পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এআই ব্যবহারের ৬ কৌশল
Published: 9th, May 2025 GMT
পরীক্ষার আগে প্রস্তুতি নিয়ে দুশ্চিন্তা করেন না—এমন শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া কঠিন। পড়ার চাপ, রাতজাগা আর নোট গোছানো—সবকিছু মিলিয়ে পরীক্ষার আগে প্রস্তুতির সময়টা বেশ কঠিন। তবে প্রযুক্তির অগ্রগতির এই সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের সহায়তা নিয়ে পড়াশোনার চাপ কিছুটা কমানো যায়। সঠিকভাবে ব্যবহার করা হলে এআই পড়াশোনার সময় কার্যকর সহকারী হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, এআই সব সময় নির্ভুল তথ্য দেয় না। আর তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে। পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এআইয়ের সহায়তা নেওয়ার ছয় কৌশল দেখে নেওয়া যাক।
১.প্রবন্ধ লেখায় সহায়তা
সেমিস্টারের শেষ দিকে অনেক শিক্ষার্থীকে বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধ বা গবেষণাপত্র জমা দিতে হয়। এসব লেখায় কাঠামো, যুক্তি ও তথ্যসূত্র গুরুত্বপূর্ণ। এআই টুল ব্যবহার করে সহজেই প্রবন্ধের খসড়া, বিষয়ভিত্তিক লেখা কিংবা গবেষণার ধারণা পাওয়া যায়।
২. নোট থেকে প্রাসঙ্গিক তথ্য খুঁজে বের করাপরীক্ষার প্রস্তুতির বড় একটি অংশ হলো নোট থেকে প্রাসঙ্গিক তথ্য খুঁজে বের করা। চাইলে ব্যবহারকারী তার নিজের নোট এআই চ্যাটবটে দিয়ে সংক্ষেপে সাজিয়ে নিতে পারেন। এতে সময় বাঁচে, আর গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো আলাদা করে সহজে পড়া যায়।
৩. অডিওর মাধ্যমে পড়াশোনাবিভিন্ন এআই টুলের মাধ্যমে সহজেই বিভিন্ন বিষয় পডকাস্টের মতো করে শোনা সম্ভব। এমনকি দুটি এআই চরিত্রের কথোপকথনের মাধ্যমে পড়ার বিষয়গুলো ব্যাখ্যাও করে নেওয়া যায়। ফলে হাঁটার সময় বা দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে পডকাস্ট শুনে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব।
৪. জটিল বিষয় সহজ করে ব্যাখ্যাঅনেক সময় বারবার পড়ার পরও নির্দিষ্ট বিষয় সহজে বোঝা যায় না। এসব ক্ষেত্রে এআই চ্যাটবট ব্যবহার করে বিষয়টি সহজ ভাষায় বুঝে নেওয়া যায়।
৫. ছবি ও ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা তৈরিবর্তমান এআই টুলগুলো লেখা ছাড়াও ছবি ও চার্ট তৈরিতেও পারদর্শী। জিপিটি ৪ও সংস্করণে চ্যাটজিপিটির ভিজ্যুয়াল প্রসেসিং ক্ষমতা আরও উন্নত হয়েছে। এটি ডেটা থেকে চার্ট, ফ্লোচার্ট বা অন্যান্য গ্রাফিক উপস্থাপন তৈরি করতে পারে, যা অনেক জটিল বিষয় সহজ করে বুঝতে সহায়তা করে।
৬. যাচাই করাপরীক্ষার আগে নিজেকে যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এআই ব্যবহার করে ব্যবহারকারী ফ্ল্যাশকার্ড, কুইজ কিংবা প্রশ্নোত্তর অনুশীলনের মাধ্যমে তার প্রস্তুতি কতটা কার্যকর হয়েছে, তা পরখ করে নিতে পারেন।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
অপতথ্য ও এআইয়ের অপব্যবহার রোধে আশা ও সীমাদ্ধতা, দুটিই দেখছে ইসি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্য এবং এআইয়ের (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) অপব্যবহার ঠেকাতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কাজ করছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। এ ক্ষেত্রে আশা ও সীমাবদ্ধতা, দুটিই দেখছেন তিনি।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসি আয়োজিত সংলাপের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় সানাউল্লাহ এ কথা জানান। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন, তিনজন নির্বাচন কমিশনার এবং পাঁচটি দলের প্রতিনিধিরা এই পর্বে আলোচনায় অংশ নেন।
সানাউল্লাহ বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রথমত ভালো তথ্যের প্রবাহ বাড়িয়ে খারাপ তথ্যকে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ছাড়া রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থী—উভয়ই নির্বাচনী আচরণবিধির আলোকে একটা অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করছেন, যেখানে তাঁরা আচরণবিধি প্রতিপালনের কথা বলেছেন। সবাই দায়িত্বশীল আচরণ করলে অপতথ্যের প্রভাব কমানো যাবে বলে ইসি মনে করে।’
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় যতটুকু সক্ষমতা আমাদের আছে, এর পাশাপাশি সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে আমরা ইউএনডিপির (জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি) যে প্ল্যাটফর্মটা আছে, সেটাও ব্যবহার করছি। তবে এটা খুব একটা সহজ কাজ নয় বর্তমান বিশ্বে। আমি ইসির পক্ষ থেকে অনেকগুলো ইলেকটোরাল ম্যানেজমেন্ট বডির (নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা পর্ষদ) সঙ্গে বৈঠক করেছি। সবারই উদ্বেগ এখন এটা যে কীভাবে এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপপ্রয়োগ, অপব্যবহার, এআইয়েরর অপব্যবহার রোধ করা হবে। তবে আমরা যদি সবাই সচেতন থাকি, তাহলে কিছুটা অবশ্যই করা সম্ভব।’
‘প্রায় ৫০ শতাংশের উৎস দেশের বাইরে’
নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, বর্তমান সময়ে তথ্যের প্রবাহ থামানো যাবে না। কারণ, ৫০ শতাংশের বেশির উৎস ট্রেসই (শনাক্ত) করা সম্ভব নয়; কোত্থেকে উৎপত্তি হচ্ছে, এটাই বের করা যাবে না। এটা একটা বৈশ্বিক বাস্তবতা। প্রায় ৫০ শতাংশের উৎস দেশের বাইরে। মেটাসহ (ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান) যতগুলো প্রোভাইডার আছে, এরা যে মানদণ্ডে একটা জিনিসকে সরিয়ে দেয়, সেই মানদণ্ডে বেশির ভাগই পড়ে না। তার মানে, চাইলেও সে সরাবে না কন্টেন্টটা।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘তাহলে আমরা কী করতে পারি? আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রথমত ভালো তথ্যের প্রবাহ বাড়িয়ে খারাপ তথ্যকে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।...আমরা ভালো তথ্যের প্রবাহ বাড়াব, যেগুলো খারাপ তথ্য আমরা দেখতে পাচ্ছি, সেগুলোর ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেটা সরানো সম্ভব, তা সরানো, যেটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই, তার পরিবর্তে একটা সঠিক তথ্য যথাযথ সময়ে তুলে ধরা; যাতে মানুষ অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই কাজগুলো করব।’
ভোটার তালিকা ১৮ নভেম্বর
পোস্টাল ভোটিংয়ের নিবন্ধনের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার ইসি ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নামের একটি অ্যাপ উদ্বোধন করতে যাচ্ছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, একটা উল্লেখযোগ্য সাড়া পাব।...যে প্রবাসী বাংলাদেশি ভাই–বোনেরা ইতিমধ্যে ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত আছেন, তাঁরা চাইলে ভোট দিতে পারবেন। পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে ভোট দেওয়া যাবে।’
তবে গত ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রবাসীদের মধ্যে যাঁরা ভোটার হতে আবেদন করেছেন, আপাতত তাঁরা ভোট দিতে পারবেন বলে জানান এই নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ৩১ অক্টোবরের পর যাঁরা হচ্ছেন, তাঁদের নেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, ১৮ নভেম্বর একটা ভোটার তালিকা প্রণয়ন হয়ে যাবে।
অবশ্য নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, ‘দেশের ভেতরে যদি কেউ এখনো বাদ পড়ে থাকেন ভোটার তালিকায়, তাঁদের জন্য সুযোগ আছে। কারণ, আমাদের তফসিল ঘোষণার পরও আমরা ভোটার তালিকার একটা ফাইনাল ইভেন্ট (সংস্করণ) বের করব। তখন পর্যন্ত আমরা কাউকে পেলে নিয়ে নেব।’