সিনেমা বানিয়েছিলেন নজরুল, ছিলেন অভিনেতা, প্রযোজকও
Published: 25th, May 2025 GMT
‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণ-তূর্য্য’, এই বিস্ময়কর দ্বৈতসত্তায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী এবং মানবতায় হৃদয়সংবেদী প্রেমিক জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বহু গুণের এ মানুষ গান, কবিতা, গল্প, নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। যেখানে তিনি একাধারে গীতিকার, সংগীত পরিচালক, কাহিনিকার, সুরকার ও নির্মাতা হয়ে কাজ করেছেন। অভিনয় করেছেন দাপটের সঙ্গে।
নজরুল স্বভাবে ছিলেন আজীবন অস্থির, চঞ্চল। কিন্তু প্রতিভার এই বরপুত্র সৃষ্টির ক্ষেত্রে ছিলেন আজীবন গভীর নিমগ্ন এক স্রষ্টা। অস্থিরতা তাঁর বৈচিত্র্য ভাবনার সহচর। ব্যক্তিজীবনে নিরন্তর অবস্থান ক্ষেত্রে পরিবর্তন সেই অস্থিরতা ও চাঞ্চল্যের পরিচয় বহন করে। নির্দিষ্ট বিষয়ে থেমে থাকেননি তিনি। তাই শুধুই অভিনয় আর পরিচালনা নয়, রীতিমতো প্রশিক্ষকের কাজ করতেন নজরুল। সহশিল্পীদের অভিনয় শেখাতেন, গান তুলে দিতেন শিল্পীদের। এমনকি উচ্চারণও ঠিক করে দিতেন। তিরিশের দশকে নজরুল পার্সি মালিকানাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাডান থিয়েটার্সের ‘সুর ভাঙারি’ পদে নিযুক্ত হন। এ পদটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন নজরুল।
অভিনেতা নজরুল
সে সময়ের নামকরা প্রযোজক পিরোজ ম্যাডান ১৯৩৩ সালে পাইওনিয়ার ফিল্মস কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠান থেকে ‘ধ্রুব’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়। পুরাণের কাহিনি নিয়ে গিরিশচন্দ্র ঘোষের লেখা ‘ধ্রুব চরিত’ অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়। নজরুল এ ছবির গান লেখেন ও সংগীত পরিচালনা করেন। তিনি দেবর্ষি নারদের চরিত্রে অভিনয় করেন এবং একটি গানে কণ্ঠ দেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিতর্কিত উপদেষ্টাদের সরিয়ে দেওয়া সরকারের জন্য ভালো হবে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যেসব উপদেষ্টাকে নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, তাঁদের সরিয়ে দেওয়া সরকারের জন্য ভালো হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে বলেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। রোববার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
নুরুল হক বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবেই জানিয়েছি, যেসব উপদেষ্টাকে নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, বিশেষ করে আমাদের আন্দোলনকারী ছাত্রনেতার মধ্যে যাঁরা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাঁরা যেহেতু একটি দল করেছেন এবং বাইরে এ কথাটি প্রচলিত আছে, এ দলটি সরকারের সুবিধা পাচ্ছে এবং সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করছে। সেই কারণে আমরা বলেছি যে এই দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এনসিপির দুজন উপদেষ্টা, তাঁদেরকে অপসারণ করা বা তাঁদেরকে বুঝিয়ে পদত্যাগের দিকে আপনার নিয়ে যাওয়া এটা সরকারের জন্য একটা ভালো দিক হবে।’
নুরুল হক বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আরও একজন উপদেষ্টা (জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা) নিয়ে তারা দ্বিমত পোষণ করেছে। সংগত কারণেই এ রকম বিষয়গুলোকে সরকার যেন ইতিবাচকভাবে আমলে নেয় এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে এবং উত্তরের প্রশাসকের হিযবুত তাহ্রীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে—এ বিষয়গুলোতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন তাঁরা।
সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, সরকার যেন সামরিক বাহিনীসহ পুরো প্রশাসনকে আস্থায় নিয়ে কাজ করে, তাদের সঙ্গে যেন সরকারের একটা ভালো আন্ডারস্ট্যান্ডিং (বোঝাপড়া) থাকে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা সে বিষয়টায় গুরুত্ব দিয়েছেন যে যোগাযোগটা আগের চেয়ে আরও যেন ঘন ঘন হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন চট্টগ্রাম বন্দর এবং রাখাইনে করিডর দেওয়ার বিষয়ে আপাতত সিদ্ধান্ত না নেয়, এমন আহ্বান জানিয়েছেন নুরুল হক। তিনি বলেন, নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই করুক, সেটা চান তাঁরা।
‘আমরা বলেছি, প্রধান উপদেষ্টা যেন একটা সুনির্দিষ্ট মাসের কথা বলেন যে এই মাসে সম্ভাব্য নির্বাচনটা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সরকার অভ্যন্তরীণভাবে কিংবা বাহ্যিকভাবে যে চাপগুলো কিংবা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র তারা অনুভব করছে বা করবে, সে ক্ষেত্রে আমরা তাদের পরিপূর্ণ সহযোগিতা করব,’ বলেছেন নুরুল হক।