পাকিস্তানের মাওরা থাকলে থাকবেন না হর্ষবর্ধন
Published: 11th, May 2025 GMT
ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২৬ জন। এ ভয়াবহ ঘটনায় উপমহাদেশের দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এ উত্তেজনা সীমান্ত ছাড়িয়ে ঢুকে পড়েছে বিনোদনজগতেও। দুই দেশের তারকারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কড়া মন্তব্য করছেন। এরই মধ্যে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন বলিউড অভিনেতা হর্ষবর্ধন রানে। জানিয়েছেন, পাকিস্তানের অভিনেত্রীর সঙ্গে তিনি কাজ করবেন না।
২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া রোমান্টিক বলিউড সিনেমা ‘সনম তেরি কসম’-এ হর্ষবর্ধনের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন পাকিস্তানি অভিনেত্রী মাওরা হোসেন। সিনেমাটি সম্প্রতি আবার মুক্তি পেয়ে বক্স অফিসে ভালো সাড়া ফেলে। সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় নির্মাতারা ভাবছিলেন সিক্যুয়াল তৈরি করার কথা। কিন্তু বর্তমান ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় সিনেমাটির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। হর্ষবর্ধন রানে জানিয়েছেন, যদি ‘সনম তেরি কসম ২’-এ আগের অভিনেত্রী মাওরা হোসেনকে আবার নেওয়া হয়, তবে তিনি সেই ছবিতে কাজ করবেন না।
হর্ষবর্ধন রানে তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেছেন, ‘সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর পর ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমার দেশের বিরুদ্ধে যেসব মন্তব্য শুনেছি বা পড়েছি, সেগুলোর পর আমি সম্মানের সঙ্গে জানাচ্ছি, যদি আগের অভিনেত্রীদের ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা থাকে, আমি এই সিনেমার অংশ হতে পারব না।’
একই স্টোরিতে তিনি আরও লেখেন, ‘আমি পৃথিবীর যেকোনো দেশের, এমনকি মঙ্গল গ্রহের মানুষ ও শিল্পীদের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু আমার দেশের প্রতি অসম্মানজনক কিছু বললে, সেটা আমি কখনো মেনে নেব না। আমার ফলোয়ার কমলেও চলবে, তবু দেশের গর্বে আঘাত সহ্য করব না।’
প্রসঙ্গত ‘সনম তেরি কসম’-এ সরস্বতী ওরফে সারু চরিত্রে মাওরা হোসেনের অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল। যদিও ইন্ডাস্ট্রিতে গুঞ্জন উঠেছে-সিক্যুয়ালে হয়তো শ্রদ্ধা কাপুরকে নেওয়ার কথা ভাবছেন নির্মাতারা, তবে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।