তাপপ্রবাহ থেকে সুরক্ষিত থাকতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরুরি নির্দেশনা
Published: 12th, May 2025 GMT
দেশজুড়ে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ থেকে জনসাধারণকে সুরক্ষিত রাখতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কিছু নির্দেশনা জারি করেছে। এতে দুপুরের সময় (বিশেষ করে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত) অপ্রয়োজনে বাইরে না যাওয়ার জন্য জনসাধারণকে অনুরোধ করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে বাইরে যেতে হলে মাথায় ছাতা বা কাপড় দিয়ে রোদ থেকে নিজেকে রক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার (১১ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর পরিচালক আবু হোসেন মো.
নির্দেশনায় প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে বেশি করে বিশুদ্ধ পানি পান, হালকা ও ঢিলেঢালা জামাকাপড় পরা, ঘন ঘন গোসল করা এবং বাসি ও খোলা খাবার এড়িয়ে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ছাদে পানি ঢালা ও জানালা খোলা রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
যেকোনো পরামর্শের জন্য ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন’–এর ১৬২৬৩ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনাগুলো হলো—
১. দিনের বেলায় ঘরের বাইরে বের হলে ছাতা, টুপি বা ক্যাপ বা কাপড় দিয়ে মাথা যথাসম্ভব ঢেকে রাখতে হবে।
২. হালকা রঙের ঢিলেঢালা সুতির জামা পরতে হবে।
৩. প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান ও তরলজাতীয় খাবার খেতে হবে।
৪. সম্ভব হলে একাধিকবার গোসল করতে হবে।
৫. অতিরিক্ত তেল ও মসলাযুক্ত খাবার, বাসি ও খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৬. প্রস্রাবের রঙের দিকে লক্ষ রাখতে হবে। গাঢ় হলুদ রঙের প্রস্রাব হলে অবশ্যই পানি পানের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
৭. গরমে অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত কাছের চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৮. গরমে যেসব ব্যক্তি অধিক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন, যেমন শিশু ও গর্ভবতী মা, বয়স্ক ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, রিকশাচালক, কৃষক, নির্মাণশ্রমিক, দিনমজুর, স্থূলকায় ব্যক্তি ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি, বিশেষ করে হৃদ্রোগ ও উচ্চ রক্তচাপের রোগী, তাঁরা বিশেষভাবে সাবধান থাকবেন।
৯. প্রয়োজনে ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন’–এর ১৬২৬৩ নম্বরে পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করতে হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনা সেতু থেকে খুলে ফেলা হচ্ছে রেললাইন
যমুনা সেতুর ওপর থেকে রেললাইন খুলে ফেলা হচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগ বৃহস্পতিবার নাট-বোল্টসহ যন্ত্রাংশ খোলার কাজ শুরু করেছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) ও যমুনা রেলসেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানান, গত ১৮ মার্চ যমুনা রেলসেতু চালু হয়েছে। এরপর থেকে সড়ক সেতু দিয়ে ট্রেন চলছে না। যমুনা সেতুর ওপর রেললাইনের প্রয়োজন নেই। এ কারণে সেতু বিভাগ ও রেল বিভাগের মাধ্যমে যৌথ পরিকল্পনায় সড়ক প্রশস্ত করা হচ্ছে।
যমুনা সেতু রক্ষণাবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, রেললাইন খোলা শুরু হয়েছে। উপরিভাগে যানবাহনের জটলা ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আগামীতে সেতুর দুটি লেন প্রশস্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। রেললাইন খুলে নেওয়া হলে সড়ক সেতুতে আরও প্রায় সাড়ে তিন মিটার জায়গা বাড়বে। এটা মূল সড়ক সেতুর সঙ্গে সংযোগ করতে পারব। এতে উভয় লেনে ১ দশমিক ৭৫ মিটার বাড়বে। এ ধরনের সেতু আন্তর্জাতিকভাবে ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত হয়। বর্তমানে যমুনা সেতুর প্রতি লেন ৬ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থ। এ কারণে দুর্ঘটনা বা যানজট হয়। রেললাইন অপসারণের পর প্রতি লেন প্রস্থ হবে প্রায় ৮ মিটার। এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে অনেক সময় লাগে। প্রশস্তকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করতে হবে।
টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেন রাস্তা প্রশস্তকরণ প্রকল্প সাউথ এশিয়া সাব রিজিওনাল কো-অপারেশনের (সাসেক-২) পরিচালক ড. ওয়ালীউর রহমান। সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বলেন, এবারের ঈদে সেতু দিয়ে এক দিনে ৬৫ হাজারের বেশি যানবাহন পারাপার হয়েছে। যানবাহনের চাপ নিয়ন্ত্রণে সেতু কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঈদের আগে-পরে বিপাকে পড়ে। সেতুর ওপর কয়েকটি দুর্ঘটনায় এলেঙ্গা ও সিরাজগঞ্জসহ দুই পারে থেমে থেমে যানজট হয়। সেতুর উপরিভাগ প্রশস্ত করা হলে দুর্ঘটনা ও যানজট কমতে পারে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা সেতু উদ্বোধন হয়। এর নকশায় রেলপথ ছিল না। পরে সেতুর ওপর উত্তর পাশে লোহার খাঁচা, বার ও অ্যাঙ্গেল যুক্ত করে রেললাইন বসানো হয়। ২০০৪ সালের ১৫ আগস্ট যমুনা সেতুতে আনুষ্ঠানিকভাবে রেল চলাচল শুরু হয়। নির্দেশনা উপেক্ষা করে দ্রুতগতিতে ট্রেন চলার কারণে সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতি বেঁধে দেয় কর্তৃপক্ষ। সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা নদীর ওপর উজানে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই বছরের ২৯ নভেম্বর রেলসেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি তৈরি হয়।