সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মো. ইসাহাক আলী নামে এক কৃষকের ছয় বিঘা জমির বোরো ধান আগাছানাশক প্রয়োগে নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগী কৃষক জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের ঘড়গ্রামের দক্ষিণ ফসলি মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রামের বাসিন্দা কলেজের অধ্যক্ষ মো.
শুক্রবার দুপুরের মধ্যে জমির সব ধান পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষক। স্থানীয় লোকজনের কাছে খবর পেয়ে কৃষক ইসাহাক পুড়ে যাওয়া ধান দেখে মাঠেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেন।
ভুক্তভোগী কৃষক ইসাহাক আলী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছয় বিঘা জমির উঠতি বোরো ধানই তাঁর সম্বল ছিল। এ ধান দিয়ে পরিবারের বার্ষিক খোরাকি ও বাড়তি অংশ বিক্রির টাকায় তাঁর সংসার চলে। তিনি সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে তাড়াশ থানার ওসি মো. জিয়াউর রহমান বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ দেয়নি কেউ। দিলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হিজবুত তাহ্রীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিমান্ডে
নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহ্রীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ রিমান্ড আদেশ দিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম মিজানুর রহমান। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার আদালতে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপপরিদর্শক মো. শাহিনুর রহমান অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
৭ মে রাতে রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার নারিন্দা এলাকার একটি মেস থেকে সাদাপোশাকে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মিজানুর রহমানকে আটক করে বলে জানা গেছে। ঘটনার পরপরই পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশপাশের থানায় খোঁজ নিয়েও তাঁর সন্ধান পাননি। পরে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ কয়েকটি সূত্র থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়।
মামলার কাগজপত্র থেকে জানা গেছে, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২১ মার্চ ধানমন্ডি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহ্রীরের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত এবং সংগঠনটির পক্ষে প্রচারণা, সদস্য সংগ্রহ ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, পুলিশ মিজানুরের ব্যবহৃত মুঠোফোন ও ল্যাপটপ জব্দ করেছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হিজবুত তাহ্রীরের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এতে আরও বলা হয়েছে, আসামি মুক্তি পেলে চিরতরে পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে তাঁকে হেফাজতে রাখা প্রয়োজন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তাজাম্মুল হক বলেন, ‘প্রথমে তাঁর অবস্থান নিশ্চিত না হওয়ায় উদ্বিগ্ন ছিলাম। পরে জানতে পারি, তাঁকে রাষ্ট্রবিরোধী মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’
অভিযুক্ত মিজানুর রহমানের বড় ভাই সাজু রহমান বলেন, ‘মিজানকে ৭ মে রাত ১১টার দিকে নারিন্দার মেস থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন দিন তাঁর কোনো খোঁজ পাইনি। পরে জানতে পারি, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমরা তাঁর ন্যায়বিচার চাই।’
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাশৈনু বলেন, ‘আমি এখানে যোগদানের আগে মামলাটি হয়েছে। মামলাটি ধানমন্ডি থানায় নথিভুক্ত হলেও এর তদন্ত করছে কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।’