কুষ্টিয়া সীমান্তে সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
Published: 18th, May 2025 GMT
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত এলাকা থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ হত্যা মামলার এক সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে বিজিবি। শনিবার (১৭ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিজিবি-৪৭ ব্যাটালিয়ন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার রাত ১টার দিকে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চকরাজাপুর ঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম নাহারুল মৃধা (৫৮)। তিনি উপজেলার ফিলিপনগর গ্রামের মৃত জানবান মৃধার ছেলে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০২২ সালে দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় নাহারুলকে ৩০ বছরের সাজা দেওয়া হয়। কিন্তু, রায় ঘোষণার আগেই ভারতে পালিয়ে যান তিনি। প্রায় ৪ মাস আগে গোপনে দেশে আসেন। শুক্রবার সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে বিজিবি। এসময় তার কাছ থেকে দেশে তৈরি একটি পাইপগান, একটি মোটরসাইকেল ও মোবাইলফোন জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মালামালের আনুমানিক মূল্য ১ লাখ ৩১ হাজার টাকা।
আরো পড়ুন:
নড়াইলে হত্যা মামলায় বিএনপি নেতাসহ আসামি ৩৬, গ্রেপ্তার ২
আন্দোলনকারীদের উপর হামলা ও হত্যার ৩ আসামি গ্রেপ্তার
বিজিবি-৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, ‘‘গ্রেপ্তার আসামিকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র, মোটরসাইকেল, মোবাইলসহ দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’’
ঢাকা/কাঞ্চন/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনীতির আলাপে ভূমিহীন ও প্রান্তিক মানুষের কথা নেই
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন আন্দোলন–সংগ্রামে শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের বড় ভূমিকা রয়েছে। অথচ এখন তারা অনেকটাই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে। রাজনীতির আলাপে ভূমিহীন ও প্রান্তিক মানুষের কথা নেই। ভূমিহীন কৃষক ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নিয়ে সরকারের উদ্যোগ কম। বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলন ও রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলন আয়োজিত ‘ভূমিহীন কৃষক সমাবেশে’ বিশিষ্টজনদের বক্তব্যে এসব বিষয় উঠে এসেছে।
আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম। তিনি বলেন, দেশের মেহনতি মানুষের টাকায় সরকার চলে। কিন্তু ভূমিহীন, প্রান্তিক মানুষের কথা সরকার আলাপ করে না।
সমাবেশে হাসনাত কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশ যে কৃষকের দেশ, এ কথা অন্য সরকারের মতো বেমালুম চেপে গিয়ে এই জনগোষ্ঠীকে রাজনীতির আলাপ থেকে বের করে দিয়েছে। এই রাষ্ট্র সংস্কার করতে হলে কৃষক–শ্রমিকদের পক্ষে আইনকানুন করতে হবে। অবিলম্বে কৃষি সংস্কার কমিশন করার আহ্বান জানান তিনি।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ভূমি অফিসে, কৃষি অফিসে আগে সরকারি দলের কারও সুপারিশ ছাড়া, ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হতো না। সবাই পরিবর্তন আশা করেছিল। সুপারিশ ছাড়া ন্যায্য দাবি পূরণ হবে। কিন্তু নতুন সুপারিশওয়ালা তৈরি হয়েছে, নতুন লেনদেনের ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, যেটা গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে যায় না।
ভূমি সংস্কার ছাড়া কোনো সত্যিকার পরিবর্তন হয় না উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, অনেক কমিশন হয়েছে, আবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ কমিশন হয়নি। ভূমি কমিশন, শিক্ষা কমিশন হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর তো (পরিচালনার দায়িত্ব) যে কেউ দিতে পারে, ওইটা জরুরি না। জরুরি হলো ভূমিহীনদের অধিকার নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া, এটা সবাই করতে পারে না।
সমাবেশে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, যারা বঞ্চিত, যারা শোষিত শ্রেণি, তারা এক কাতারে দাঁড়ালে ওই কোটিপতি শ্রেণিরা আরাম–আয়েশের জীবন কাটাতে পারবে না। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘আমি ১৮ কোটি মানুষকে খাওয়াই’ এই বক্তব্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি হচ্ছে দেশের মানুষকে শোষণ করার, অন্ধকারে রাখার রাজনীতি।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, একদিকে টাকাওয়ালা ভূমিদস্যুর সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। কৃষক জমি হারাচ্ছে, দখলদারেরা দখল করছে। তিনি বলেন, যখন ফ্যাসিস্টকে সরানোর দরকার হয়, স্বৈরশাসন থেকে বাঁচার দরকার হয়, লাঠি, গুলি, কাঁদানে গ্যাস থেকে বাঁচার দরকার হয়, তখন এই কৃষক–শ্রমিকেরাই রাজপথে নেমে আসেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসিরউদ্দিন, গণমুক্তি মঞ্চের আহ্বায়ক সাকিব প্রত্যয়, ব্রহ্মপুত্র সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া প্রমুখ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতি লিটন কবিরাজ, সঞ্চালক ছিলেন একই সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছামিউল আলম।