খেলোয়াড় থেকে কিংবদন্তি কোচ হয়ে রিয়ালের ডাগআউটে
Published: 25th, May 2025 GMT
এক সময়ের ঠাণ্ডা মাথার মাঝমাঠের জেনারেল, এবার রিয়াল মাদ্রিদের সাদা জার্সির বাইরে দাঁড়িয়ে নতুন মিশনে নামছেন জাবি আলোনসো। মাঠে খেলে ট্রফি জেতার যে অভিজ্ঞতা, এবার তা ডাগআউট থেকে রূপ দিতে হবে সাফল্যের গল্পে। কিংবদন্তি ফুটবলারের নতুন পরিচয়- রিয়াল মাদ্রিদের হেড কোচ।
আগামী ১ জুন থেকে ২০২৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত রিয়ালের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি হয়েছে ৪২ বছর বয়সী আলোনসোর। কার্লো আনচেলত্তির উত্তরসূরি হিসেবে আসছেন তিনি, যার অধীনে বিগত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদ ট্রফির খরায় পড়েছিল। ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ হয়ে যাওয়ায় আনচেলত্তির জায়গা নিতে চলেছেন আলোনসো। যার প্রথম চ্যালেঞ্জ হবে ক্লাব বিশ্বকাপে আল হিলালের বিপক্ষে ১৮ জুন।
ক্যারিয়ারের প্রতিটি ধাপে আলোনসোর স্পর্শ ছিল পরিণতির। খেলোয়াড় হিসেবে যেমন ছিলেন মিডফিল্ডে নিপুণ কারিগর, তেমনি কোচ হিসেবেও দ্রুতই নিজের জাত চিনিয়েছেন। বায়ার লেভারকুসেনের হয়ে জার্মান লিগ ও কাপ ট্রফি জিতে ইউরোপের নজর কাড়েন। এমনকি, ক্লাবটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ট্রেবল জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান দলকে। ফুটবল বিশ্লেষকদের মতে, এত দ্রুত এতটা ধারালো কোচিং রূপান্তর সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিরল।
আরো পড়ুন:
বিদায়ী রাতে নতুন যুগের ইঙ্গিত রিয়ালের
রিয়ালকে বিদায় বললেন মদ্রিচ
আলোনসোর কোচিং দর্শন গড়ে উঠেছে হোসে মরিনহো, পেপ গার্দিওলা ও রাফা বেনিতেজের মত বড় মাপের ম্যানেজারদের অধীনে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে। রিয়াল সোসিয়েদাদ থেকে শুরু করে লিভারপুল, রিয়াল মাদ্রিদ এবং বায়ার্ন মিউনিখ – সব জায়গায়ই ছিলেন ভরসার প্রতীক। তার বাবা পেরিকো আলোনসোও স্পেনের প্রাক্তন ফুটবলার ও কোচ। ফলে ফুটবল যেন ছিল রক্তেই।
জাবির হাত ধরেই শুরু হচ্ছে লস ব্লাঙ্কোসদের এক নতুন অধ্যায়। রিয়ালের ঘোষণায় স্পষ্ট – ক্লাব এবার ভবিষ্যতের পথচলায় আস্থার প্রতীক হিসেবে দেখছে আলোনসোকে। সোমবার সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে হবে তার আনুষ্ঠানিক পরিচিতি।
চাপ থাকছেই। কিংবদন্তি ক্লাবে ফিরেও যে ভিন্ন ভূমিকায় মাঠে নামা সহজ নয়, তা ভালো করেই জানেন আলোনসো। তবু যিনি বিশ্বকাপ, ইউরো, চ্যাম্পিয়নস লিগ, লা লিগা, বুন্দেসলিগা সব জিতেছেন, তার থেকে রিয়ালের সমর্থকরাও স্বপ্ন দেখতেই পারে। মাঠের রাজা এবার হোক ডাগআউটের রাজা।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।