‘২১ দিন পরবাসী হলি অন্তত ছয় মাস নিশ্চিন্তে ভাত খাতি পারি’
Published: 16th, May 2025 GMT
চারদিকেই দুপুরের কাঠফাটা রোদ। ভরা গ্রীষ্মের এই তপ্ত রোদ মেখে ইঞ্জিনচালিত নৌকা থেকে একে একে নামছেন কয়েকজন। তাঁদের মাথায় ধানের বস্তা আর চিবুক বেয়ে গড়ানোর অপেক্ষায় কয়েক ফোঁটা ঘাম। দুই হাতে বস্তা আঁকড়ে ধরায় ঘাম মোছার কোনো সুযোগই পাচ্ছেন না। তবু কারও চোখে–মুখে অস্বস্তির বিন্দুমাত্র রেশ নেই। ধান কাটা শেষে নিজেদের ভাগের ধান নিয়ে নিজ এলাকায় ফিরছে ৪২ জন শ্রমিকের দলটি। আজ তাঁদের আনন্দের দিন।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে দলটির সঙ্গে দেখা হয় খুলনার কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর এলাকার শিবসা নদীর তীরে। শ্রমিকেরা জানান, জীবিকার সন্ধানে বোরো ধান কাটতে তাঁরা গোপালগঞ্জে গিয়েছিলেন। সেখানে কাজ শেষে নিজেদের মজুরি হিসেবে ভাগে পাওয়া ধান নিয়ে তাঁরা আবার এলাকায় পরিবারের কাছে ফিরেছেন।
ধানের বস্তাগুলো নৌকা থেকে নামিয়ে নদীর বেড়িবাঁধের ওপর স্তূপ করে রাখছিলেন শ্রমিকেরা। এ সুযোগে কোমরে বাঁধা গামছা দিয়ে ঘাম মুছে নিলেন আল-আমীন নামের এক শ্রমিক। তিনি বললেন, ‘২১ দিন আগে ধান কাটার শ্রমিক হিসেবে বাড়ি ছাইড়ে পরবাসী হইছিলাম। আজ সবাই ভাগের ধান নিয়ে ফিইরা আইছি। আমার নিজের ভাগে হইছে ১৮ মণ ধান। প্রতিবছর এই রকম ২১ দিন পরবাসী হলি অন্তত ছয় মাস নিশ্চিন্তে ভাত খাতি পারি।’
গত বৃহস্পতিবার ও গতকাল কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এমন অনেক পরবাসী শ্রমিক দলকে ধান নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় ফিরতে দেখা গেছে। কোনো দল ফিরেছে বস্তাবোঝাই ট্রাক নিয়ে, আবার কেউ ফিরেছেন নদীপথে ইঞ্জিনচালিত নৌকায়। তাঁদের প্রত্যেকের রোদে পোড়া চোখে-মুখে খেলছিল আনন্দের ঝিলিক।
কয়রা নদীতীরবর্তী তেলুতলা গ্রামের বেড়িবাঁধে কথা হয় আরেকটি শ্রমিক দলের সঙ্গে। দলটির সরদার কোবাদ মোড়ল বলেন, ‘আমাগের এলাকায় কাজকর্ম নাই, বাধ্য হয়ে তাই বাইরের এলাকায় যাই। গত পাঁচ বছর ধইরে বোরো ধান কাটার মৌসুমে দলবল নিয়ে যাই গোপালগঞ্জের কান্দিবাজার এলাকায়। থাকন-খাওনের ব্যবস্থা করে জমির মালিক। এবার দলে ১২ জন লোক ছিল। টানা ১৭ দিন মাঠে ধান কাইটে একেকজন ১৬ মণ ধান ভাগে পাইছি। সবাই মিলে ধান নিয়ে এলাকা পর্যন্ত আসতি ১৪ হাজার টাকা খরচ হইছে। এখন মনডায় বড্ড খুশি লাগতিছে।’
মাথায় ধানের বস্তা নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো করছেন এক শ্রমিক। পরে এগুলো নিয়ে বাড়ি যাবেন তিনি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দর থানা যুব ফেডারেশনের আহ্বায়ক পলাশ, সদস্য সচিব রিয়াদ
বাংলাদেশ যুব ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে শনিবার (১৬ আগস্ট ২০২৫) জেলা কমিটির উদ্যোগে এক বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আর.এইচ পলাশকে আহ্বায়ক এবং মোঃ রিয়াদ হোসেনকে সদস্য সচিব করে ৩টি পদ শূন্য রেখে ১১ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ যুব ফেডারেশন বন্দর থানা কমিটি গঠন করা হয়।
নবগঠিত কমিটিতে শেখ রাফিয়ানকে যুগ্ম সদস্য সচিব করা হয়েছে। সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন— মোঃ শাওন, শিয়াদ হোসেন, মোঃ জোবায়ের, মোঃ নয়ন ও তানজিল আহম্মেদ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ যুব ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক সাকিব হোসেন হৃদয়।
এছাড়া সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলাম ইফতি, প্রচার সম্পাদক সাকিব হাসান সানি এবং দপ্তর সম্পাদক হারুন অর রশীদ আকাশ।
বর্ধিত সভায় বক্তারা বলেন, যুব সমাজের সংগঠিত শক্তিই দেশকে দুর্নীতি, বৈষম্য ও দমননীতিমুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের প্রধান হাতিয়ার।
বাংলাদেশ যুব ফেডারেশন বন্দর থানা কমিটি এলাকার যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে গণমানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।