ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের আকাশযুদ্ধে চীনা ‘জে-১০সি’ যুদ্ধবিমানের সাফল্যের রহস্য কী
Published: 15th, May 2025 GMT
১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে চীন ছিল একটি নিম্ন আয়ের দেশ। তখন দেশটির প্রতি ১০ জনের ৯ জন চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করতেন। দেশটির বর্তমান যে শিল্প খাত, তখন সেটির অস্তিত্ব ছিল না বললেই চলে।
কিন্তু কোনো প্রতিবন্ধকতা আধুনিক চীনের রূপকার দেং জিয়াওপিংকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। তিনি এক দশক ধরে দেশটির নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ সময় একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী বিমান তৈরির কর্মসূচি গ্রহণ করেন। এর লক্ষ্য ছিল মূলত স্থানীয় প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে এমন একটি যুদ্ধবিমান তৈরি, যা নিশ্চিতভাবে পশ্চিমাদের তৈরি বিমানগুলোকে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে।
নতুন ধরনের এই চীনা যুদ্ধবিমান তৈরির কাজটি এতটাই ব্যাপক ও দীর্ঘ ছিল যে তা দেং জিয়াওপিংয়ের ১১ বছরের শাসনকালকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
দেংয়ের উত্তরসূরি চীনের প্রেসিডেন্ট জিয়াং জেমিন ১৯৯৪ সালে একবার যুদ্ধবিমান নির্মাণকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে বলেছিলেন, চীন এমন একটি যুদ্ধবিমান তৈরি করছে, যা পারমাণবিক বোমার চেয়ে বেশি কার্যকর।
জে-১০সি ও রাফালের তুলনা করা এ মুহূর্তে অনেকটা সরলীকরণ হয়ে যাবে। কারণ, চীনা যুদ্ধবিমানের কর্মদক্ষতা নিয়ে এখনো সীমিত তথ্য হাতে এসেছে। ভারত হয়তো তাদের রাফাল যুদ্ধবিমানের ক্ষমতা অতিমূল্যায়ন করেছে কিংবা চীনা যুদ্ধবিমানগুলোকে অবমূল্যায়ন করেছে।আন্দ্রেয়াস রুপ্রেখট, সামরিক বিমান বিশেষজ্ঞপুরোপুরিভাবে জে-১০ যুদ্ধবিমান তৈরি করতে চীনের প্রায় আড়াই দশক সময় লেগেছিল। এটি এমন একটি প্রাণঘাতী যুদ্ধবিমান, যা আকাশযুদ্ধে যেমন সক্ষম, তেমনি স্থলভাগে আঘাত হানার ক্ষেত্রেও সমান দক্ষ। ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি (২০০৪-২০০৬) যুদ্ধবিমানটি চালু করা হয় এবং ২০১৮ সালে এটি যুদ্ধ খাতে যুক্ত হয়।
তবে ৭ মে ভোররাতে এই যুদ্ধবিমান প্রথমবারের মতো সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া এ আকাশযুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় আকাশযুদ্ধ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
চীনের ঘনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য মিত্র পাকিস্তানই চীনের বাইরে একমাত্র দেশ, যাদের কাছে রয়েছে জে-১০সি যুদ্ধবিমান। এটি চীনা যুদ্ধবিমানটির তৃতীয় ও সর্বশেষ সংস্করণ।
পাকিস্তান বিমান বাহিনী (পিএএফ) দাবি করেছে, তারা ৭ মে আকাশযুদ্ধে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের নির্মিত অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমান। এর আগে রাফাল ভূপাতিত করার ঘটনা ঘটেনি।
তবে ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ) এখনো কোনো যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করেনি। যদিও মার্কিন ও ফরাসি কর্মকর্তারা রাফাল ভূপাতিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফরাসি বহুমুখী যুদ্ধবিমান রাফাল বিশ্বের অন্যতম উন্নত ও ৪ দশমিক ৫ প্রজন্মের বিমান হিসেবে পরিচিত। ভারত ২০২০-২২ সালে এই বিমানগুলো সংগ্রহ করেছিল। এটি এখন আইএএফের আকাশবহরের সর্বোচ্চ শক্তির প্রতীক।
পশ্চিমা বিশ্বের পরীক্ষিত যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে জে-১০সির এই প্রথম সফল লড়াই এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক তৈরি করেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা ৭ মের আগপর্যন্ত একে অনেকটা অনীহা নিয়েই ‘মার্কিন এফ-১৬-এর প্রায় সমমানের যুদ্ধবিমান’ হিসেবে উল্লেখ করতেন।
আধুনিক চীনের রূপকার দেং জিয়াওপিংয়ের ছবির সামনে কয়েকজন পর্যটক। গুয়াংডং, চীন, ১৯ আগস্ট ২০১৪। শিয়াওপিং প্রথম দেশীয় প্রযুক্তিতে চীনে যুদ্ধবিমান তৈরির উদ্যোগ নেন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আশ্চর্য সেই জয়ের গল্প ‘গেম অব দেয়ার লাইভস’
নিউইয়র্ক টাইমস ভেবেছিল ধাপ্পাবাজি। স্কোরলাইন প্রথমে জানার পর প্রচার করতে চায়নি। আর ইংলিশ সংবাদমাধ্যম ভেবেছিল, বেলো হরাইজন্তে থেকে যে খবর এসেছে, সেটা সম্ভবত ছাপার ভুল। ইংরেজ ভূ–ভাগ যেমন ফলের আশায় ছিল, তেমন কিছুই ছাপিয়েছিল তারা। ইংল্যান্ড ১০-১ গোলে জিতেছে।
ভুল। স্কোরলাইন ছিল ১-০। যুক্তরাষ্ট্রের অপেশাদার দলের কাছে হেরেছে তখনকার অন্যতম সেরা ও ফুটবলের জনক হওয়ার গর্বে বলীয়ান ইংল্যান্ড!
আরও পড়ুনগতি, গ্ল্যামার আর উত্তেজনায় রোমাঞ্চকর ‘রাশ’২৩ জুন ২০২৫আশ্চর্য বললেও কম হয়, এই অত্যাশ্চর্য ফল ৭৫ বছর আগের সেই বিশ্বকাপে কেউ হয়তো ভাবেনি। যুক্তরাষ্ট্রের লেখক জিওফ্রে ডগলাস সেই আশ্চর্য গল্পই ১৯৯৬ সালে তুলে এনেছিলেন ‘দ্য গেম অব দেয়ার লাইভস’ বইয়ে। সে বছরই ডিসেম্বরে বইটির সিনেমার স্বত্ব কিনলেও টাকার জোগাড় হচ্ছিল না। অগত্যা স্বত্ব বেচে দেন আমেরিকান বিলিয়নিয়ার ও মেজর লিগ সকারের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ফিলিপ আনশুৎজকে।
যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবলে সবার আগ্রহ বাড়াতে সিনেমাটি বানানোর উদ্যোগ নেন আনশুৎজ। ডেকে পাঠান খেলা নিয়ে তত দিনে কাল্টে পরিণত হওয়া সিনেমা ‘হোসিয়ার্স’ ও ‘রুডি’র চিত্রনাট্য নির্মাতা অ্যাঞ্জেলো পিজ্জোকে। পরিচালনার ভার পড়ে ওই দুটি সিনেমারই পরিচালক ডেভিড এন্সপের কাঁধে।
ব্রাজিলের বেলো হরাইজন্তেতে সেদিন অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছিল যুক্তরাষ্ট