রবীন্দ্রনাথ-নজরুল আমাদের ঐতিহ্য ও সংগ্রামের প্রতীক
Published: 18th, May 2025 GMT
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম স্মরণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পরীবাগে সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে এ আয়োজন করে শব্দকুঠি সাহিত্য অঙ্গন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শব্দকুঠির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রেজাউদ্দিন স্টালিন। প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শব্দকুঠি সাহিত্য অঙ্গনের প্রধান সম্পাদক রোকসানা রহমান ও সহসভাপতি আতিয়ার রহমান। আলোচক ছিলেন শাহীন রেজা, অধ্যাপক হরষিত বালা, অধ্যাপক রাশেদ চৌধুরী ও আশফাকুজ্জামান।
রেজাউদ্দিন স্টালিন বলেন, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল দু’জনই আমাদের চেতনার বাতিঘর। এই বিপর্যস্ত পৃথিবীতে রবীন্দ্রনাথের কল্যাণচিন্তা ও নজরুলের প্রতিবাদ– দুটোই আমাদের অনুপ্রাণিত করে। তারা আমাদের ঐতিহ্য ও সংগ্রামের প্রতীক।
আবু সাঈদ খান বলেন, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল অনেক সময় একসঙ্গে উচ্চারিত হয়। দু’জন দুই ভুবনের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে বয়সের দূরত্ব ছিল। তবে দু’জনের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ ও ভাববিনিময় হয়েছে। একজন আরেকজনকে কাছে টেনেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনজনকে দিকপাল বলা হয়– রাজা রামমোহন রায়, বঙ্কিমচন্দ্র ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। রবীন্দ্রনাথ ইংরেজ ও হিন্দুত্ববাদের ভুবন থেকে বেরিয়ে এসে একটা সম্প্রীতির ভুবন তৈরির চেষ্টা করেছেন। রবীন্দ্রনাথ সমন্বয়বাদী কবি হিসেবে চিহ্নিত। রবীন্দ্রনাথ যেখানে সবাইকে আলিঙ্গন করতে চেয়েছেন, নজরুল বিদ্রোহ করেছেন। রবীন্দ্রনাথের আলিঙ্গন ও সম্প্রীতির বন্ধনের সঙ্গে নজরুলের বিদ্রোহের কোনো বিরোধ নেই। বরং সেটা এক রেখায় মিলিত ছিল এবং যে কারণে নজরুলকে তিনি কাছেও টেনেছেন।
আবু সাঈদ খান বলেন, নজরুল ও রবীন্দ্রনাথের মধ্যে মিলের জায়গা হচ্ছে দু’জনই অসাম্প্রদায়িক। দু’জনেই মানবতার চর্চা করেছেন। জাতীয় জাগরণে দু’জনেরই ভূমিকা রয়েছে এবং তাদের কাছে আমরা ঋণী।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক জ নজর ল ইসল ম আম দ র নজর ল
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।