কৌশলের রাজনীতি বাংলাদেশে মানুষ দেখতে চায় না: চরমোনাই পীর
Published: 13th, May 2025 GMT
বাংলাদেশের মানুষ আর কৌশলের রাজনীতি দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম চরমোনাই পীর। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজশাহী নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে বড় মসজিদের সামনে এক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ মন্তব্য করেছেন।
আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগের তো মৌলিকভাবে এ দেশে রাজনীতি করার কোনো যুক্তি নেই। তাদের যখন নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে আওয়াজ তুলেছিল; তখন আমরা কিন্তু উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যানার নিয়ে এই অন্যায়ের প্রতিবাদে এবং খুনিদের বাতিলের দাবিতে রাজপথে অবস্থান নিই। এখন কথা হলো অন্য যারা রয়েছে, তাদের যে কৌশল, এটাকে আমি ঘৃণা করি। আমি তাদের এই কৌশলকে ধিক্কার জানাই। কারণ, হাজার হাজার মায়ের কোল সন্তানহারা হয়েছে। আর এই খুনিদের নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে টালবাহনা, এটা বাংলাদেশের জনগণ দেখতে চায় না। এ জন্য তারা নাকি কৌশল করছে। এই কৌশলের রাজনীতি বাংলাদেশে মানুষ দেখতে চায় না।’
সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম আরও বলেন, ‘এখন সুন্দর একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি—তাদের শাসন আমরা দেখেছি। নতুনভাবে তারা আমাদের কী উপহার দেবে, সেটা বাংলাদেশের জনগণ ভালোভাবে জেনে গেছে। নতুনভাবে আমাদের আর দেখার কিছু নেই। এখন শুধু একটিই নীতি–আদর্শ রয়েছে, সেই নীতি–আদর্শের মাধ্যমে দুনিয়াতে শান্তি, আখিরাতে মুক্তি। তার নাম ইসলাম।’
রাজশাহী জেলা ও মহানগর শাখা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আয়োজনে পাঁচ দফা দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তারা পাঁচ দফার আলোকে বক্তব্য দেন। তাঁদের দাবিগুলো হলো জুলাই গণহত্যার দ্রুত বিচার ও জড়িতদের সব নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, ইসলাম ও ধর্মবিরোধী নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, ভারতের ওয়াক্ফ আইন সংস্কারের নামে মুসলিম নির্মূলের চক্রান্তের প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনে মুসলিম গণহত্যা বন্ধকরণ এবং বাংলাদেশকে একটি ইনসাফভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র গঠন।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) শেখ মুহাম্মাদ নুরুন নাবী, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, আলেম ও সমাজসেবক হাফেজ মাওলানা আবদুর রহমান দিদারী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, রাজশাহী জেলার সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুরশিদ আলম ফারুকী। এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগরের সভাপতি মাওলানা হোসাইন আহমদ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভিডিও ভাইরাল: ২১ বছর ধরে কারাবন্দী বারগুতিকে হুমকি দিয়ে এলেন বেন–গভির
ইসরায়েলের কারাগারে গিয়ে সুপরিচিত ফিলিস্তিনি বন্দী মারওয়ান বারগুতিকে হুমকি দিচ্ছেন ইসরায়েলি জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন–গভির। প্রকাশিত একটি ভিডিওতে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
ইসরায়েলি কারাগারের এ ভিডিওতে বেন–গভিরকে বলতে শোনা যায়, ‘ইসরায়েলের বিরোধিতা করলে যে কেউ “ধ্বংস” হয়ে যাবে।’
এ ভিডিওর মধ্য দিয়ে অনেক বছর পর বারগুতিকে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে দেখা গেল। ভিডিওতে তাঁকে বয়সের ভারে ক্ষীণ হয়ে পড়া, সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি পরা একজন ব্যক্তি ও প্রায় অচেনারূপে দেখা যায়।
যে-ই ইসরায়েলের জনগণের সঙ্গে ঝামেলা করবে, আমাদের সন্তানদের হত্যা করবে, আমাদের নারীদের হত্যা করবে, তাঁকে আমরা ধ্বংস করে দেব। আমাদের হারাতে পারবে না।ইতামার বেন–গভির, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রীগত বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ওই ভিডিও। তাতে দেখা যায়, বেন–গভির বারগুতিকে বলছেন, ‘যে–ই ইসরায়েলের জনগণের সঙ্গে ঝামেলা করবে, আমাদের সন্তানদের হত্যা করবে, আমাদের নারীদের হত্যা করবে, তাঁকে আমরা ধ্বংস করে দেব। আমাদের হারাতে পারবে না।’
২০০৪ সাল থেকে কারাগারে আছেন ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারগুতি। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) নিয়ন্ত্রণকারী দল ফাতাহর একজন শীর্ষ নেতা তিনি। ২০০০–২০০৫ সালে ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় ইন্তিফাদায় (গণ–অভ্যুত্থান) নেতৃত্ব দেওয়ায় ও জনগণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে তাঁকে নিশানা করে ইসরায়েল।
মারওয়ানের ছেলে কাসেম বারগুতি মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ভিডিও প্রকাশের পর পরিবার গভীরভাবে তাঁর জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।
কাসেম বলেন, ‘দুই বছর ধরে তাঁকে (মারওয়ান) হুমকি ও আক্রমণের একটি ধারাবাহিকতা চলছে। (গাজায়) যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবার তাঁকে দুই বছর আগে আক্রমণ করা হয় এবং তিনি আহত হন।’
২০০৪ সাল থেকে কারাগারে আছেন ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারগুতি। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) নিয়ন্ত্রণকারী দল ফাতাহর একজন শীর্ষ নেতা তিনি। ২০০০-২০০৫ সালে ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় ইন্তিফাদায় নেতৃত্ব দেওয়ায় ও জনগণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে তাঁকে নিশানা করে ইসরায়েল।মারওয়ান বারগুতির ছেলে আরও বলেন, ‘আজ পরিষ্কার হয়ে গেছে যে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী বেন–গভির, যিনি ইসরায়েলের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নেতৃত্বের প্রতিনিধি, তাঁর জীবনকে সরাসরি হুমকির মুখে ফেলেছেন।’
কাসেমের মতে, ‘স্পষ্টভাবে বলা যায় যে তাঁকে (মারওয়ান) তাঁর সেলের ভেতরে হত্যা করার সরাসরি হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর নির্যাতন করা ও নিশানা বানানো আসলে গাজায় ইসরায়েলের চালানো গণহত্যারই অংশ।’
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, বেন–গভির কারা কমিশনার কোবি ইয়াকোবির সঙ্গে তেল আবিবের গানোট কারাগারে যান। সেখানে ‘বন্দী সন্ত্রাসী’দের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার বিষয়টি কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেন তাঁরা।
কারাগারে মারওয়ান বারগুতিকে বেন–গভিরের হুমকি দেওয়ার একটি দৃশ্য