সাভারে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে দ্রুত গতির ট্রাকের ধাক্কায় মো. হোসেন (৫৫) ও সায়াত শেখ (৩৫) নামে ২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। তবে পালিয়ে গেছেন ট্রাকের চালক।

শুক্রবার (৯ মে) সকাল ১০ টার দিকে এ তথ্য জানিয়েছেন সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম। এর আগে আজ ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার আরিচামুখি লেনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত মো.

হোসেন ভোলা জেলার চরফ্যাশন থানার উসমান নগর গ্রামের মৃত ফজল হক মুন্সির ছেলে ও সায়াত শেখ শরিয়তপুর জেলার জাজিরা থানার সদর আলী মাদবর কান্দি গ্রামের ধলু শেখের ছেলে।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঠিকানা পরিবহনের একটি বাস যাত্রী নেওয়ার জন্য দাঁড়ায়। এসময় পিছন থেকে দ্রুত গতির একটি ট্রাক বাসটিকে ধাক্কা দিলে সায়াত শেখ ও হোসেন নামের দুইজন গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে সাভারের সুপার মেডিকেলে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি সওগাতুল আলম বলেন, “এঘটনায় চালক পালিয়ে গেলেও ট্রাক ও বাস জব্দ করা হয়েছে। কোন অভিযোগ না থাকায় নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।” 

ঢাকা/সাব্বির/টিপু  

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ