ঢাকাই সিনেমার দাপুটে খল অভিনেতা মিশা সওদাগর। আট শতাধিক চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। গত কয়েক বছর ধরে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে এই অভিনেতার।

শুধু অভিনয় নয়, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতৃত্ব দাপটের সঙ্গে দিচ্ছেন। দুইবারের নির্বাচিত সভাপতি মিশা সওদাগর এর আগে সাধারণ সম্পাদকসহ সমিতির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন এই জনপ্রিয় অভিনেতা। জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস)-এর সদস্য ছিলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে মিশা সওদাগর বলেন, “আপনারা ভালো করেই জানেন, আমি ঠিক সেভাবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। কারণ রাজনীতি করতে অনেক যোগ্যতা লাগে, যেটা আমার নেই। তবে হ্যাঁ, একসময় আমি জাসাসে ছিলাম, কিন্তু পরে সময় দিতে পারব না বলে সরে দাঁড়িয়েছি। এরপর আর কখনো রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হইনি।”

আরো পড়ুন:

মিশার ভাষ্য, তিনবারই হেরেছেন নিপুণ!

নিপুণের দুর্গে ডিপজল-মিশার হানা

সম্প্রতি শিল্পীদের নামে দায়ের হওয়া মামলার প্রসঙ্গ টেনে মিশা সওদাগর বলেন, “সাম্প্রতিক মামলার বিষয়টি নিয়ে আমি সাধারণ মানুষ হিসেবে বলতে চাই, অন্যায় করলে অবশ্যই তাকে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হোক। তবে কোনো নিরপরাধ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়।”  

মিশা সওদাগর ১৯৮৬ সালে বিএফডিসির ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। মাত্র ২০ বছর বয়সে ছটকু আহমেদ পরিচালিত ‘চেতনা’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। অভিষেক সিনেমায় নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। পরবর্তীতে নিজেকে খলনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং দর্শকদের কাছে নতুনভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ