অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ জার্মান ইউনিভার্সিটি, শিক্ষার্থীদের বিক্ষ
Published: 16th, May 2025 GMT
গাজীপুর মহানগরীর তেলিপাড়া এলাকায় অবস্থিত ‘জার্মান ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ’ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের কথা জানানো হয়।
শুক্রবার (১৬ মে) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কার্যক্রম চালুসহ একাধিক দাবিতে বিক্ষোভ করছেন।
রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এতদ্বারা জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এ অধ্যয়নরত সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জানানো যাচ্ছে যে, গত ১৫ মে তারিখে অনুষ্ঠিত জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর ৬ষ্ঠ জরুরী সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অনিবার্য কারণ বশত পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ইউনিভার্সিটির সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
এই আদেশ ১৬ মে শুক্রবার থেকে কার্যকর হবে।
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, “আমাদের কিছু দাবি ছিল, সেগুলো দুই সপ্তাহ আগে ভিসি ও রেজিস্ট্রার কাছে জানানো হয়েছিল। কিন্তু দাবিগুলো না মেনে হঠাৎ করেই নোটিশ দিয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভার্সিটি বন্ধ। এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গেট তালাবদ্ধ করে রেখেছে আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলছেন না৷”
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- অতি দ্রুত ১ মাসের মধ্যে যথাযথ প্রক্রিয়ায় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যোগ্য উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের নিয়োগ সম্পন্ন করা হোক। সকল বিভাগে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগসহ শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর ১০ বছর হয়ে গেলেও এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। দ্রুততম সময়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। ওয়েবসাইট ও শিক্ষার্থীদের জন্য ই-সেবা পোর্টাল চালু করতে হবে।
সকল বিভাগে পর্যাপ্ত ল্যাবরেটরি সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক সেকশনে শিক্ষার্থীরা যেন কর্মকর্তা-কর্মচারী দ্বারা কোন প্রকার হয়রানির স্বীকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
এবিষয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সারমিন মনি বলেন, “আমাদের কোন কিছু না জানিয়ে গতকাল রাত ৮টায় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। উনারা এখন আমাদের মুখোমুখি হচ্ছেন না৷ আমরা অনেক টাকা ইনভেস্ট করছি৷ কিন্তু আমাদের ভার্সিটি কর্তৃপক্ষ কোন সদুত্তর দিচ্ছেন না৷ তালা দিয়ে রেখেছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি৷
ঢাকা/রেজাউল/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ র ম ন ইউন ভ র স ট আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট: ‘মৃত’ নন জীবিত এমন ১৫ জনকে হাজির করলে ব্যবস্থা
বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ চিহ্নিত ১৫ জন জীবিতকে হাজির করাতে পারলে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ব্যবস্থা নেবেন। বিহারের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মামলাকারীদের আইনজীবীদের এ আশ্বাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচী এ আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া দেওয়া হলে তাঁরা অবশ্যই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আবেদনকারীদের উদ্দেশে দুই বিচারপতি বলেছেন, প্রক্রিয়ায় অনিয়ম বা ত্রুটি পাওয়া গেলে অবশ্যই তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।
মামলাকারীদের আবেদন মেনে সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য খসড়া ভোটার তালিকা পেশ করার ওপর স্থগিতাদেশ দেননি। তবে ইসিকে তাঁরা বলেছেন, তাদের কাজ গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া নয়। তাদের দেখা উচিত যাতে গণহারে ভোটারদের তালিকাভুক্ত করা যায়।
এসআইআর–প্রক্রিয়া অনুযায়ী ভোটার তালিকা সংশোধনের পর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে ১ আগস্ট। সে লক্ষ্যেই ইসি এগিয়ে চলেছে। ইসি সূত্রে খবর, নিবিড় সংশোধনপ্রক্রিয়ার পর প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে ৬৫ লাখেরও বেশি নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২২ জন ‘মৃত’, ৩৬ লাখ ‘নিখোঁজ’। এ ছাড়া বেশ কয়েক লাখ ভোটারের নাম বিভিন্ন এলাকার তালিকায় রয়েছে। অর্থাৎ একই ভোটার অন্তত দুই জায়গায় নথিভুক্ত। আগের তালিকা অনুযায়ী বিহারে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৮৯ লাখ। ইসির দাবি, এই তালিকায় বহু ভোটার ভুয়া। তাদের বাদ দিতেই এই নিবিড় সংশোধন।
যে প্রক্রিয়ায় এই খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, মামলাকারীদের আপত্তি তা নিয়েই। তাঁদের অভিযোগ, ইসি যেভাবে নাগরিকত্বের যাচাই করছে, সে জন্য যেসব নথি পেশ করতে বলা হচ্ছে, তা বহু ক্ষেত্রে সম্ভবপর নয়। তেমন করা তাদের কাজও নয়। সেই কাজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে বহু দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের ভোটাধিকার ইসি কেড়ে নিচ্ছে।
গত সোমবার ও মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়। মঙ্গলবারের শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে আশ্বস্ত করে বিচারপতিরা বলেন, কমিশনের ত্রুটি–বিচ্যুতি দেখলে তাঁরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। ভোটার প্রমাণে আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডকে নথি হিসেবে গ্রাহ্য করার সুপারিশ বিচারপতিরা জোরের সঙ্গে করেছেন। এই দুই নথি জাল করা সহজ বলে ইসির দাবি নস্যাৎ করে বিচারপতিরা বলেছেন, যে ১১টি নথির ওপর নির্ভর করে তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সেগুলোর প্রতিটিই জাল করা সম্ভব। কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে বিচারপতিরা বলেন, খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ অথচ আসলে জীবিত, এমন ১৫ জনকে আপনারা হাজির করুন। আমরা ব্যবস্থা নেব।
আগামী ১২ ও ১৩ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে ৮ আগস্টের মধ্যে মামলাকারীদের বক্তব্য লিখিতভাবে আদালতে পেশ করতে হবে।