গত কয়েক বছর ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর অবশেষে বিমানের জ্বালানি বা জেট ফুয়েলের দাম কমাল সরকার।

মঙ্গলবার (১৩ মে) বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এক আদেশে এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়।

এতে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ রুটের প্রতি লিটার জ্বালানির দাম ১৭ টাকা ৪৩ পয়সা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৩ টাকা ৫৭ পয়সা। আগে প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের দাম ছিল ১১১ টাকা।

আরো পড়ুন:

বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল পরিদর্শন করলেন তিন উপদেষ্টা

বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান হান্নানের সপরিবারে বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক রুটের জন্য প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের দাম কমেছে ১৫ সেন্ট।এতদিন প্রতি লিটার জ্বালানির জন্য এয়ারলাইনসগুলোকে দিতে হতো ৭৫ সেন্ট। এখন তা মিলবে ৬০ সেন্টে। 

বিইআরসি জানিয়েছে, জেট ফুয়েলের নতুন দাম কার্যকর হবে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে।

আদেশে বলা হয়েছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং কক্সবাজার বিমানবন্দরে নতুন দামে জেট ফুয়েল পাওয়া যাবে।

দেশি–বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো দীর্ঘদিন ধরেই জ্বালানির দাম সমন্বয়ের দাবি জানিয়ে আসছিল। তারা বলছে, একটি ফ্লাইটের ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের ৪০ থেকে ৬০ ভাগই নির্ভর করে জ্বালানির দামের ওপর। ফলে জ্বালানির দাম ওঠানামার প্রভাব পড়ে ফ্লাইটের ভাড়ায়।

বাংলাদেশে দেশি–বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোকে জ্বালানি সরবরাহ করে সরকারি প্রতিষ্ঠান পদ্মা ওয়েল।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ