বাংলাদেশে সবচেয়ে তপ্ত মাস এপ্রিল। এবার এপ্রিলে গরম অবশ্য গত বছরের মতো অতটা তীব্র ছিল না। তবে মে মাসের শুরু থেকে ধীরে ধীরে গরম বাড়ছে। গরমে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতেই নাভিশ্বাস ওঠে মানুষের। এর মধ্যে ব্যায়াম করা হয়ে ওঠে কঠিন।
কিন্তু গরমেও নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। বিশেষ করে যাঁদের ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, স্থূলতা বা রক্তে বাড়তি চর্বির সমস্যা আছে, তাঁদের জন্য এই সময়েও ব্যায়াম করাটা জরুরি। তবে গরমে ব্যায়াম অথবা শরীরচর্চা করার সময় কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
কখন ও যেসব ব্যায়াম করবেন
‘গ্রীষ্মকালীন ব্যায়াম’ বলে কিছু নেই। সাধারণ সময়ে যেসব ব্যায়াম করেন, সেগুলোই এ সময় করতে পারেন। তবে গরমের সময় দুপুরে বা রোদে ব্যায়াম করা ঠিক নয়। ভোরবেলা বা সন্ধ্যার পর অপেক্ষাকৃত শীতল সময় বেছে নেওয়া ভালো।
প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোক, পানিশূন্যতা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। অনেক সময় বাইরে না গিয়ে বাড়িতেও হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় কমপক্ষে ১০ মিনিট দড়ি লাফ দিতে পারেন। দিন দিন সময় আরও বাড়িয়ে দিন। কম সময়ের জন্য সহজ ব্যায়াম এটি।
জুম্বা অর্থাৎ নাচের মাধ্যমে করা একধরনের শারীরিক ব্যায়ামও বাড়িতে সম্ভব। বাসায় নিয়ম করে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন। কোনো বিপণিবিতান বা মার্কেটেও ঘুরতে যেতে পারেন। সেখানে ঠান্ডার মধ্যে হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। ইয়োগা বা ধ্যানও করতে পারেন। এটি কোনো ঘাম না ঝরালেও শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
যা করবেন
গরমের সময় লিফট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। সিঁড়ি ব্যবহার করুন। দুপুরে ও রাতে খাওয়ার পর ছাদে বা বাড়ির সামনের ফাঁকা জায়গায় বা সামনের রাস্তায় একটু হেঁটে আসুন। গরমকালে সবচেয়ে ভালো ব্যায়ামগুলোর একটি সাঁতার। এতে গরমের যন্ত্রণা থেকেও রেহাই মেলে।
ভালো করে ধুয়ে-মুছে শুয়ে পড়ুন শীতল মেঝেতে। মেঝের শীতলতা আপনাকে গরম থেকে মুক্তি দেবে। শুয়েও কিছু কিছু ব্যায়াম করতে পারেন; যা আপনার কোমরে বা পিঠে ব্যথা থাকলে সারিয়ে দেবে।
বিভিন্ন ধরনের স্ট্রেচিং ব্যায়াম, যেমন আর্ম স্ট্রেচিং বা লেগ লিফটিং করতে পারেন। এতে খুব একটা ঘাম হয় না, কিন্তু রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় এবং চর্বি ঝরে যায়।
সাইকেল চালানোর অভ্যাসও করতে পারেন। এতে একদিকে যেমন ব্যায়াম হবে, অন্যদিকে বাতাস লাগার কারণে গরমে আরাম লাগবে।
ব্যায়ামের সময় গরমে অনেক ঘাম হতে পারে। তাই প্রচুর পরিমাণ পানি পান করবেন।
এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব য য় ম কর র সময় করব ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে থাকা লালনের গানের পাণ্ডুলিপি ফেরত চাইলেন কুষ্টিয়ার ডিসি
কুষ্টিয়ার আশ্রম থেকে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ৩১৪টি গানের মূল পাণ্ডুলিপি ভারতের কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিলেন শিলাইদহের তৎকালীন জমিদার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ঐতিহাসিক সেই গানের পাণ্ডুলিপি বর্তমানে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার ভোলপুর শহরে অবস্থিত শান্তি নিকেতন রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পাণ্ডুলিপি ফেরত আনার দাবি জানাচ্ছিলেন লালন ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও গবেষকরা। তবে তা ফেরত পাওয়া যায়নি।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন একাডেমিতে পাণ্ডুলিপিগুলো ফেরত চেয়েছেন। এ জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছেন তিনি। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) এ আবেদন পাঠানো হয়েছে।
লিখিত আবেদনে ডিসি উল্লেখ করেছেন, কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন আশ্রম থেকে লালন শাহের গানের একটি খাতা কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিলেন কুষ্টিয়ার শিলাইদহের তৎকালীন জমিদার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যা বর্তমানে শান্তি নিকেতনে সংরক্ষিত আছে। প্রায় ১৩৫ বছরের পুরোনো উক্ত খাতায় লালন শাহের ৩১৪টি গান রয়েছে। ইতোপূর্বে শান্তি নিকেতন থেকে লালন শাহের গানের পাণ্ডুলিপির একটি অনুলিপি প্রেরণ করা হলেও, মূল পাণ্ডুলিপি সেখানেই রয়ে গেছে।
প্রতি বছর লালন তিরোধান দিবস ও লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে লক্ষ লক্ষ দেশ-বিদেশি লালন ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও লালন গবেষকদের আগমন ঘটে। তাদের সবার পক্ষ থেকে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে ফেরত আনার দাবি উঠেছে। তদুপরি সরকার ১৭ অক্টোবর লালন তিরোধান দিবসকে ‘ক’ শ্রেণির দিবস হিসেবে ঘোষণা এবং জাতীয়ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় লালন তিরোধান দিবসের গুরুত্ব আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও লালন গবেষকদের দাবির প্রেক্ষিতে লালন গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে সংগ্রহ করে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
এমতাবস্থায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে ফেরত এনে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, “লালনের ৩১৪টি গানের মূল পাণ্ডুলিপি ফেরত আনার জন্য আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করছি। আমরা কলকাতা থেকে সেগুলো দ্রুত কুষ্টিয়ায় ফেরত আনতে চাই। এ জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ