বাবা রোনালদোর ছাপ রেখে ক্রিস্টিয়ানিনহো জাতীয় দলে অভিষিক্ত
Published: 14th, May 2025 GMT
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ছেলের নাম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো জুনিয়র। ক্রিস্টিয়ানিনহো নামে পরিচিত এই কিশোরের মঙ্গলবার (১৩ মে) অভিষেক হয়ে গেল পর্তুগালের জার্সিতে। ক্রোয়েশিয়ার স্ভেতি মার্টিন না মুরি শহরে অনুষ্ঠিত ভ্লাতকো মার্কোভিচ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে পর্তুগালের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে যাত্রা শুরু হয় ক্রিয়ানিনহোর। এই ম্যাচে জাপান অনূর্ধ্ব-১৫ দলের বিপক্ষে পর্তুগালের অনূর্ধ্ব-১৫ ৪-১ গোলের বড় জয় পায়।
ক্রিস্টিয়ানিনহো তার বাবার বিখ্যাত ‘৭’ নম্বর জার্সি পরে মাঠে নামেন। তিনি অবশ্য শুরুর একাদশে ছিলেন না। বেঞ্চে থেকে ম্যাচ শুরু করেন। বিরতির পর ম্যাচের ৫৫তম মিনিটে তিনি মাঠে নামেন। লেফট উইঙ্গার হিসেবে তিনি খেলেন, ঠিক যেমনটা তার বাবা ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় খেলেছেন।
মাঠে ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়রের উপস্থিতিতে পর্তুগাল লিড ধরে রাখতে সক্ষম হয়। ম্যাচে সেলেসাওদের হয়ে রাফায়েল কাবরালের হ্যাটট্রিক করেন। অন্য গোলটি আসে হেনরিক আমেনের কাছ থেকে।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ছেলে ম্যাচের আগে পর্তুগালের অনূর্ধ্ব-১৫ দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছিলেন। ক্রিস্টিয়ানিনহো এবং তার সতীর্থরা বুধবার (আজ, ১৪ মে) গ্রিস এবং শুক্রবার (১৬ মে) ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে। পর্তুগাল আসরটির ‘বি’ গ্রুপ আছে।
ছেলের জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক দেখতে বাবা রোনালদো অবশ্য মাঠে ছিলেন না। তবে ক্রিস্টিয়ানিনহোর দাদি অর্থাৎ রোনালদোর মা দোলারোস এভেরিও ঠিকই মাঠে ছিলেন। মারিয়া দোলারোসের আপোষহীন তত্বাবধানেই মূলত রোনালদো তার জুনিয়র ক্যারিয়ারে সফল হন এবং স্পোর্টিংয়ে নাম লেখান। এখন এই ৭০ বছর বয়সী অদম্য নারী হয়ত তাঁর নাতীকে ফুটবলে সেরা বানানোর মিশনে নেমে পড়েছেন।
রোনালদো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেলের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে লিখেছেন, “তোমার পর্তুগালের হয়ে অভিষেকের জন্য অভিনন্দন, বাবা। তোমাকে নিয়ে আমি খুব গর্বিত।”
উল্লেখ্যে ক্রিস্টিয়ানিনহো বর্তমানে তার বাবার ক্লাব সৌদি আরবের আল নাসরের যুব দলের হয়ে খেলছেন। এর আগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও জুভেন্টাসের যুব দলেও খেলেছেন তিনি।
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ত গ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত ও চীনের মধ্যে ‘নামসংঘাত’
চীন ও ভারতের মধ্যে কোনো সশস্ত্র সংঘাত না হলেও, একধরনের ঠান্ডা লড়াই যে অব্যাহত রয়েছে, তা আবারও বোঝা গেল আজ বুধবার। আজ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য অরুণাচল প্রদেশের কিছু অংশের নতুন করে চীনা নাম রাখার বেইজিংয়ের বিরোধিতা করে একটি বিবৃতি দিয়েছে। চীনের পশ্চিম ও দক্ষিণ অংশে অবস্থিত তিব্বতের নিচের রাজ্য অরুণাচল প্রদেশকে চীন ইতিহাসগতভাবে তাদের প্রদেশ বলে মনে করে। সেই কারণে তারা মাঝেমধ্যেই এককভাবে অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নামকরণ নিজেদের মতো করে। সম্প্রতি এ ঘটনা ঘটেছে আবার, যার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত।
এক প্রশ্নের উত্তরে আজ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি যে চীন ভারতের অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানের নামকরণের নিরর্থক এবং অযৌক্তিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নীতিগত সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে আমরা এ ধরনের চেষ্টা সুস্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। হঠাৎ নামকরণের মধ্য দিয়ে এই অনস্বীকার্য বাস্তবতাকে পরিবর্তন করা যাবে না—অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে এবং থাকবে।’
চীন সম্প্রতি ভারতের সীমান্তবর্তী অরুণাচল প্রদেশের বেশ কিছু জায়গার নাম এককভাবে প্রকাশ করেছে। যে অঞ্চলগুলোর নামকরণ চীন করেছে, তার অধিকাংশই ভারতের মধ্যে। দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীর সঙ্গে চীন কিছু বছর ধরে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তা সত্ত্বেও চীনের বেসামরিক নাগরিক–বিষয়ক মন্ত্রণালয় অরুণাচল প্রদেশের স্থানগুলোর সর্বশেষ নাম প্রকাশ করে বলেছে, অরুণাচল প্রদেশ বা তাদের ভাষায় ‘জাংনান’ তিব্বতের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের অংশ। মোট ২৭টি স্থানের নাম এবারে চীন তাদের মতো করে পরিবর্তন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৫টি পাহাড়, ৫টি আবাসিক এলাকা, ৪টি পাহাড়ের গিরিপথ, ২টি নদী ও ১টি হ্রদ।
প্রতিটি স্থানের নাম চীনা অক্ষর, তিব্বতি ও পিনয়িন (মান্দারিন চীনার রোমান হরফে লেখা বানান) ভাষায় প্রকাশ করার পাশাপাশি মানচিত্রে স্থানগুলোর অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশের স্থানাঙ্ক এবং একটি উচ্চ রেজল্যুশনের মানচিত্রসহ দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ সময় ধরে অরুণাচলের নাম পরিবর্তন করছে চীন
ভারতের অরুণাচলকে দক্ষিণ তিব্বত হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে নাম ঘোষণা করার চীনের এই চেষ্টা আজকের নয়। দীর্ঘ সময় ধরেই তারা এটা করছে এবং বস্তুত প্রতিবছরই করে। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে চীন অরুণাচল প্রদেশের ৩০টি জায়গার নাম পরিবর্তন করে তাদের ভাষায় রেখে দিয়েছিল।
২০২৪ সালের এপ্রিলে চীন তার নিজস্ব ভাষায় অরুণাচল প্রদেশের ৩০টি স্থানের নাম পরিবর্তন করে। এর আগে ২০১৭ সালে অরুণাচল প্রদেশে ৬টি স্থানের নাম পরিবর্তন করে। এরপর ২০২১ সালে ১৫টি এবং ২০২৩ সালে ১১টি স্থানের নাম পরিবর্তন করে চীন। বর্তমানে চীন আবার অরুণাচল প্রদেশের অনেক জায়গার নাম পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে।
চীনের এই নামকরণের প্রক্রিয়ার পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভারতও চীনের একাধিক জায়গার নামকরণ সংস্কৃত ভাষায় করেছে বা করছে। সেনাবাহিনীর যুদ্ধতথ্য বিভাগ কর্তৃক নাম পরিবর্তনের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং শিগগিরই তা প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এর জন্য ভারত সরকার পশ্চিমবঙ্গে ১৭৮৪ সালে স্থাপিত এশিয়াটিক সোসাইটিকে তিব্বত স্বশাসিত অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গার সাংস্কৃতিক ও বৌদ্ধিক নাম নিয়ে খুঁজে বের করার তাগাদা দিয়েছে বলেও ভারতের প্রচার মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।