চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির নির্বাচন ঘিরে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
Published: 15th, May 2025 GMT
চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী লেখক সমাজের ব্যানারে একদল লেখক নির্বাচন স্থগিতের দাবিতে মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন লেখক ও সাহিত্যিক এম ফরিদুল ইসলাম, চর্যাপদ একাডেমির মহাপরিচালক রফিকুজ্জামান রনি, হিলশা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদের পরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, সহকারী পরিচালক সুলতান মাহমুদুল হাসান, কবি মিজানুর রহমান, মোহনা সাহিত্য শিল্পীগোষ্ঠীর পরিচালক আবদুল মাজেদ প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করেন, চাঁদপুরের লেখকেরা ১৫ বছর ধরে বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। তাঁদের সাহিত্য একাডেমির সদস্য করা হয়নি। ফ্যাসিবাদের দোসররা একাডেমি দখল করে রেখেছে। সেই ফ্যাসিবাদী সময়ের পুরোনো ভোটার তালিকা দিয়ে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে ফ্যাসিবাদকেই পুনর্বাসন করা হবে। তাঁরা বলেন, অবিলম্বে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং তারপর নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসকের কাছে।
মানববন্ধনে চাঁদপুরের বিভিন্ন পর্যায়ের লেখক, কবি ও সাহিত্যিকেরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ১৩ মে তাঁরা একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপিও দেন।
অন্যদিকে একই দিন বেলা দুইটার দিকে চাঁদপুর শহরের জোড়পুকুরপাড় সাহিত্য একাডেমি প্রাঙ্গণে চাঁদপুর লেখক সমাজের ব্যানারে অপর একটি পক্ষ পাল্টা মানববন্ধন করে। তারা বলে, তারা চায় চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির নির্বাচন হোক এবং সাহিত্যচর্চা আরও বেগবান হোক। তাদের অভিযোগ, একটি পক্ষ নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন লেখক মাহবুব আনোয়ার, আবদুল্লাহ হিল কাফি, নুরুন্নাহার মুন্নি, পলাশ দে প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র স হ ত য এক ড ম র
এছাড়াও পড়ুন:
বরিশালে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে গত ১৮ দিন ধরে চলমান আন্দোলন এবং বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান ফটকে গত কয়েকদিন ধরে চলা অনশনকারীদের ওপর হামলা ও ধাওয়া দেওয়া হয়েছে। এতে আন্দোলনকারী অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারী আহত শিক্ষার্থীরা।
এদিন সকালে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের আয়োজনে অযৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনের নামে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ব্যহত করার অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিলের পরপরই আন্দোলকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আহত শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
নবাব স্যার সলিমুল্লাহ স্মৃতি সংসদের নেতৃত্বে জাহিন-রাফি
রাকসু ফান্ডে জমা ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা, হল সংসদের ফান্ড অস্পষ্ট
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জেরে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় হাসপাতাল কম্পাউন্ডে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে, বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে বরিশাল সফরে এসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার দিবাগত রাতে বরিশাল নগরীতে মশাল মিছিল করেন আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারী ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পরপরই স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা জানিয়েছেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা সংগঠক মহিউদ্দিন রনি।
তিনি বলেন, “১৩ আগস্ট বরিশালে সফরে এসে ব্যর্থ হয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফসহ সেই পুরনো সিন্ডিকেট দালাল চক্রের সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় অনশনরত শিক্ষার্থীসহ তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসা আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।”
তিনি আরো বলেন, “বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজসহ দেশের সব সরকারি হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা সেবায় অবহেলা এবং স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে আমরা ১৮ দিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল স্বাস্থ্য উপদেষ্টা স্ব-শরীরে বরিশালে এসে আন্দোলনকারীদের যৌক্তিক দাবিগুলো শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেবেন। কারণ স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পরবর্তী যেসব কর্মকর্তা রয়েছেন, তারা অধিকাংশই বিভিন্ন সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত।”
রনি বলেন, “যে কারণে আন্দোলনকারীরা তাদের দাবিগুলো উপদেষ্টার কাছে বলতে চেয়েছেন। সেখানে উপদেষ্টা না এসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বরিশালে পাঠিয়েছেন। মহাপরিচালক বরিশালে মতবিনিময় সভা করলেও সেখানে আন্দোলনকারীদের কোনো প্রতিনিধি না রেখে বরং অযৌক্তিক আন্দোলন বন্ধ না হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হস্তক্ষেপ করবে বলে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে গেছেন। এ কারণেই হাসপাতালের স্টাফরা আন্দোলনকারী ও অনশনরতদের ওপর হামলা চালাতে সাহস দেখিয়েছেন। আমারা এখন স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগের এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা করব।”
অপরদিকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একাধিক স্টাফরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন চলাকালে ছাত্ররা আমাদের কটূক্তি করে দালাল বলায় তাদের ধাওয়া করা হয়। এ সময় অযৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনকারীরা দৌড়ে পালাতে গিয়ে আহত হয়েছে।”
এর আগে, স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের দাবিকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
কর্মসূচি শেষে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হাসপাতাল থেকে শহরে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানালে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এরপর উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ সময় বেশ কয়েকজন ছাত্র-জনতা আহত হন এবং আন্দোলনরত কয়েকজনকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
ঢাকা/পলাশ/মেহেদী