দুই বছর ধরে জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) মা–বাবার নাম সংশোধনের জন্য চট্টগ্রামের নির্বাচন কার্যালয়ে ঘুরছেন মো. সাইফুল ইসলাম। কিন্তু এত দিনের চেষ্টার পরও মেলেনি সমাধান।

নগরের উত্তর কাট্টলীতে বসবাসকারী সাইফুল পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। জীবিকার তাগিদে যখন যা পান, তা-ই করেন। কয়েক বছর ধরে বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সে লক্ষ্যে পাসপোর্ট করতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর এনআইডিতে বাবা ও মায়ের নাম ভুল। এরপর পাসপোর্ট কার্যালয়ের পরামর্শে এনআইডি সংশোধনের জন্য প্রায় দুই বছর আগে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আবেদন করেন তিনি।

গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয় প্রাঙ্গণে কথা হয় সাইফুলের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। প্রথম আলোকে সাইফুল বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র করার সময় বাবার ডাকনাম কবির আহম্মদ আর মায়ের নাম বুলুয়ারা বেগম দিয়েছিলাম। কিন্তু বাবার আসল নাম এস এম তৈয়বুর রহমান ও মায়ের নাম বুলু আক্তার। এ কারণে সংশোধনের আবেদন করেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।’

সাইফুল জানান, জাতীয়তা সনদ, প্রত্যয়নপত্র, মা-বাবার এনআইডির অনুলিপি, ভাইয়ের এনআইডি, এমনকি মা-বাবার নিকাহনামাও জমা দিয়েছেন। তবু ফল মেলেনি।

সাইফুল জানান, জাতীয়তা সনদ, প্রত্যয়নপত্র, মা–বাবার এনআইডির অনুলিপি, ভাইয়ের এনআইডি, এমনকি মা–বাবার নিকাহনামাও জমা দিয়েছেন। তবু ফল মেলেনি। তিনি বলেন, ‘দুই বছর ধরে ঘুরছি। কত কাগজ দিলাম, কত লোক ধরলাম। এখন পর্যন্ত কিছু হলো না। ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে।’

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ে অনেকেই ভিড় করেন প্রতিদিন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র এনআইড দ ই বছর

এছাড়াও পড়ুন:

বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট: ‘মৃত’ নন জীবিত এমন ১৫ জনকে হাজির করলে ব্যবস্থা

বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ চিহ্নিত ১৫ জন জীবিতকে হাজির করাতে পারলে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ব্যবস্থা নেবেন। বিহারের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মামলাকারীদের আইনজীবীদের এ আশ্বাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচী এ আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া দেওয়া হলে তাঁরা অবশ্যই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

আবেদনকারীদের উদ্দেশে দুই বিচারপতি বলেছেন, প্রক্রিয়ায় অনিয়ম বা ত্রুটি পাওয়া গেলে অবশ্যই তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।

মামলাকারীদের আবেদন মেনে সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য খসড়া ভোটার তালিকা পেশ করার ওপর স্থগিতাদেশ দেননি। তবে ইসিকে তাঁরা বলেছেন, তাদের কাজ গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া নয়। তাদের দেখা উচিত যাতে গণহারে ভোটারদের তালিকাভুক্ত করা যায়।

এসআইআর–প্রক্রিয়া অনুযায়ী ভোটার তালিকা সংশোধনের পর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে ১ আগস্ট। সে লক্ষ্যেই ইসি এগিয়ে চলেছে। ইসি সূত্রে খবর, নিবিড় সংশোধনপ্রক্রিয়ার পর প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে ৬৫ লাখেরও বেশি নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২২ জন ‘মৃত’, ৩৬ লাখ ‘নিখোঁজ’। এ ছাড়া বেশ কয়েক লাখ ভোটারের নাম বিভিন্ন এলাকার তালিকায় রয়েছে। অর্থাৎ একই ভোটার অন্তত দুই জায়গায় নথিভুক্ত। আগের তালিকা অনুযায়ী বিহারে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৮৯ লাখ। ইসির দাবি, এই তালিকায় বহু ভোটার ভুয়া। তাদের বাদ দিতেই এই নিবিড় সংশোধন।

যে প্রক্রিয়ায় এই খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, মামলাকারীদের আপত্তি তা নিয়েই। তাঁদের অভিযোগ, ইসি যেভাবে নাগরিকত্বের যাচাই করছে, সে জন্য যেসব নথি পেশ করতে বলা হচ্ছে, তা বহু ক্ষেত্রে সম্ভবপর নয়। তেমন করা তাদের কাজও নয়। সেই কাজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে বহু দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের ভোটাধিকার ইসি কেড়ে নিচ্ছে।

গত সোমবার ও মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়। মঙ্গলবারের শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে আশ্বস্ত করে বিচারপতিরা বলেন, কমিশনের ত্রুটি–বিচ্যুতি দেখলে তাঁরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। ভোটার প্রমাণে আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডকে নথি হিসেবে গ্রাহ্য করার সুপারিশ বিচারপতিরা জোরের সঙ্গে করেছেন। এই দুই নথি জাল করা সহজ বলে ইসির দাবি নস্যাৎ করে বিচারপতিরা বলেছেন, যে ১১টি নথির ওপর নির্ভর করে তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সেগুলোর প্রতিটিই জাল করা সম্ভব। কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে বিচারপতিরা বলেন, খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ অথচ আসলে জীবিত, এমন ১৫ জনকে আপনারা হাজির করুন। আমরা ব্যবস্থা নেব।

আগামী ১২ ও ১৩ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে ৮ আগস্টের মধ্যে মামলাকারীদের বক্তব্য লিখিতভাবে আদালতে পেশ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ