বাংলাদেশের মানুষ আর কৌশলের রাজনীতি দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম চরমোনাই পীর। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজশাহী নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে বড় মসজিদের সামনে এক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ মন্তব্য করেছেন।

আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগের তো মৌলিকভাবে এ দেশে রাজনীতি করার কোনো যুক্তি নেই। তাদের যখন নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে আওয়াজ তুলেছিল; তখন আমরা কিন্তু উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যানার নিয়ে এই অন্যায়ের প্রতিবাদে এবং খুনিদের বাতিলের দাবিতে রাজপথে অবস্থান নিই। এখন কথা হলো অন্য যারা রয়েছে, তাদের যে কৌশল, এটাকে আমি ঘৃণা করি। আমি তাদের এই কৌশলকে ধিক্কার জানাই। কারণ, হাজার হাজার মায়ের কোল সন্তানহারা হয়েছে। আর এই খুনিদের নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে টালবাহনা, এটা বাংলাদেশের জনগণ দেখতে চায় না। এ জন্য তারা নাকি কৌশল করছে। এই কৌশলের রাজনীতি বাংলাদেশে মানুষ দেখতে চায় না।’

সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম আরও বলেন, ‘এখন সুন্দর একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি—তাদের শাসন আমরা দেখেছি। নতুনভাবে তারা আমাদের কী উপহার দেবে, সেটা বাংলাদেশের জনগণ ভালোভাবে জেনে গেছে। নতুনভাবে আমাদের আর দেখার কিছু নেই। এখন শুধু একটিই নীতি–আদর্শ রয়েছে, সেই নীতি–আদর্শের মাধ্যমে দুনিয়াতে শান্তি, আখিরাতে মুক্তি। তার নাম ইসলাম।’

রাজশাহী জেলা ও মহানগর শাখা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আয়োজনে পাঁচ দফা দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তারা পাঁচ দফার আলোকে বক্তব্য দেন। তাঁদের দাবিগুলো হলো জুলাই গণহত্যার দ্রুত বিচার ও জড়িতদের সব নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, ইসলাম ও ধর্মবিরোধী নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, ভারতের ওয়াক্‌ফ আইন সংস্কারের নামে মুসলিম নির্মূলের চক্রান্তের প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনে মুসলিম গণহত্যা বন্ধকরণ এবং বাংলাদেশকে একটি ইনসাফভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র গঠন।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) শেখ মুহাম্মাদ নুরুন নাবী, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, আলেম ও সমাজসেবক হাফেজ মাওলানা আবদুর রহমান দিদারী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, রাজশাহী জেলার সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুরশিদ আলম ফারুকী। এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগরের সভাপতি মাওলানা হোসাইন আহমদ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র র জন ত ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

এনবিআরের চাকরি অত্যাবশ্যকীয় সেবা, কাজে যোগ না দিলে কঠোর ব্যবস্থা: সরকারের বিবৃতি

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সেবা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে সংস্থাটির আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে ফেরার আহ্বান জানিয়ে সরকার বলেছে, কাজে যোগ না দিলে দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হবে। আজ রোববার সরকার এক বিবৃতিতে এমনটা জানিয়েছে।

সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার এনবিআরের আওতাধীন সব কাস্টম হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনগুলোর সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস বা সেবা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সরকার আশা প্রকাশ করে বলেছে, অনতিবিলম্বে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বাজেট ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নমুখী কার্যক্রম পরিচালনার সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো দুর্বল রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থা। রাষ্ট্রের প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের রাজস্ব সংগ্রহ অনেক কম। এর মূল কারণ হচ্ছে, রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনার নানা দুর্বলতা, অনিয়ম ও দুর্নীতি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার সব অংশীজনের পরামর্শ অনুযায়ী এনবিআর পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, রাজস্ব সংস্কারের কাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী নজিরবিহীনভাবে ২ মাস ধরে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি এবং রাজস্ব আদায় কার্যক্রম অন্যায় ও অনৈতিকভাবে ব্যাহত করে আন্দোলনের নামে চরম দুর্ভোগ তৈরি করেছে, যা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংস্কারের বিরোধিতা ছাড়াও অর্থবছরের শেষ ২ মাসে আন্দোলনকারীরা রাজস্ব আদায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করেছেন। এই তথাকথিত আন্দোলন পরিকল্পিত ও দুরভিসন্ধিমূলক, যা জাতীয় স্বার্থ এবং নাগরিক অধিকারের চরম পরিপন্থী। সরকারের পক্ষ থেকে রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি বিবেচনায় নেওয়ার সুস্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া হয় এবং আলোচনায় আসার আহ্বান জানালেও তাঁরা তা অগ্রাহ্য করেন। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার গ্রহণযোগ্য সমাধান না করে তাঁরা আন্দোলনের নামে অনমনীয় অবস্থান নিয়ে ক্রমাগত দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করে চলেছেন।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির কারণে পণ্য আমদানি-রপ্তানিসহ এনবিআরের সার্বিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা এই কর্মসূচির কারণে গতকাল শনিবার থেকে ঢাকার এনবিআর ভবন থেকে শুরু করে সংস্থাটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর, বেনাপোল ও সোনামসজিদ স্থলবন্দর এবং ঢাকা কাস্টম হাউসসহ দেশের সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে সব ধরনের শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব জনপ্রত্যাশা নিয়ে কতটা সজাগ
  • মৌলিক সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোকে একাত্ম হওয়ার আহ্বান এনসিপির
  • আলোচনার অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক নয়: আলী রীয়াজ 
  • নিত্যখাদ্যপণ্যে ভ্যাট, করনীতি সংস্কার যেখানে জরুরি
  • ৭১ ও ২০০৯’র পর রাষ্ট্রের মালিকানা এক গোষ্ঠীর হয়ে যায়: ইবি ভিসি 
  • এনবিআরের চাকরি অত্যাবশ্যকীয় সেবা, কাজে যোগ না দিলে কঠোর ব্যবস্থা: সরকারের বিবৃতি
  • ‘বন্দর ইজারা ও করিডোরের সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে নতুন কর্মসূচি’
  • যে বছরের পর বছর নির্যাতিত হয়েছেন তাকে মূল্যায়ন করতে হবে: অধ্যাপক নার্গিস বেগম
  • মব সন্ত্রাস জনগণের আন্দোলনের অর্জনকে ক্ষুণ্ন করছে: জোনায়েদ সাকি
  • ফেনীতে সমাবেশ শেষে চট্টগ্রামের পথে ‘বন্দর রক্ষার দাবিতে’ রোডমার্চ