গাজীপুর মহানগরীর তেলিপাড়া এলাকায় অবস্থিত ‘জার্মান ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ’ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের কথা জানানো হয়।

শুক্রবার (১৬ মে) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কার্যক্রম চালুসহ একাধিক দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। 

রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এতদ্বারা জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এ অধ্যয়নরত সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জানানো যাচ্ছে যে, গত ১৫ মে তারিখে অনুষ্ঠিত জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর ৬ষ্ঠ জরুরী সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অনিবার্য কারণ বশত পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ইউনিভার্সিটির সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

এই আদেশ ১৬ মে শুক্রবার থেকে কার্যকর হবে।

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, “আমাদের কিছু দাবি ছিল, সেগুলো দুই সপ্তাহ আগে ভিসি ও রেজিস্ট্রার কাছে জানানো হয়েছিল। কিন্তু দাবিগুলো না মেনে হঠাৎ করেই নোটিশ দিয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভার্সিটি বন্ধ। এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গেট তালাবদ্ধ করে রেখেছে আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলছেন না৷” 

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- অতি দ্রুত ১ মাসের মধ্যে যথাযথ প্রক্রিয়ায় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যোগ্য উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের নিয়োগ সম্পন্ন করা হোক। সকল বিভাগে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগসহ শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর ১০ বছর হয়ে গেলেও এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। দ্রুততম সময়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। ওয়েবসাইট ও শিক্ষার্থীদের জন্য ই-সেবা পোর্টাল চালু করতে হবে।

সকল বিভাগে পর্যাপ্ত ল্যাবরেটরি সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক সেকশনে শিক্ষার্থীরা যেন কর্মকর্তা-কর্মচারী দ্বারা কোন প্রকার হয়রানির স্বীকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

এবিষয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সারমিন মনি বলেন, “আমাদের কোন কিছু না জানিয়ে গতকাল রাত ৮টায় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। উনারা এখন আমাদের মুখোমুখি হচ্ছেন না৷ আমরা অনেক টাকা ইনভেস্ট করছি৷ কিন্তু আমাদের ভার্সিটি কর্তৃপক্ষ কোন সদুত্তর দিচ্ছেন না৷ তালা দিয়ে রেখেছেন। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি৷ 

ঢাকা/রেজাউল/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ র ম ন ইউন ভ র স ট আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগের ইতিহাস একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের ইতিহাস: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের লিগ্যাসি, যেটা আমি সব সময় বলি, আওয়ামী লীগের ইতিহাস একদলীয় শাসনব্যবস্থার প্রবর্তনের ইতিহাস। সাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসন দূরীভূত করার ইতিহাস। এই যে চোরতন্ত্রের ওয়ারেশি ব্যবস্থা, সেটা শেখ মুজিবের সময় থেকে শেখ হাসিনার সময় পর্যন্ত গড়িয়েছে।’

শুক্রবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাঙ্কুয়েট হলে ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন।

যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগকে চারটি বিভাগে ভাগ করে ধারাবাহিকভাবে সেমিনার ও সমাবেশের আয়োজন করছে। গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে প্রথম পর্বের আয়োজন শেষে খুলনায় আজ খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সমন্বয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রবঞ্চনামূলক সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ফলে রাষ্ট্রের দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। তারা গণতান্ত্রিক জবাবদিহি নষ্ট করেছে। শেখ হাসিনার সময় বিশেষ কেন্দ্রীভূত সরকার তৈরি হয়েছিল। সেই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য বহু জীবন দিতে হয়েছে।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের ১৫-১৬ বছরের ফ্যাসিবাদের সময়ের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রণয়নের জন্য অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, যদি আওয়ামী লীগের ওই সময়ে শুধু ট্যাক্সের ক্ষেত্রে যে অপব্যবহার ও দুর্নীতি করা হয়েছে, তা যদি অর্ধেকও করা হতো, তাহলে আমাদের শিক্ষা বাজেট ডাবল করা যেত এবং হেলথ বাজেট তিন গুণ করা যেত।

সেমিনারে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেন, ‘কোনো সংবিধানই মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে না, যদি রাজনৈতিক শক্তি না চায়। রাজনীতিতে ভালো মানুষ, ভালো নেতৃত্ব এলেই মৌলিক অধিকার রক্ষা সম্ভব। তরুণ প্রজন্মের জন্য এখন রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ভালো সময়। গত ১৬-১৭ বছর ভালো মানুষ যেন রাজনীতিতে না আসতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনের উপস্থাপনায় বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্রের মেডিকেল ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলাইনার সহযোগী অধ্যাপক আজিজুল হক, বিডি জবসের প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও প্রভাষক মারুফ মল্লিক, চিন্তক ও জবান সম্পাদক রেজাউল করিম, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম খন্দকার, ‘শিখো’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীর চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের সহযোগী অধ্যাপক তৌফিক জোয়ার্দার।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে কাল শনিবার সার্কিট হাউস মাঠে তারুণ্যের সমাবেশ হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তারুণ্যের ভাবনা ও অধিকার নিয়ে খুলনার পর ২৩ মে বগুড়ায় এবং ২৭ মে ঢাকার মাধ্যমে কর্মসূচির শেষ হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ