আস্থা সংকটে বিনিয়োগ কমছে শেয়ারবাজারে। গত ছয় কর্মদিবসের প্রতিদিনই দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তিনশ কোটি টাকারও কম মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এ সময় গড়ে ২৮৯ কোটি টাকার কম কেনাবেচা হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির পর গত পাঁচ বছরে এমন অবস্থা দেখা যায়নি।

বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, লাগাতার দর পতনের কারণে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে আসা ছেড়ে দিয়েছেন। ব্রোকারেজ হাউসের ফ্লোর শূন্য পড়ে আছে। শেয়ারদর তলানিতে নামলেও নতুন করে বিনিয়োগকারী আসছেন না। জুলাই অভ্যুত্থানের পর প্রথম কিছু দিন বড় অঙ্কের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। কিন্তু দর পতন শুরু হলে ক্রমাগত লেনদেনও কমছে। 
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ধস নামার পর গত ১৪ বছরের বেশি সময়ে ৪৭২ দিন  ঢাকার শেয়ারবাজারের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে ৩০০ কোটি টাকার নিচে। এর মধ্যে ৩৪৬ দিন  ছিল ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে। গত পাঁচ বছরে ৭০ দিন ৩০০ কোটি টাকার নিচে শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যার ৩৩টি ছিল ২০২০ সালে। এ ছাড়া ২০২১ সালের ১ দিন, ২০২২ সালের ৬ দিন, ২০২৩ সালের ১৪ দিন এবং  ২০২৪ সালে ৯ কর্মদিবসে এমন কেনাবেচা হয়। ২০২৫ সালের গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সাত দিন ডিএসইতে ৩০০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। টানা গত ছয় কর্মদিবসের বাইরে গত ২৯ এপ্রিলের লেনদেন ছিল ৩০০ কোটি টাকার কম।

বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা এবং লেনদেন কমার কারণ জানতে চাইলে প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সমকালকে বলেন, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা কাজ করছে। তাদের সামনে এমন কিছু নেই, যে কারণে আশাবাদী হয়ে নতুন করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তিনি বলেন, দেশের শেয়ারবাজার মূলত ব্যক্তি বিনিয়োগনির্ভর। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ নেই। বাজারের এমন অবস্থায় বড় বিনিয়োগ সক্ষমতা আছে, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানই বিনিয়োগ করছে না। এর কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক ক্ষেত্রের অনিশ্চয়তা এবং ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ স্থবিরতা।
ব্যক্তি শ্রেণির বড় কিছু বিনিয়োগকারী রয়েছেন, যারা অর্থনীতি যখন নিস্তেজ থাকে, তখন অর্থ শেয়ারে লগ্নি করে থাকেন। তারা এখন কেন বিনিয়োগে আসছেন না। এর কারণ ব্যাখ্যায় মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ব্যাংক সুদের হার বড় ইস্যু। যখনই ব্যাংকের সুদের হার বেড়েছে, তখনই শেয়ারবাজার কিছুটা নিম্নমুখী হয়েছে। ফলে যাদের বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করার সক্ষমতা আছে, তারা হয়তো সুদের হার কমার জন্য অপেক্ষা করছেন।
এদিকে গতকাল দিনভর শেয়ারদর ওঠানামায় বেশ অস্থিরতা লক্ষ্য করা গেছে। বেশির ভাগ শেয়ারের দরবৃদ্ধি দিয়ে দিনের লেনদেন শুরু হলেও পৌনে এক ঘণ্টা পরই নিম্নমুখী ধারায় চলে যায়। অবশ্য শেষ ঘণ্টার দরবৃদ্ধি ১৮ পয়েন্ট বৃদ্ধি নিয়ে ৪৭৯৫ পয়েন্টে থামে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র শ য় রব জ র ৩০০ ক ট ল নদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

হার্ভার্ডের ৬ কোটি ডলারের সরকারি অনুদান বাতিল

ইহুদি শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ ও জাতিগত হয়রানির অভিযোগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ছয় কোটি ডলারের ফেডারেল অনুদান বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা মন্ত্রণালয় (এইচএইচএস)। সোমবার এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি বলেছে, ইহুদিবিদ্বেষ এবং জাতিগত বৈষম্য মোকাবিলায় হার্ভার্ডের অব্যাহত ব্যর্থতার কারণে বহু বছরের এই বহুমুখী অনুদান বাতিল করছে এইচএইচএস।

রয়টার্স লিখেছে, গত কয়েক সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের ফেডারেল অনুদান ও চুক্তি জব্দ বা বাতিল করেছে। হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, তারা শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়ায় জাতিগত পরিচয়কে প্রাধান্য দেওয়া চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ইহুদি শিক্ষার্থীদের বৈষম্যের শিকার হতে দিচ্ছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে রয়টার্সের জানানো মন্তব্যের অনুরোধে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

এর আগে এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি বলেছিল, স্থগিত বা বাতিল হওয়া অনুদানগুলো ‘নিজেদের পক্ষে পুরোপুরি বহন করা সম্ভব নয়’; আর তাই গবেষকদের জন্য বিকল্প তহবিলের ব্যবস্থা করতে কাজ করছে তারা। বিশ্ববিদ্যালয়টি ট্রাম্প প্রশাসনের অনুদান বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, হার্ভার্ডের পাশাপাশি নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ও কথিত ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগে ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্যস্থলে পরিণত রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও আদর্শিক অবস্থানের অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা তহবিল ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাঁর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ‘চরম বামপন্থি, মার্ক্সবাদী ও মার্কিনবিরোধী’ চিন্তাধারায় প্রভাবিত হয়ে পড়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ