গতকাল বুধবার (৯ জুলাই) রাত থেকে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল ১১টা পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় নোয়াখালী জেলাবাসীর মনে কিছুটা স্বস্তি এসেছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুপুর ১২টায় আবারো এ জেলা শুরু হয়েছে বৃষ্টি। এতে নতুন করে পানিবন্দী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত জেলায় উল্লেখযোগ্য কোনো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মানুষজন স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশায় ছিলেন। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফের বৃষ্টি শুরু হলে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া ও পানিবন্দী মানুষদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়।

জানা গেছে, নোয়াখালী সদর, সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ ও সুবর্ণচরের বিভিন্ন অঞ্চলের নিচু এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে জেলা শহর মাইজদীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, মৎস্য অফিস, জেল খানা সড়ক, পাঁচ রাস্তার মোড়, পৌর বাজার, পুলিশ সুপার অফিস, গণপূর্ত বিভাগ, জেলা এলজিইডি, জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, জেলা জনসাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাগুলো তলিয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা এখনো অনেক এলাকায় কার্যকর না হওয়ায় ঘরবাড়ি ও সড়কে পানি জমে আছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কর্মজীবী মানুষ এবং যানবাহনের চালকদের।

আরো পড়ুন:

বৃষ্টি কত দিন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

দীঘিনালায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

জেলা শহরের বাসিন্দা মোস্তাক আহমেদ বলেন, “সকাল বেলা কিছুটা আশার আলো দেখেছিলাম। কিন্তু আবার বৃষ্টি শুরু হলো। পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। কেননা বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে জলাবদ্ধতা থেকে স্থায়ী বন্যা পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”

দিদারুল আলম নামে আরেকজন বলেন, “বৃষ্টি এলেই আমাদের শঙ্কা বেড়ে যায়। কয়েকদিন আমরা টানা বৃষ্টিতে নিমজ্জিত। এতে করে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। জেলার একটি পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা দরকার। আমাদের এক রাস্তার শহর কিন্তু রাস্তা থেকে ড্রেন উচু। কোথাও কোথাও অপরিকল্পিত ড্রেন, যার কোনো আউট লাইন নেই। উল্টো ড্রেন দিয়ে সড়কে পানি প্রবেশ করছে।”

কাদির হানিফ ইউনিয়নের বাসিন্দা ইকবাল বলেন, “আমাদের বাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। বসতঘরসহ রান্নাঘরে পানি আজ তিনদিন। রান্না৷ করাটাও কষ্টকর হয়ে গেছে।”

সুবর্ণচর উপজেলার আবদুল বারি বলেন, “শস্য ভাণ্ডার খ্যাত সুবর্ণচরে তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। মৌসুমী ফসলের বীজ অনেক কৃষক রোপণ করেছে। কিন্তু টানা বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা লোকসানে পড়বে।”

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, “জেলা প্রশাসন দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে। ইতোমধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দল ও মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, সুপ্ত খাবার ও নগদ টাকা প্রস্তুত রয়েছে। পানিবন্দী মানুষসহ আশ্রয়কেন্দ্রে যারা আশ্রয় নিয়েছে, তাদের মাঝে এসব বিতরণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনকেও সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।”

ঢাকা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ন বন দ আতঙ ক

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ