবেশীদের ভালোবাসা পাচ্ছি, এটা সত্যিই আনন্দের।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারত–পাকিস্তান পাল্টাপাল্টি হামলা: ঢাকাগামী তিন ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন
  • হেলিকপ্টারে বউ-সন্তান নিয়ে ফিরলেন রকেট