মাগুরার জিআই সনদ পাওয়া হাজরাপুরী লিচু ঘিরে ৩০ গ্রামে এখন ব্যস্ত সময়
Published: 12th, May 2025 GMT
‘লিচুগাছে ফুল আসার পর থেকেই বাগানের পরিচর্যা শুরু হয়। এ সময়ে বাড়ির সবাই মিলে লিচু নিয়ে ব্যস্ত থাকি। এখন বাগান থেকে লিচু সংগ্রহ করে বিক্রি করা শুরু হয়েছে। লিচুর বাগান থেকে যে টাকা আসবে, তাতে ছয় মাসের সংসার চলে। অন্য কোনো ফসল চাষ করে একবারে এত নগদ অর্থ পাওয়া যায় না।’
এসব কথা বলছিলেন মাগুরা সদর উপজেলার রাওতড়া গ্রামের বাবুল কুমার বিশ্বাস। সদর উপজেলার হাজরাপুর ও হাজীপুর ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষের ব্যস্ততা এখন লিচুবাগান ঘিরে। গতকাল রোববার গিয়ে দেখা যায়, কেউ গাছ থেকে লিচু পাড়ছেন, কেউ তলায় বসে বাঁধছেন। কেউ আবার তা ঝুড়িতে ভরছেন।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, মাগুরায় দুই ধরনের লিচুর আবাদ হয়, যার একটি স্থানীয় জাত হাজরাপুরী লিচু, অন্যটি বিদেশি জাত ‘বোম্বাই’। সম্প্রতি শিল্প মন্ত্রণালয় দেশের যে নতুন ২৪টি পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ দিয়েছে, তার মধ্যে একটি মাগুরার হাজরাপুরী লিচু। গত ৩০ এপ্রিল শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর আয়োজিত বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবসের আলোচনা সভায় মাগুরার জেলা প্রশাসকের কাছে এ সনদ হস্তান্তর করা হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই স্বীকৃতি পাওয়ায় বাজারে মাগুরার স্থানীয় এ জাতের লিচুর চাহিদা বাড়বে।
হাজরাপুরী লিচুর ইতিহাস অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে সদর উপজেলার হাজরাপুরে ছিল একটি নীলকুঠি। সেই নীলকুঠিতে প্রথমবার কয়েকটি লিচু চারা এনে রোপণ করেছিলেন নীল চাষ তদারকিতে থাকা ব্যক্তিরা। পরে ওই গাছ থেকে কলম করে লিচুর জাত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। হাজরাপুর ও এর আশেপাশের এলাকায় ব্যাপকভাবে লিচু চাষ শুরু হয় ৩০-৪০ বছর আগে।
বাগান থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে লিচু। গত শনিবার মাগুরা সদর উপজেলার নড়িহাটি এলাকায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদর উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান
‘প্রত্যেকটা জেলায় শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য যেমন হাসপাতাল আছে তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সিনেমা হল থাকা দরকার। সুস্থ বিনোদন থাকলে মানুষ নেশা, হানাহানি ও মব জাস্টিস থেকে দূরে থাকবে। আমাদের যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান দরকার তেমনি বিনোদনের জন্য সিনেমা হল দরকার।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানী বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘উৎসব’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী শেষে কথাগুলো বলছিলেন নন্দিত অভিনেতা জাহিদ হাসান।
‘উৎসব’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান। চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। শুটিংয়ের বহুদিন পেরিয়ে গেলেও জাহাঙ্গীর চরিত্রের মধ্যে থেকে এখনো বের হতে পারেননি বলেন জানালেন এই অভিনেতা।
জাহিদ হাসান বলেন, ‘এখনো আমি এই চরিত্রটার মধ্যে ডুবে আছি। সিনেমার আমার চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। আসলে আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের মাঝে জাহাঙ্গীর লুকিয়ে আছে। কারণ, আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের মাঝে হিরোইজম আছে, ভিলেন আছে। আছে উপলব্ধি করার ক্ষমতা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের সেই রিয়েলাইজেশনের সময়টা আছে। কখন মৃত্যু হয় আমরা জানি না। এই রিয়েলাইজ যদি আমাদের মধ্যে থাকে তাহলে আজ আমরা যারা জাহাঙ্গীরের মত আছি, কাল আমরা ভালো হয়ে যাবো।’
ঈদের সিনেমা মানেই এখন যেন অ্যাকশন অথবা থ্রিলার। গত কয়েক বছরে ঈদে বাজিমাত করা সিনেমাগুলোর দিকে তাকালে এমনটাই মনে হতে পারে। সেসব থেকে বেরিয়ে হাস্যরস পরিবার এবং সম্পর্কের গল্পে এবার ঈদে বাজিমাত করেছে ‘উৎসব’। এই সফলতার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করলেন প্রত্যেক শিল্পীর সততাকে।
জাহিদ হাসানের কথায়, ‘প্রডাক্টশন বয় থেকে শুরু করে এই সিনেমার সঙ্গে আমরা যারা যুক্ত ছিলাম তারা প্রত্যেকেই অনেক সৎ ছিলাম। অভিনয় নিয়ে কোনো অসৎ অবস্থার মধ্যে আমরা যাইনি। এটাই মনে হয় আমাদের সফলতার বড় বিষয়। এই সিনেমার প্রত্যেকটি দৃশ্যের সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে।’
করোনা মহামারির পর অভিনয়ে খুব একটা দেখা যায়নি জাহিদ হাসানকে। নির্মাতাদের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে খুব একটা কথা হয়নি তার। কারোনার পর ‘উৎসব’-ই তার প্রথম সিনেমা।
তার ভাষ্য, ‘করোনার পর খুব একটা অভিনয় করা হয়নি। আমাকে অভিনয়ে নেওয়া বা না নেওয়াটা নির্মাতাদের দায়িত্ব। বলতে গেলে গত কয়েকবছর সেভাবে সুযোগও আসেনি। ‘উৎসব’ সিনেমার মধ্যে সেই সুযোগটা এলো। অভিনয় করলাম। দর্শক প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝেছি অনন্ত ফেল করিনি।’
সিনেমার হলের সংখ্যা কম হওয়ায় দেশের সিনেমা সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছচ্ছে না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন জাহিদ হাসান। সেইসঙ্গে জেলা প্রশাসকদের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।
জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। আমার বোন ফোন করে বললেন এখানে তো সিনেমা হলে নেই। তাই আমরা সিনেমা দেখতে পারছি না। এই কথা শুনে কষ্ট পেয়েছি। এটা সত্য সিরাজগঞ্জের মত দেশের অনেক বড় শহরে সিনেমা হল নেই। জেলা প্রশাসকসহ দায়িত্বশীল পর্যায়ে যারা আছে তাদের সবাইকে অনুরোধ করবো তারা যেন প্রত্যেকটি জেলায় সিনেমা হলের ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়ে তার বাস্তবায়ন করেন।’