চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে আটকের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রোববার সকালে থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে নেওয়া হয় মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে। আগামীকাল সোমবার তাকে আদালতে তোলা হবে বলে ডিবি সূত্রে জানা গেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান রোববার বিকেলে সমকালকে বলেন, গ্রেপ্তার অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে রাজধানীর ভাটারা থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে। এ কারণে বিদেশে যাওয়ার সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সোমবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে।

পুলিশ সূত্র জানায়, নুসরাত ফারিয়াসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে গত এপ্রিলে আদালতে মামলার আবেদন করেন ভুক্তভোগী এনামুল হক। পরে আদালতের নির্দেশে ভাটারা থানায় হত্যাচেষ্টা মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। ওই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারসংশ্লিষ্ট মোট ২৮৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩০০-৪০০ জনকে আসামির তালিকায় রাখা হয়েছে। এজাহারে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে কাজ করেন নুসরাত ফারিয়া।

ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন হক বলেন, ইমিগ্রেশন পুলিশ সকাল ১১টার দিকে বিমানবন্দরে নুসরাত ফারিয়াকে আটকের তথ্য জানায়। এরপর থানা পুলিশ বিমানবন্দরে গিয়ে তাকে হেফাজতে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদের সুবিধার্থে তাকে থানায় না রেখে ডিবি কার্যালয়ে পাঠানো হয়। তবে থানা পুলিশই মামলাটির তদন্ত করছে।

২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় ‘আশিকী’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে নায়িকা হিসেবে অভিষেক হয় নুসরাতের। এক দশকের পথচলায় তিনি জনপ্রিয় বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-সংলগ্ন মিরপুর সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে এই চিত্র দেখা যায়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

দুপুরের দিকে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছেন র‍্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। তাঁরা শক্ত অবস্থানে আছেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরের দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকাভেটর দেখা যায়।

পরে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে।

কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের অন্তত এক সদস্য আহত হন।

আরও পড়ুনএক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ৪ ঘণ্টা আগে

পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আবার ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।

বিক্ষোভকারীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা এবং তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুনরায়কে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন৫ ঘণ্টা আগে

বিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সরে না যাওয়ায়, বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে আসার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোমতে কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেব না।’

গত ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৩২ নম্বরের বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ