ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা
Published: 14th, May 2025 GMT
ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বসানোর দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের সামনে থেকে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণা অনুসারে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে।
এর আগে আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঢাকাবাসীর ব্যানারে হাজারো মানুষ গুলিস্তানে নগর ভবনে সামনে জড়ো হয়ে মানববন্ধনে দাঁড়ান। পরে লোকসমাগম বেশি হলে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব মশিউর রহমান কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ইশরাকের শপথ নিয়ে নানা টাল বাহানা করা হচ্ছে। আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পরও অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন ব্যক্তির কারণে জনতার মেয়র ইশরাককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। শপথের মাধ্যমে ইশরাককে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ায় কাল বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করা হলো।
বিএনপির বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ মার্চ রায় দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নগরভবনের সামনে আজকের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা বলেন, এখন পর্যন্ত ইশরাকের শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। তাঁরা ভোট দিয়ে ইশরাককে মেয়র নির্বাচিত করেছিলেন। কিন্তু কারচুপি করে তাঁকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে আদালতের রায়ে তিনি ন্যায়বিচার পেলেও তাঁর প্রতি এখন অবিচার করা হচ্ছে। তাই তাঁরা ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।
পুরান ঢাকার নারিন্দা এলাকার বাসিন্দা সাইদুর রহমান বিক্ষোভ চলাকালে প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছে।
আজকের কর্মসূচিতে পুরান ঢাকাসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটির বিভিন্ন এলাকার বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেন। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে পৃথক পৃথক মিছিল নিয়ে ইশরাকের সমর্থরা প্রথমে নগর ভবনের সামনের সড়কে এবং পরে নগর ভবন প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন। বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অনেককেও এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুনইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগরভবনের সামনে বিক্ষোভ২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নগর ভবন অবস থ ন ইশর ক
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)