সিলেটের কানাইঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক আফসার উদ্দিন আহমদকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দকারী বিএনপি নেতা মামুন রশিদকে শোকজ করা হয়েছে। কানাইঘাট উপজেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মামুন রশিদকে রোববার রাতে শোকজ করে সিলেট জেলা বিএনপি।

জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত শোকজ নোটিশে সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়।

শোকজ নোটিশে বলা হয়, ‘কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে আপনার দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকেও সম্প্রতি আপনি এমন কিছু কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন, যা সামাজিক অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি দলের দৃষ্টিগোচর হয়েছে এবং তা দলীয় আদর্শ, শৃঙ্খলা ও নীতিমালার পরিপন্থী। আপনার এ ধরনের অবস্থানকে সংগঠনের বিরুদ্ধে কার্যত বিরুদ্ধাচরণ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। কেন আপনার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হলো।’ ব্যাখ্যার ভিত্তিতে গঠনতন্ত্র অনুসারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলেন নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

গত শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের পরদিন রোববার দুপুর দুইটার দিকে স্থানীয় মসজিদে নামাজ পড়ে বের হওয়ার পর আওয়ামী লীগ নেতা আফসার উদ্দিনকে মারধর করা হয়। পরে তাকে বিএনপি সভাপতি মামুনের বাড়িতে নিয়ে রাখা হয়। আফসার উদ্দিন ওই সময় সদর ইউনিয়নের চটিগ্রামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতাকে রাস্তায় মারধরের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ঘটনার পেছনে বিএনপি নেতা মামুনুর রশিদ জড়িত বলে জানা যায়। যদিও শোকজ নোটিশ ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন ত ম রধর ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ