রাজধানীতে দুই তরুণকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা
Published: 16th, May 2025 GMT
রাজধানীর জিগাতলা ও মোহাম্মদপুরে দুই তরুণকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে এসব ঘটনা ঘটে। জিগাতলার ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিরা বলছেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
জিগাতলায় নিহত সামিউর রহমান ওরফে আলভী (২৭) ধানমন্ডির একটি কলেজের ছাত্র। তিনি হাজারীবাগে বিজিবি ৫ নম্বর ফটক–সংলগ্ন বাসায় ভাড়া থাকতেন। মোহাম্মদপুরে নিহত নুর ইসলাম (২৪) ভাড়ায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবি তুলতেন। তিনি ধানমন্ডির শংকর এলাকার একটি মেসে থাকতেন।
হাজারীবাগ থানা–পুলিশ বলছে, জিগাতলায় আড্ডা দেওয়ার সময় সামিউর ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের ওপর ছুরি নিয়ে হামলা চালায় একটি পক্ষ। এতে সামিউর নিহত হন। আহত হন তাঁর সঙ্গে থাকা চারজন। তাঁরা হলেন ইসমাইল হোসেন, জাকারিয়া, আশরাফুল ও দৃশ্য। তাঁদের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছর। প্রত্যেকের শরীরে সামান্য আঘাতের চিহ্ন আছে। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ইসমাইল দাবি করেন, তিনি মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং করেন। আহত অন্যরা বিভিন্ন কলেজে পড়েন। তিনি দাবি করেন, সামিউরসহ বন্ধুরা জিগাতলায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই কিশোর গ্যাংয়ের ৪০ থেকে ৫০ জন সদস্য ছুরি নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালায়। তবে কী কারণে হামলা চালিয়েছে তা জানেন না বলে তাঁরা জানান।
সামিউরের বন্ধু তানভীর হাসান রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম আলোকে বলেন, লোকমুখে তিনি জানতে পারেন, জিগাতলায় সামিউর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে পাশের জাপান–বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো.
খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন সামিউরের স্বজনেরা। তাঁরা বলেন, কারা কেন সামিউরকে খুন করেছেন, তা তাঁরা জানেন না। সামিউরের এক স্বজন বলেন, বিকেলে সামিউরের জিগাতলায় ফুফুর বাসায় যাওয়ার কথা ছিল।
হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জিগাতলায় সামিউর তাঁর সহযোগীদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় সামিউরের প্রতিদ্বন্দ্বী একটি পক্ষ ধারালো অস্ত্র ও ছুরি নিয়ে হামলা চালায়। একপর্যায়ে সামিউর তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের হামলায় সামিউর নিহত ও তাঁর চার সহযোগী আহত হন।
এদিকে মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদ পুলপাড় থেকে একজন রিকশাচালক রক্তাক্ত অবস্থায় আলোকচিত্রী নুর ইসলামকে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে স্বজনেরা রাত সাড়ে নয়টার দিকে স্বজনেরা এসে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর ঘাড়ের বাঁ পাশে, কানের নিচে ও হাতে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নুর ইসলামের বড় ভাই ওসমান গনি প্রথম আলোকে বলেন, নুর ইসলাম ও তিনি ধানমন্ডির শংকর এলাকার একটি মেসে থাকেন। তার ভাই ভাড়ায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছবি তুলতেন। ঘটনার পর তাঁর ভাইয়ের কাছ থাকা দুটি ক্যামেরা পাওয়া যায়নি। হত্যাকাণ্ডের কারণ নিয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়ার সুমনকাঠি গ্রামে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থল তাঁর থানা এলাকায় নয়, এটি হাজারীবাগ থানার অধীন। পরে যোগাযোগ করা হলে হাজারীবাগ থানার ওসি বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র প রথম আল ক ন র ইসল ম স বজন
এছাড়াও পড়ুন:
‘ইমোশনালি ম্যাচিউর’ বাবা মায়েরা শিশুর সঙ্গে যে পাঁচ আচরণ করেন
মা-বাবারা তাদের সন্তানকে শর্তহীনভাবে ভালোবাসবেন এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু সন্তান যাতে আত্মনির্ভশীল, আত্মপ্রত্যায়ী হয়ে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্য সন্তানের ‘ইমোশনালি ম্যাচিউর’ আচরণ করার পরামর্শ দেন মনোবিদরা। ফারজানা পিয়াস, মেন্টাল হেলথ প্রফেশনাল, এইচ এস লন্ডন- একটি পডকাস্টে বাবা মায়েদের ‘ইমোশনালি ম্যাচিউর’ আচরণের পাঁচটি দিক উল্লেখ করেছেন। বাবা, মায়েরা একবার মিলিয়ে দেখুনতো আপনি কি ঠিক এই পাঁচটি দিক মেনে চলছেন কি না!
নিজের ভুল স্বীকার করে শিশুকে দুঃখিত বলা: ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা নিজের ভুল স্বীকারে করেন। এবং যে ভুলটি হয়েছে সেটি ফিক্সড করার চেষ্টা করেন। এখান থেকে শিমুর বুঝতে পারে, যে কারও ভুল হতে পারে। ভুল করাটা একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব নির্ধারণ করে না। কিন্তু ভুলটাকে আমরা কীভাবে রিটায়ার করছি বা ফিক্স করছি; এটা ব্যক্তিত্ব নির্ধারণ করে।
শিশুর সক্ষমতা অনুযায়ী দায়িত্ব নিতে শেখানো: ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা শিশুর নিজের রেসপনসিবিলিটি নিতে শেখান। শিশুর নিজের কাজ নিজে করতে গাইড করেন, এনকারেজ করেন। ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা শিশুর কাজগুলো সব সময় নিজেরা করে দেন না। এতে করে শিশু নিজে নিজের কাজগুলো অল্প অল্প করে করা শেখে এবং অল্প অল্প করে করা শেখে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করা শেখে।
আরো পড়ুন:
বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের ‘রিকশা গাউন’
আজ মা দিবস
বাউন্ডারি সেট করেন এবং বাউন্ডারি মেনে চলা: ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা শিশুর জন্য বাউন্ডারি সেট করে দেন। শিশু যদি সেটা মেনে না চলে তাহলেও তার জন্য একটি মেসেজ দেন। যেমন—শিশুর ট্যাবলেট দিলেন এবং একটি টাইম সেট করে দিলেন। কিন্তু শিশু বেশি সময় ব্যায় করলো এবং আরও কিছু সময় ট্যাবলেট পাওয়ার জন্য চিৎকার চেঁচামেচি করলো। তাহলে ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা শিশুর কাছ থেকে ট্যাবলেটটি নিয়ে এই মেজেসটা দিতে পারেন, তুমি ট্যাবলেটটা তখনই পাবে, যখন তুমি এটা আর ছুঁড়ে ফেলবে না।
শিশুকে শর্তহীনভাবে ভালোবাসা: প্রত্যেক বাবা-মা তাদের সন্তানদেরকে অনেক ভালোবাসেন। কিন্তু ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা শিশুকে শর্তহীন ভালোবাসেন।
শিশুর অর্জনকে নয়, চেষ্টাকে উদযাপন করা: ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা শিশুর হার্ড ওয়ার্ককে নয়, চেষ্টাকে সেলিব্রেট করেন। এতে শিশু তার কাজকে এগিয়ে নেওয়ার দিকে মনোযোগী হয়। বাস্তবতা মেনে নেওয়া ওই শিশুর পরবর্তী জীবনেও সহজ হয়ে যায়।
ঢাকা/লিপি