মানবিক করিডোর, চট্টগ্রাম বন্দর লিজ দেওয়াসহ সাম্রাজ্যবাদের রাজনৈতিক স্বার্থরক্ষার নানা ধরনের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে দেশের বামপন্থি জোট ও দলগুলো। এই আন্দোলনে সম্রাজ্যবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তি এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশা ও জনগণকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। 

শনিবার রাজধানীর তোপখানা রোডে বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সময় মানবিক করিডোর, চট্টগ্রামে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া ও ইপিজেডে সমরাস্ত্রের যন্ত্রাংশ তৈরির উদ্যোগ এবং স্টার লিঙ্ক চুক্তি বাতিলের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়। 

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ইকবাল কবির জাহিদের সভাপতিত্বে সভায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষে রুহিন হোসেন প্রিন্স, বজলুর রশীদ ফিরোজ, মোশরেফা মিশু, মাসুদ রানা, অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, মিহির ঘোষ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার পক্ষে এর সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন আহম্মদ নাসু, শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, হারুনার রশিদ ভূঁইয়া, মাসুদ খান, শহিদুল ইসলাম, মনজুর আলম মিঠু প্রমুখ সভায় যোগ দেন। 

নেতারা বলেন, সরকার মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থরক্ষায় আমাদের দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী নানা ধরনের পরিকল্পনা নিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ড র

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ