স্থগিত হয়ে যাওয়া পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) আবার শুরু হবে ১৭ মে। নতুন সূচি অনুযায়ী ২৫ মে হবে ফাইনাল।

বাংলাদেশের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি–টোয়েন্টি সিরিজের সূচিতেও তাই কিছু পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।

আজ পিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, বিসিবিকে পাঠানো পরিবর্তিত সূচিতে ফয়সালাবাদে সিরিজের প্রথম দুটি টি–টোয়েন্টি ২৫ ও ২৭ মের পরিবর্তে ২৭ ও ২৮ মে আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এই সূচি অনুযায়ী ফয়সালাবাদ থেকে ২৯ মে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দল লাহোরে ফিরবে। সিরিজের শেষ তিনটি ম্যাচ লাহোরে হবে ৩০ মে এবং ১ ও ২ জুন।

পিসিবি থেকে পরিবর্তিত সূচি প্রস্তাব করা হলেও জানা গেছে, বিসিবি এখনো এ ব্যাপারে কোনো মতামত জানায়নি। আগামীকাল বাংলাদেশ দল শারজায় যাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই টি–টোয়েন্টির সিরিজ খেলতে। পাকিস্তানে যাওয়ার কথা সেখান থেকেই।

কিন্তু ভারত–পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে বিসিবি গত ১০ মে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, তাদের কাছে সবার আগে দলের খেলোয়াড়–কোচ–কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা। পাকিস্তানের সার্বিক পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করেই সফরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত বিসিবির সে অবস্থানে কোনো পরিবর্তন এসেছে বলে জানা যায়নি।

বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার দিনই অবশ্য ভারত–পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। তবে দুই দেশের সম্পর্কে এখনো এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে।

পিসিবি অবশ্য পিএসএল শুরু করতে যাচ্ছে এবং সেই ধারাবাহিকতায় পরিবর্তিত সূচিতে আয়োজন করতে চায় বাংলাদেশের বিপক্ষে পাঁচ টি–টোয়েন্টির হোম সিরিজও।

স্বাভাবিকভাবেই এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিসিবি একা নেবে না। পাকিস্তানে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও নিরাপত্তা সংস্থার পরামর্শ মেনেই এগোবে তারা।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চিরকুট: ‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’

রাজশাহীর পবার একটি ঘরে শুক্রবার সকালে চার মরদেহের সঙ্গে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে, যার শব্দ-বাক্যে জীবন-সংসারে অভাব ও ঋণের চরম অভিঘাতের কথা লেখা রয়েছে। তার মধ্যে দুটি বাক্য এমন- “আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না।”

দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করা একটি পরিবারের কর্তা ব্যক্তির বর্ণনা অনুযায়ী, প্রথমে স্ত্রী, তারপর ছেলে-মেয়ের প্রাণ নিয়ে নিজেও শেষ হয়ে গেছেন। তবে এই চিরকুট যে তারই লেখা, সেটি তদন্তের আগে নির্ধারণ করার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য পুলিশের।

পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের বামনশিকড়ে শুক্রবার সকাল এল চারজনের জীবনাবসনের শোকের ছায়া নিয়ে। বৃহস্পতিবার রাত দ্বিপ্রহরে একই ঘরে চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

আরো পড়ুন:

পদ্মায় গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই ছাত্রের লাশ উদ্ধার

কুমিল্লায় মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার

৩৫ বছর বয়সি মিনারুল ইসলামের সংসার ছিল স্ত্রী মনিরা খাতুন (২৮), ছেলে মাহিম (১৪) ও মেয়ে মিথিলাকে নিয়ে। তারা এখন বামনশিকড়ের অভাবে-ঋণে হারিয়ে যাওয়া একটি শোকগাথা।

মতিহার থানার ওসি আবদুল মালেকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মিনারুলের ঘরে তাদের লাশের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুটে বেশ কিছু কথা লেখা আছে। তবে এখনই বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

দুই পাতার চিরকুটের ছবি রাইজিংবিডি ডটকমের হাতে এসেছে, যেখানে অভাব-ঋণ, বাবা-ভাইয়ের কাছ থেকে পাওয়া কষ্টের কথা লেখা রয়েছে।  

চিরকুটের এক পাতায় লেখা আছে, “আমি মিনারুল নিচের যে সব লেখা লেখবো। সব আমার নিজের কথা লিখে যাচ্ছি। কারণ, আমরা চারজন আজ রাতে মারা যাবো। এই মৃত্যুর জন্য কারো কোনো দোষ নেই। আমি মিনারুল প্রথমে আমার স্ত্রীকে মেরেছি। তারপর আমার মাহিমকে (ছেলে) মেরেছি। তারপর আমার মিথিলাকে (মেয়ে) মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে মরেছি।”

চিরকুটে আরো লেখা আছে, “আমাদের চারজনের মরা মুখ যেন বাপের বড় ছেলে ও তার স্ত্রী-সন্তান না দেখে এবং বাপের বড় ছেলে যেন জানাজায় না আসে। আমাদের চার জনকে কাফন দিয়ে ঢাকতে আমার বাবা যেন টাকা না দেয়। এটা আমার কসম।”

চিরকুটের দ্বিতীয় পাতায় লেখা আছে, “আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম, কারণ আমি একা যদি মরে যাই তাহলে, আমার স্ত্রী-সন্তানরা কার আশায় বেঁচে থাকবে? কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না।”

এরপরের বাক্যগুলো হুবহু এমন, “আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমারা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভাল হলো। কারও কাছে কিছু চাইতে হবে না। আমার জন্যে কাউকে মানুষের কাছে ছোট হতে হবে না। আমার বাবা আমার জন্য অনেক মানুষের কাছে ছোট হয়েছে, আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন।”

শেষে লেখা, “ধন্যবাদ।”

ঢাকা/কেয়া/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ