গণতান্ত্রিক শক্তি দিয়ে ভারতের দাপট ভাঙতে হবে: জোনায়েদ সাকি
Published: 16th, May 2025 GMT
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ভারত বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশের প্রাণ ও প্রকৃতির ওপর মরুকরণ চাপিয়ে দিয়েছে। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি ঠেকাতে হবে। নদীতে বাঁধ দিয়ে ভারত আধিপত্যবাদী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। গণতান্ত্রিক শক্তি দিয়ে ভারত রাষ্ট্রের এই দাপট ভেঙে ফেলতে হবে।
ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে জোনায়েদ সাকি এ কথা বলেন। গণসংহতি আন্দোলন এই সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ভারতকে আমরা আগেও বলেছি, এ দেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে। বন্ধুত্ব করতে হলে সমতা ও মর্যাদার ভিত্তিতে সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। কারও অধিকার হরণ করে বন্ধুত্ব করা যায় না।’
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, লোকদেখানো ভারতবিরোধিতা দিয়ে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষিত হবে না। দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় ভারতের সঙ্গে যৌথ বিষয়গুলোর সমাধান না হলে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সেগুলো তুলতে হবে।
বর্তমানে ৫৪টি অভিন্ন নদীতে ভারত বাঁধ দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণ করছে অভিযোগ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের পরিবর্তে ফেনী নদী থেকে পানি তুলে নেওয়া হচ্ছে। নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ করে নদীগুলোকে শুকিয়ে মারা হচ্ছে। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক নদী চুক্তি অনুযায়ী সালিসি বিধান ছাড়া যেকোনো চুক্তি হবে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতারণা।
এ সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শক্তির চক্রান্ত মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কোন প্রক্রিয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জনগণ সেটা জানতে চায়।
এ ছাড়া বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে সরকারে প্রতি আহ্বান জানান গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের যথাযথ গণতান্ত্রিক উত্তরণের দায়িত্ব পালন করুন। জনগণের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি হয়, এমন কোনো তৎপরতা চালিয়ে নিজেদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করবেন না।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দীন, সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য বাচ্চু ভুইয়া, দীপক কুমার রায়, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা, সদস্যসচিব মাহবুব, দক্ষিণের আহ্বায়ক আলীফ দেওয়ান, সদস্যসচিব সেলিমুজ্জামান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ভিডিও ভাইরাল: ২১ বছর ধরে কারাবন্দী বারগুতিকে হুমকি দিয়ে এলেন বেন–গভির
ইসরায়েলের কারাগারে গিয়ে সুপরিচিত ফিলিস্তিনি বন্দী মারওয়ান বারগুতিকে হুমকি দিচ্ছেন ইসরায়েলি জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন–গভির। প্রকাশিত একটি ভিডিওতে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
ইসরায়েলি কারাগারের এ ভিডিওতে বেন–গভিরকে বলতে শোনা যায়, ‘ইসরায়েলের বিরোধিতা করলে যে কেউ “ধ্বংস” হয়ে যাবে।’
এ ভিডিওর মধ্য দিয়ে অনেক বছর পর বারগুতিকে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে দেখা গেল। ভিডিওতে তাঁকে বয়সের ভারে ক্ষীণ হয়ে পড়া, সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি পরা একজন ব্যক্তি ও প্রায় অচেনারূপে দেখা যায়।
যে-ই ইসরায়েলের জনগণের সঙ্গে ঝামেলা করবে, আমাদের সন্তানদের হত্যা করবে, আমাদের নারীদের হত্যা করবে, তাঁকে আমরা ধ্বংস করে দেব। আমাদের হারাতে পারবে না।ইতামার বেন–গভির, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রীগত বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ওই ভিডিও। তাতে দেখা যায়, বেন–গভির বারগুতিকে বলছেন, ‘যে–ই ইসরায়েলের জনগণের সঙ্গে ঝামেলা করবে, আমাদের সন্তানদের হত্যা করবে, আমাদের নারীদের হত্যা করবে, তাঁকে আমরা ধ্বংস করে দেব। আমাদের হারাতে পারবে না।’
২০০৪ সাল থেকে কারাগারে আছেন ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারগুতি। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) নিয়ন্ত্রণকারী দল ফাতাহর একজন শীর্ষ নেতা তিনি। ২০০০–২০০৫ সালে ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় ইন্তিফাদায় (গণ–অভ্যুত্থান) নেতৃত্ব দেওয়ায় ও জনগণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে তাঁকে নিশানা করে ইসরায়েল।
মারওয়ানের ছেলে কাসেম বারগুতি মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ভিডিও প্রকাশের পর পরিবার গভীরভাবে তাঁর জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।
কাসেম বলেন, ‘দুই বছর ধরে তাঁকে (মারওয়ান) হুমকি ও আক্রমণের একটি ধারাবাহিকতা চলছে। (গাজায়) যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবার তাঁকে দুই বছর আগে আক্রমণ করা হয় এবং তিনি আহত হন।’
২০০৪ সাল থেকে কারাগারে আছেন ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারগুতি। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) নিয়ন্ত্রণকারী দল ফাতাহর একজন শীর্ষ নেতা তিনি। ২০০০-২০০৫ সালে ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় ইন্তিফাদায় নেতৃত্ব দেওয়ায় ও জনগণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে তাঁকে নিশানা করে ইসরায়েল।মারওয়ান বারগুতির ছেলে আরও বলেন, ‘আজ পরিষ্কার হয়ে গেছে যে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী বেন–গভির, যিনি ইসরায়েলের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নেতৃত্বের প্রতিনিধি, তাঁর জীবনকে সরাসরি হুমকির মুখে ফেলেছেন।’
কাসেমের মতে, ‘স্পষ্টভাবে বলা যায় যে তাঁকে (মারওয়ান) তাঁর সেলের ভেতরে হত্যা করার সরাসরি হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর নির্যাতন করা ও নিশানা বানানো আসলে গাজায় ইসরায়েলের চালানো গণহত্যারই অংশ।’
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, বেন–গভির কারা কমিশনার কোবি ইয়াকোবির সঙ্গে তেল আবিবের গানোট কারাগারে যান। সেখানে ‘বন্দী সন্ত্রাসী’দের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার বিষয়টি কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেন তাঁরা।
কারাগারে মারওয়ান বারগুতিকে বেন–গভিরের হুমকি দেওয়ার একটি দৃশ্য