ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ সেনা অভিযানের পাল্টা জবাব দিতে ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ শুরু করেছে পাকিস্তান। এ অভিযানের আওতায় ইতোমধ্যে শুক্রবার রাতে ভারতের ১১টি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনী। সূত্র : জিও নিউজ

এই স্থাপনাগুলোর মধ্যে পাঠানকোট বিমান ঘাঁটি, উধামপুর বিমান ঘাঁটি, গুজরাট বিমান ঘাঁটি, রাজস্থান বিমান ঘাঁটি এবং ভারতের সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্রাহ্মো‌সের একটি মজুতস্থান উল্লেখযোগ্য।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জিও নিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পাল্টা এ হামলায় ফাতাহ-১ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। দেশটির নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি এই ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জ ১২০ কিলোমিটার।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতের হামলায় ভারতের জম্মু-কাশ্মিরের বারামুলা জেলার উরি শহরে ভারতীয় সেনবাহিনীর একটি ব্রিগেডের হেডকোয়ার্টার এবং সরবরাহ বা রসদ ডিপো, নাগরোটা শহরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি আর্টিলারি ব্যাটারি ধ্বংস হয়েছে।

এছাড়া ভারতের পাঞ্জাবের আদমপুর বিমান ঘাঁটিতে মোতায়েন করা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ সিস্টেমও ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়ে ধ্বংস করেছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। এই হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান জেএফ-১৭। শুক্রবারের হামলায় এটিকে সবচেয়ে বড় সাফল্য বলে উল্লেখ করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওই কর্মকর্তা।

গত ২২ এপ্রিল ভারত শাসিত জম্মু কাশ্মীরের পেহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। শুরু থেকে এই হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপায় ভারত। এর মধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িত দুইজন সন্ত্রাসীর পাকিস্তানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতাও পাওয়া যায়। যদিও ভারতের এ অভিযোগ অস্বীকারে করে আসছে পাকিস্তান। ওই ঘটনার জেরে পাল্টাপাল্টি বিভিন্ন পদক্ষেপও নিয়েছে দেশ দুটি। এমন উত্তেজনার মধ্যে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তান ও দেশটির নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে হামলা চালায় ভারত। শুক্রবার রাত থেকে ভারতের হামলার জবাবে পাকিস্তান 'অপারেশন বানিয়ান মারসুস’ শুরু করেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ক রব র র

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনা সিটির মেয়র ঘোষণার দাবি জামানত হারানো শফিকুরের

কখনো বিএনপি, কখনো জাতীয় পার্টি, আবার কখনো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরেছেন এস এম শফিকুর রহমান (মুশফিক)। সর্বশেষ ২০২৩ সালে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন। নির্বাচনে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

আলোচিত নেতা শফিকুর রহমান ওই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে নিজেকে খুলনা সিটির বৈধ মেয়র হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন। আজ শনিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে শফিকুর রহমান বলেন, ‘২০২৩ সালে কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে আমি প্রার্থী হই; কিন্তু আমার মনোনয়ন বাতিল করা হলে উচ্চ আদালতের রায়ে প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে নির্বাচন করি। নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ–প্রক্রিয়ায় ব্যাপক কারচুপি হয়। নির্বাচনের ইভিএম মেশিনের সার্ভার স্টেশন ছিল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। সেখান থেকেই সব ডিভাইস অচল-সচল করা হতো। এভাবেই ডিসির কার্যালয়ে থাকা ডিভাইস কারচুপি করে আমাকে পরাজিত করা হয়।’

এস এম শফিকুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমার কর্মদক্ষতা ও ভিশনকে তরুণ সমাজ লুফে নেয় এবং আমি বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাই। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ফ্যাসিস্ট সরকার ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে আমাকে হারিয়ে দেয়।’ তিনি বলেন, ২০২৩ সালের নির্বাচনে তিনি জয়ী হয়েছেন। জালিয়াতির নির্বাচনের বিরুদ্ধে গত ২০ এপ্রিল তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সচিব ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আবেদন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন; কিন্তু কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন। ৬ মে উচ্চ আদালত এক আদেশে ২০২৩ সালের ১২ জুনের খুলনা সিটি করপোরেশনের অনুষ্ঠিত ‘নির্বাচনের ফলাফল বাতিল’ এবং আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সচিব ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে সংবাদ সম্মেলনে এস এম শফিকুর রহমান উচ্চ আদালতে রিট ও আদেশের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘জনতার মেয়র হিসেবে ভবিষ্যতে নাগরিক সেবায় অংশ নেব। নগর ভবনেই আপনাদের (সাংবাদিক) সঙ্গে দেখা হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, ২০০৮ সালের উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে বাগেরহাট-১ আসনে পরাজিত হন। এ ছাড়া ২০১৮ সালে জাতীয় পাটির মনোনয়নে এবং ২০২৩ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কেসিসির মেয়র পদে নির্বাচন করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৩ সালের কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে ২ লাখ ৫৬ হাজার ২৭৭টি ভোট পড়ে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী আবদুল আউয়াল। তিনি পেয়েছিলেন ৬০ হাজার ৬৪ ভোট। এরপর জাপার শফিকুল ইসলাম ১৮ হাজার ৭৮ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান পান ১৭ হাজার ২১৮ ভোট। ওই নির্বাচনে চতুর্থ স্থানে থাকা মুশফিক জামানত হারান। এর আগে ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনেও জাপার প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে জামানত হারান তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ