জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচার শনাক্ত
Published: 10th, July 2025 GMT
চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে নয় ব্যক্তি শহীদ হন। এ ঘটনা নিয়ে ছড়ানো বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার শনাক্ত করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেদের (পিআইবি) ফ্যাক্টচেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম ‘বাংলাফ্যাক্ট’।
বাংলাফ্যাক্ট অনুসন্ধান টিম জানিয়েছে, ২০২৪ এর গণজুলাই অভ্যুত্থানের সময় শহীদ ৯ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা হত্যা করেছে-এমন একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই দাবি বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন। ঘটনায় জামায়াতের সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়া একটি কোলাজ ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বাংলাফ্যাক্ট জানায়, ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে ২০২৪ সালের ১৩ অক্টোবর প্রকাশিত দৈনিক সমকালের এক প্রতিবেদনে ব্যবহার করা ছবির সঙ্গে। প্রতিবেদনে জানানো হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলায় ৯ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী শহীদ হন। তারা হলেন-রিয়া গোপ, দীপ্ত দে, হৃদয় চন্দ্র তরুয়া, রিপন চন্দ্র শীল, রথিন বিশ্বাস, রুদ্র সেন, শুভ শীল, তনয় চন্দ্র দাস ও সৈকত চন্দ্র দে।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হলে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে
ভারতে যুবককে কুপিয়ে রক্তাক্ত করার ভিডিও বাংলাদেশের বলে অপপ্রচার: বাংলাফ্যাক্ট
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, দুর্গাপূজার সময় শহীদদের পরিবার তাদের প্রিয়জনদের অনুপস্থিতি গভীরভাবে অনুভব করেন।
তাছাড়া, অন্যান্য গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো বিশ্বস্ত সূত্রেও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হিন্দুদের হত্যার ঘটনায় জামায়াতের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বাংলাফ্যাক্ট দেশে চলমান গুজব, ভুয়া খবর ও অপতথ্য রোধে কাজ করছে এবং যাচাই করা নির্ভরযোগ্য তথ্য জনগণের কাছে তুলে ধরছে।
সূত্র: বাসস
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ল ই গণঅভ য ত থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ