আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী চাটগাঁ মঞ্চ’ তৈরি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চট্টগ্রাম। শুক্রবার রাতে নগরের ২ নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যানে এই মঞ্চ তৈরি করা হয়। রাত ১০টার দিকে এনসিপির নেতা-কর্মীরা মঞ্চে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন।

এনসিপি চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক জোবাইরুল আরিফ রাত সাড়ে ১০টায় প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগের বিচারের সুস্পষ্ট অগ্রগতি দেখানো ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে এই সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। দেশের জনগণ আওয়ামী লীগের দুঃশাসন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের যাঁরা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি ঘোষণা করতে হবে। তাঁদের রাজনীতিও নিষিদ্ধ করতে হবে। সরকার এখনো জুলাই ঘোষণাপত্র তৈরি করতে পারেনি। এই ঘোষণাপত্র তৈরি না করাটাই হবে বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বাজে কাজ।

কর্মসূচি উপলক্ষে নেতা-কর্মীরা সন্ধ্যা থেকেই বিপ্লব উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন। মঞ্চ প্রস্তুত হওয়ার পর বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। রাত সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগান ও বক্তব্য দিচ্ছিলেন।

এ ছাড়া জুমার নামাজের পর নগরের আন্দরকিল্লায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে মিছিল করে।

ফেনীতে ব্লকেড

এদিকে একই দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী সদর উপজেলার মহিপাল চৌরাস্তা এলাকার উড়ালসড়কের নিচে ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শুক্রবার রাত নয়টার দিকে এই কর্মসূচি শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এই কর্মসূচি শুরু হয়। শেষ হয় রাত ১০টার দিকে। কয়েক শ শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক কর্মী আওয়ামী লীগের বিচার চেয়ে স্লোগান দেন। তবে কর্মসূচি চলাকালে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়নি।

এতে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মুহাইমিন তাজিম, আবদুল কাইয়ুম, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক তুহিন আহমেদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির জেলা সংগঠক শাহ ওয়ালী উল্লাহ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেনী জেলার সংগঠক আবদুল্লাহ আল যোবায়ের প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত আওয় ম এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের আগেই শাপলা-জুলাইসহ সব গণহত্যার বিচার করতে হবে: হেফাজত

নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যাসহ প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের বিচার দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। 

আজ বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি দেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইসলামবিদ্বেষী, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী চেতনা সংরক্ষণ, রাষ্ট্র-সংস্কারের গণ-আকাঙ্ক্ষা সুসংহতকরণ এবং জাতীয় ঐকমত্য গঠনকল্পে অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে হবে। সেইসাথে নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বরে আলেম ওলামা হত্যাকাণ্ড ও জুলাই গণহত্যাসহ ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। এর অন্যথা হলে ড. ইউনূস সরকারকে ছাত্র-জনতা ক্ষমা করবে না।
আজিজুল হক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বুঝতে হবে, এখনো বিছানায় কাতরাচ্ছে পঙ্গুত্ব ও অন্ধত্ব বরণ করা হাজার হাজার আহত শাপলা ও জুলাই-যোদ্ধা। অগণিত শহীদের রক্তের ফসল জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হলে গণঅভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার কাছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে জবাব দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শাপলা চত্বরের রক্তাক্ত ইতিহাসের পথ বেয়ে জুলাই বিপ্লব আমাদের জাতীয় জীবনে হাজির হয়েছে। জুলাই বিপ্লব চলমান প্রক্রিয়া। জুলাইকে বিস্মৃত হতে দেওয়া যাবে না। জুলাই বিপ্লবের সাথে গাদ্দারি করে জনসমর্থন ধরে রাখা যাবে না। এদেশে যারাই ভারতীয় আধিপত্যবাদের গোলামি করবে, দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিবে, মাফিয়াতন্ত্র জারি রাখবে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে জুলাইর গণপ্রতিরোধের চেতনা বারবার ফিরে আসবে। দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে ছাত্র-জনতা আবারও রাজপথে নামতে বিলম্ব করবে না। মনে রাখতে হবে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ফেরাউন পারেনি; হাসিনাও পারেনি। ভবিষ্যত ক্ষমতাসীনদের এই ঐতিহাসিক শিক্ষা ধারণ করতে হবে।

মাওলানা ইসলামাবাদী বলেন, জুলাই বিপ্লবের অন্যতম দাবি কাঠামোগত সংস্কার। ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার জন্ম দেওয়া বিদ্যমান রাষ্ট্র-কাঠামোর বিলোপ ও পুনর্নির্মাণের মধ্যেই বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যত পরিদৃষ্ট। জুলাই গণঅভ্যুত্থান সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এনে দিয়েছে। গণহত্যার বিচার ও সংস্কার প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন. প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্র-সংস্কারের মৌলিক কাজগুলো আরও বেগবান করতে হবে। ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র স্বার্থের চেয়ে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষায় আত্মনিবেদিত হওয়ার মধ্যেই মাহাত্ম্য নিহিত। আর সংস্কারকাজে অবশ্যই ইসলামবিরোধী অপশক্তির ফাঁদ ও কু-মন্ত্রণা এড়িয়ে যেতে হবে। সংবিধানের মূলনীতি থেকে বহুত্ববাদ বাদ দিতে হবে। কুরআন-সুন্নাহবিরোধী নারী কমিশন বাতিল করতে হবে‌। বৃহত্তর জনগোষ্ঠির ধর্ম, সভ্যতা সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের আলোকে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবি
  • নির্বাচনের আগেই শাপলা-জুলাইসহ সব গণহত্যার বিচার চায় হেফাজত
  • নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যার বিচার চায় হেফাজতে ইসলাম
  • নির্বাচনের আগেই শাপলা-জুলাইসহ সব গণহত্যার বিচার করতে হবে: হেফাজত
  • নতুন করে আরেক ফ্যাসিস্ট জন্ম নিয়েছে: ফয়জুল করীম