শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৩০ হাজার দিরহাম, ১০টি চোরাই মোবাইল ফোন ও সুতার কার্টুনসহ মো. সাঈম নওয়াজ নামের এক যাত্রীকে আটক করেছে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)। রোববার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বহির্গমন গেট এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

এনএসআই এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটক সাঈম নওয়াজের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। তিনি বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৬১৬ ফ্লাইটে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা হয়ে দুবাই যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তল্লাশি করে ৩০ হাজার ইউএই দিরহাম উদ্ধার করা হয়, যার বাজারমূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায়া প্রায় ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা (প্রতি দিরহাম ৩৩ টাকা ধরে)। 

এ ছাড়া আইফোন ও স্যামসাংয়ের ১০টি স্মার্টফোন, যার বাজারমূল্য প্রায় ১২ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং আনুমানিক দুই লাখ টাকার দুটি সুতার কার্টুন উদ্ধার করা হয়েছে। 

বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ৭ হাজার মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বহন করতে পারেন। এই সীমা অতিক্রম করায় তার সঙ্গে থাকা সব বৈদেশিক মুদ্রা আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন কাস্টমসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। এই কর্মকর্তা জানান, আটক সাঈম নওয়াজ মধ্যপ্রাচ্যে নিয়মিত যাতায়াত করেন। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ