সংস্কার শুধু সাংবিধানিক জায়গায় আটকে আছে: হোসেন জিল্লুর রহমান
Published: 17th, May 2025 GMT
ত্বত্তাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সংস্কার টপ প্রায়োরিটি হওয়া দরকার। সংস্কার আলোচনা শুধু সাংবিধানিক জায়গায় আটকে আছে। জনগণের প্রাত্যহিক জীবন নির্বিঘ্ন করার বিষয়গুলো বিশেষত পুলিশ কমিশনের রিপোর্ট এক পাশে ফেলে দেওয়া আছে, জনপ্রশাসন রিপোর্টটাও একই।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে 'গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সিভিল মিলিটারি সম্পর্ক' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘ইউনিটি ফর বাংলাদেশ' সংগঠনের আয়োজনে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবির, লেখক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সংস্কার টপ প্রায়োরিটি হওয়া দরকার। এটার পলিটিক্যাল ব্যবহারের কোনো যৌক্তিকতা নেই। কক্সবাজার একজন কাউন্সিলরকে মেরে ফেলছে, অন ক্যামেরায় পাওয়া যাচ্ছে। ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির রিপোর্ট হবে ইন্টেলিজেন্ট কিন্তু অনেক রিপোর্ট শুধুমাত্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ইন্টেলিজেন্ট নয়। কাজে এটা সংস্কার হতে হবে। আমার মনে হয়, সংস্কার আর্মির নেতৃত্বেও এটি হতে পারে। এটা অবশ্যই হতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। এটা রাষ্ট্রের জন্য জরুরি। সক্ষম রাষ্ট্রের জন্য চারটি বিষয় জরুরি। সার্বভৌমত্ব বলতে আমরা বুঝি জিওগ্রাফিক, এটার অন্যতম হলো নীতি সার্বভৌমত্ব। স্বৈরাচারের সময় দেখেছি নীতি নেওয়া হচ্ছে, তবে সার্বভৌমভাবে নেওয়া হচ্ছে না। পলিটিক্যাল সার্বভৌমত্ব আছে তবে ভেতরে অন্তঃসারশূন্য।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামোর প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করতে হবে। সিভিল মিলিটারি সম্পর্ক তার একটি অংশ। রিফর্ম নিয়ে একধরনের সাংবিধানিক বিষয়গুলোর আলোচনাই প্রাধান্য পাচ্ছে। কিন্তু জনগণের প্রাত্যহিক জীবনের বিশেষ করে পুলিশ কমিশনের রিপোর্ট পাশে ফেলে দেওয়া আছে। রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনায় রিপোর্টটাই নাই। প্রশাসন সংস্কারের রিপোর্টটাই একইভাবে পড়ে আছে।
সাংবিধানিক বিষয় গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্ষমতার ভারসাম্য জরুরি মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নতি, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের প্রয়োজন যদি মেটানো না যায়, আইনশৃংখলা/নিরাপত্তার বিষয়গুলো যদি মেটানো না যায়, তাহলে আজাদী মিথ্যা হয়ে উঠতে পারে এমন মনে হবে। এদিকে নজর দেওয়া দরকার।
নূরুল কবির বলেন, ‘সামরিক বাহিনীকে রাজনীতিকরণ করা ঠিক না' এটা হচ্ছে সবচেয়ে বেঠিক কথা। সেনাবাহিনী যদি রাজনীতি না বুঝে তাহলে তারা দেশের ক্রান্তিলগ্নে সিভিলিয়ানদের সাথে একযোগে কাজ করতে পারবে না। আপনারা রাজনীতিকরণ ও দলীয়করণকে এক করে মিলাবেন না।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য একটি ভালো সেনাবাহিনী দরকার কিন্তু সেনাশাসন দরকার নেই। সিভিল এবং মিলিটারি সম্পর্ক একটি বাইনারি অপজিশন। সেনাপ্রধান যখন এরশাদকে বলে মিলিটারি আর আপনার সঙ্গে নেই, তখনই এরশাদ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়। আবার গত ৩ আগস্ট যখন বর্তমান সেনাপ্রধান জুনিয়র অফিসারদের দাবির মুখে হাসিনাকে সেনাবাহিনীর অপারগতার কথা জানিয়ে দেন, তখনই হাসিনার পতন তরান্বিত হয়। ২০১৪ সাল নির্বাচন পরবর্তী সময়েই যদি বাংলাদেশের সেনাবাহিনী অসন্তোষ প্রকাশ করতো, তাহলে জুলাইয়ে দেড় হাজার মানুষের প্রাণ দেওয়া লাগতো না।
সৈয়দ নিজার আলম বলেন, মিলিটারি সম্পর্কে একটি বাইনারি আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ এ সম্পর্ক দ্বান্দ্বিক হওয়ার কথা না। কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক থেকে শুরু করে মিলিটারি সবাই আমরা রাষ্ট্রের রাষ্ট্রজন। তাই সবাইকে এক কাতারে থেকে দেশের সেবা প্রদান করতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হ স ন জ ল ল র রহম ন ইন ট ল জ ন র জন ত দরক র
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়াকে কারাগারে ফুড পয়জনে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল: পিন্টু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু বলেছেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন কারাবন্দি অবস্থায় ছিলেন। তিনি কারাগারের অভ্যন্তরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়েছেন। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়নি। ডাক্তাররা বার বার তাকে বিদেশ পাঠানোর চেষ্টা করেছেন উন্নত চিকিৎসার জন্য কিন্তু দেশের বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। কারাগারে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে ফুড পয়জনে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। কিন্তু কোন ষড়যন্ত্র কাজ হয়নি। মহান আল্লাহ তাআলা এখনো উনাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।”
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে উপজেলা ও পৌর বিএনপি আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুস সালাম পিন্টু বলেন, “আমাদের নেত্রীকে তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিদেশ যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু নেত্রী বলেছিলেন, এই দেশ ছাড়া অন্য কোন জায়গায় আমাদের ঠিকানা নেই। তিনি দেশেই ছিলেন। শেখ হাসিনা তখন বিদেশে গিয়ে ষড়যন্ত্রের পর ষড়যন্ত্র করেছেন। দেশে ফিরে সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত করে ক্ষমতায় বসেছিলেন। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অন্যের কাছে তুলে দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। কিন্তু আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়া স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও জনগণের ইজ্জত অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়ে ক্ষমতা চাননি।”
তিনি আরও বলেন, “এই ১৭ বছর আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা ও দেশ নায়ক তারেক রহমান সংগ্রাম করেছেন এদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য, বিদেশি আগ্রাসন থেকে রক্ষা করার জন্য, এই দেশের মুসলমানদের মান ইজ্জত সম্মান প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। আজ সেই কাজের ফসল হিসেবে আমরা মুক্তি লাভ করেছি।”
সমাবেশে ভূঞাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান গিয়াসসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
ঢাকা/কাওছার/এস