রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কোনো বিলম্ব ছাড়াই, ১৫ মে'র মধ্যেই একটি আলোচনা শুরু হওয়া উচিত। আমরা সিরিয়াস আলোচনা চাই। সংঘাতের মূল কারণ উপড়ে ফেলতে এবং একটি দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই শান্তির দিকে এগিয়ে যাওয়া শুরু করতে চাই

শনিবার গভীর রাতে ক্রেমলিন থেকে দেওয়া বিরল এক ভাষণে এ কথা বলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁসহ ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেন সফর করে রাশিয়াকে ৩০-দিনের শর্তহীন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানানোর পর পুতিন এমন প্রস্তাব দেন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বিষয়টি নিয়ে মস্কো চিন্তা করবে বলে জানিয়েছিলেন। তবে তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, কোনো ধরনের চাপ দেওয়া হবে নিতান্তই অর্থহীন।

ওদিকে পুতিন তার বক্তব্যে বলেছেন, তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে আলোচনা হওয়া উচিত বলে যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সেটিকে এখনও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন নতুন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে পারে।

এ বিষয়ে রোববার তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ানের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন।

পুতিনের এ প্রস্তাবের বিষয়ে কিয়েভ এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।

এর আগে শনিবার ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনের রাজধানীতে যান এবং সোমবার থেকেই এক মাসের যুদ্ধবিরতির জন্য মস্কোর প্রতি আহবান জানান।

ইউরোপীয় নেতাদের 'সদিচ্ছার জোটের' এক সভার পর ওই আহবান জানানো হয়। ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও পোল্যান্ডের নেতাদের পাশে এ সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও উপস্থিত ছিলেন।

তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে আলোচনার পর তাদের ঘোষণা দেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প শর্তহীন যুদ্ধবিরতির বিষয়ে উদ্যোগ নেন। ইউরোপীয় নেতারা তাদের প্রস্তাব না মানলে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞার কথাও জানিয়েছেন রাশিয়াকে।

জবাবে ক্রেমলিন জানায় তারা প্রস্তাবটি বিবেচনা করছে, কিন্তু কোনো চাপের প্রতিক্রিয়ায় নয়।

সভার পর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই এখানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একত্রিত হয়েছিলাম পুতিনকে আহ্বান জানাতে। তিনি যদি শান্তির বিষয়ে সিরিয়াস হন, তাহলে সেটি দেখানোর সুযোগ এসেছে।

ইউরোপীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে জেলেনস্কি বলেন, আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আজ আমরা কীভাবে সত্যিকার ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা যায়, সেদিকে দৃষ্টি দেব।

এর কয়েক ঘণ্টা পরই পুতিন তার বক্তব্য দেন। ভিডিওতে দেখা যায়, ক্রেমলিনে একটি হলে সাংবাদিকরা জড়ো হয়েছেন।

তিনি বলেন, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী নতুন অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া, পরিখা তৈরি কিংবা নতুন কমান্ড পোস্ট স্থাপনের পর আরও সশস্ত্র সংঘাতের দিকে যাওয়ার পরিবর্তে একটি দীর্ঘমেয়াদী, টেকসই শান্তির জন্য এটা আমাদের প্রথম পদক্ষেপ। 

পুতিন একই সঙ্গে ইউক্রেনকে মস্কোর দিক থেকে দেওয়া তিনটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের জবাব দিতে ব্যর্থতার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। এগুলো হলো – জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা ৩০ দিন স্থগিত রাখা, ইস্টার যুদ্ধবিরতি এবং গত মাসে পুতিনের যুদ্ধবিরতির নির্দেশ।

ইউক্রেন এর আগে বলেছে, এ সময়গুলোতেও রাশিয়ার হামলা অব্যাহত ছিলো। রাশিয়াও ইউক্রেনের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ করেছে।

শনিবার রাতে পুতিন বলেছেন, এ সব কিছু সত্ত্বেও আমরা আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দিচ্ছি কিয়েভ কর্তৃপক্ষকে, সরাসরি আলোচনা শুরু করুন এবং শর্তহীনভাবে।

এর আগে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে অল্প সময়ের জন্য সরাসরি আলোচনা হয়েছিল তিন বছর আগে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসন শুরুর পর। সূত্র-বিবিসি

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউর প য় ন ত র প রস ত ব প রস ত ব দ ইউক র ন র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ভয়াবহ আগুন কলকাতার বড়বাজারে, ঘটনাস্থলে দমকলের ২০ ইঞ্জিন

কলকাতার পুলিশ হেডকোয়ার্টার লালবাজারের কাছে বড়বাজারের এজরা স্ট্রিটের একটি গুদামে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। শনিবার ভোর রাতে আগুন লাগলেও সেই আগুন সকাল পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। বরং দ্রুত আগুন ছড়াচ্ছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকলের অন্তত ২০টি ইঞ্জিন। ল্যাডারের সাহায্য নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ইঞ্জিনের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করা হতে পারে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার ভোর ৫টা নাগাদ গুদামে আগুন লেগে যায়। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং প্রচুর বৈদ্যুতিক তার ছিল গুদামে। মজুত করা ছিল অনেক দাহ্য পদার্থ। ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ভালো করে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে আকাশ। চারদিক ঢেকে যায় কালো ধোঁয়ায়। কীভাবে এই আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বৈদ্যুতিক সামগ্রী থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। কেউ কেউ শর্ট সার্কিটের সম্ভাবনার কথা বলছেন। 

আরো পড়ুন:

ভারত যাচ্ছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা

চীন সীমান্তের পাশে নতুন বিমানঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত

যদিও ফায়ার সার্ভিসের তরফে সূত্রপাত সম্পর্কে এখনও কিছু নিশ্চিত কিছু জানাতে পারেনি, তারা আগুন নেভাতেই এখনো পর্যন্ত ব্যস্ত। পুলিশ ও দমকল সূত্রে খবর, ভোরে ওই গুদাম থেকে কালো ধোঁয়া বার হতে দেখে স্থানীয়রাই দমকলকে জানান। ঘনবসতি এলাকা হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। গুদাম থেকে পাশের আবাসনেও ছড়িয়ে পড়েছে আগুন। একাধিক বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলে খবর। ভিতরে কেউ আটকে পড়েছেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

অন্যদিকে দমকলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাদের অভিযোগ, দমকলে খবর দেওয়া হলেও তারা দেরিতে এসেছে। ফলে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভয়াবহ আগুন কলকাতার বড়বাজারে, ঘটনাস্থলে দমকলের ২০ ইঞ্জিন