অমৃতসরে বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরলেও, এখনও রেড অ্যালার্ট জারি
Published: 11th, May 2025 GMT
অস্ত্রবিরতির পর পাঞ্জাবের কেন্দ্রীয় শহর অমৃতসরে বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরে আসলেও শহরটিতে রেড অ্যালার্ট জারি রেখেছে জেলা প্রশাসক। কেননা নয়াদিল্লির অভিযোগ, ভারতের ভূখণ্ডে পাকিস্তান হামলা অব্যাহত রেখেছে।
রোববার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, গতকাল রাতে ভারতের পাঞ্জাবের অমৃতসরে জোরে সাইরেন শোনা যায়। এরপরই রোববার ভোরে জেলা প্রশাসক সাক্ষী সাহনী রেড অ্যালার্ট জারি করেন।
বিবিসি জানায়, অমৃতসরে আপাতত বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরে এসেছে, তবে জেলাটি এখনও রেড অ্যালার্টের আওতায় রয়েছে।
জনগণকে তাদের বাড়ি থেকে বের না হতে, নিজেদের বাড়ির ভেতরে থাকা এবং জানালা থেকে দূরে থাকার জন্য অনুরোধ করেছেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক জানান, পরিস্থিতি যখন সম্পূর্ণ নিরাপদ হবে, প্রশাসন গ্রিন সিগন্যাল বা সবুজ সংকেত দেবে। দয়া করে আতঙ্কিত হবেন না, শান্তি বজায় রাখুন এবং প্রশাসনের সমস্ত নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন।
গত বেশ কয়েকদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ চলার পর ১০ মে সন্ধ্যায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অস্ত্রবিরতি চুক্তি হয়। তবে অস্ত্রবিরতি চুক্তি হলেও দুই দেশ পাল্টাপাল্টি চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ করে কয়েক ঘণ্টা পরেই।
এর আগে ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কমছে না। দুদেশের মধ্যে এ উত্তেজনার শুরু ২২ এপ্রিল। সেদিন পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত। তবে তা নাকচ করেছে পাকিস্তান। এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তান ও দেশটির নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ৯টি স্থানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে অভিযান চালায় ভারত। ওই রাতেই দেশটির পাঁচটি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি করে পাকিস্তান।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ