জাহিদুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ফারিয়া তিন দিনের রিমান্ডে
Published: 9th, May 2025 GMT
বেসরকারি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২২) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ফারিয়া হক ওরফে টিনাকে (২০) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিন রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ শুক্রবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এই আদেশ দেন। আদালত সূত্র এই তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে।
ফারিয়া বেসরকারি ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ছাত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। জাহিদুল হত্যা মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছিল পুলিশ। শুনানি নিয়ে তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এই হত্যা মামলায় দায় স্বীকার করে ইতিমধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মো.
পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মাহাথির জবানবন্দিতে বলেছেন, হত্যার সময় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন। পূর্বপরিচিত দুজন নারী শিক্ষার্থী তাঁকে ফোন করে অভিযোগ করেছিলেন, জাহিদুল তাঁদের দেখে অশোভন ভঙ্গি ও হাসাহাসি করেছেন। তাই তিনিসহ তিনজন ঘটনাস্থলে যান। পরে ওই দুই নারী শিক্ষার্থীর পূর্বপরিচিত মেহেরাজ ইসলামসহ অন্যরা জাহিদুলকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান।
এই মামলায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানায়। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন মেহেরাজ ইসলাম, আলভী হোসেন জুনায়েদ, আল আমিন সানি ও মো. হৃদয় মিয়াজী।
পুলিশ বলছে, গত ১৯ এপ্রিল বিকেলে রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কয়েকজন দেশি অস্ত্র নিয়ে জাহিদুল ও তাঁর বন্ধু তরিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালান। হামলায় গুরুতর আহত জাহিদুলকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এ ঘটনায় জাহিদুলের ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২৫ থেকে ৩০ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
জাহিদুল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)