ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বাড়ছে ক্রমশ। হামলা পাল্টা হামলা ও সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে নিয়মিত। এই অবস্থায় পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের দেখভাল করা এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির (এনসিএ) সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

শনিবার (১০ মে) পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দেশের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষের (এনসিএ) বৈঠক ডেকেছেন। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।

এনসিএ মূলত পাকিস্তানের স্থল, আকাশ ও নৌ বাহিনীর জন্য যৌথ কৌশল প্রণয়নে ভূমিকা রাখে। তবে এর আরো গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো পারমাণবিক অস্ত্রের দেখভাল করা এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া।

আরো পড়ুন:

ভারতের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের দাবি পাকিস্তানের

পাকিস্তানের ড্রোন ও অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র ধ্বংসের দাবি ভারতের

শাহবাজ এমন এক সময়ে এনসিএ’র সভা ডাকলেন, যখন পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জবাবে ভারতের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ ‍শুরু করেছে। 

পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শনিবার ভোরে শুরু হওয়া এই অভিযানে ভারতের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। 

এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবর বলছে, ভারতের বিয়াসে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণ কেন্দ্র, উধমপুর বিমানঘাঁটি, পাঠানকোট বিমানঘাঁটি এবং আদমপুর বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানোর তথ্য নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ভারতীয় এসব সামরিক ঘাঁটি থেকে শুক্রবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানের অমৃতসর এবং আফগানিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আরো জানিয়েছেন, জি-টপে ভারতের ব্রিগেড সদর দপ্তর এবং উরিতে সরবরাহ ডিপো ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়াও, পাকিস্তান দেহরাঙ্গিয়ারিতে একটি ভারতীয় আর্টিলারি অবস্থান এবং নাগরোটায় একটি ব্রহ্মোস স্টোরেজ সাইট লক্ষ্যবস্তু করেছে, যার ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, পাকিস্তান অভিযানের সময় তাদের আল-ফাতাহ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে। এর আগে ভারতীয় হামলায় নিহত পাকিস্তানি শিশুদের সম্মানে ক্ষেপণাস্ত্রটির নামকরণ করা হয়েছে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “পাকিস্তান এই শিশুদের আত্মত্যাগ ভুলে যায়নি এবং কখনও ভুলবে না।”

সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকায় পাকিস্তান বিমান বাহিনী উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পাকিস্তানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ শনিবার দুপুর পর্যন্ত তাদের সব ধরনের বেসামরিক বিমান ফ্লাইট বাতিল করেছে।

এদিকে, ভারতের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ দেশটির উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের ৩২টি বিমানবন্দর ১৫ মে সকাল পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।

ভারত গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে, যার মধ্যে রাজধানী ইসলামাবাদের কাছে একটি বিমানঘাঁটিও রয়েছে। 

গত ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার দায় পাকিস্তানের ঘাড়ে চাপিয়ে গত ৭ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। এরপর থেকে প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে একের পর এক হামলা-পাল্টা হামলার খবর আসছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ হব জ এনস এ

এছাড়াও পড়ুন:

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-সংলগ্ন মিরপুর সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে এই চিত্র দেখা যায়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

দুপুরের দিকে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছেন র‍্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। তাঁরা শক্ত অবস্থানে আছেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরের দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকাভেটর দেখা যায়।

পরে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে।

কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের অন্তত এক সদস্য আহত হন।

আরও পড়ুনএক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ৪ ঘণ্টা আগে

পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আবার ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।

বিক্ষোভকারীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা এবং তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুনরায়কে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন৫ ঘণ্টা আগে

বিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সরে না যাওয়ায়, বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে আসার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোমতে কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেব না।’

গত ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৩২ নম্বরের বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ