গাজা সিটি ও উত্তর গাজার জাবালিয়ায় বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়দানকারী একটি স্কুল ও একটি বাড়ি লক্ষ্য করে সোমবার (২৬ মে) সকালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর। 

একটি মেডিকেল সূত্র আনাদোলুকে জানিয়েছে, গাজা সিটির আল-দারাজ পাড়ায় বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়দানকারী ফাহমি আল-জিরজাওয়ি স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩০ জনে দাঁড়িয়েছে।

আল-আকসা টিভি এবং অন্যান্য স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বোমা হামলার পর স্কুলটিতে আগুন ধরে যায়।

আরো পড়ুন:

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা মাল্টার

আসিয়ানকে ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলার আহ্বান মালয়েশিয়ার

অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া প্রত্যক্ষদর্শীদের ভিডিওতে দেখা গেছে, পুড়ে যাওয়া মরদেহ। এছাড়া আগুন লাগার সময় বাস্তুচ্যুতদের চিৎকার দেখা গেছে ও শোনা গেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে এক বিবৃতিতে বলেছে, স্কুলটিকে হামাস তাদের ‘কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে’ পরিণত করেছিল। তবে, তারা তাদের দাবির সমর্থনে কোনো প্রমাণ সরবরাহ করেনি।

এদিকে, উত্তর গাজার জাবালিয়া শহরের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর আরেকটি ভয়াবহ হামলায় ১৯ জন নিহত এবং আরো অনেকে আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আনাদোলুকে জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বিমান হামলায় একটি বহুতল ভবন ‘সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস’ হয়ে গেছে। ভবনটি কয়েক ডজন বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয়স্থল ছিল।

যুদ্ধবিরতির আন্তর্জাতিক আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

গত বছরের নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

ছিটমহলে যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলাও চলছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যারিকোর সাবেক শ্রমিকদের পাওনা দাবি-সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি ঈদের পর

ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক শ্রমিকদের ১ হাজার ৮২২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা পাওনা দাবি-সংক্রান্ত আবেদনের (রিট নম্বর ৫৭৬/২০১৮) শুনানি পিছিয়েছে। এ বিষয়ে ঈদুল আজহার পর শুনানি করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

বিচারপতি ফাহমিদা কাদির ও বিচারপতি মুবিনা আসাফ গঠিত হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ মঙ্গলবার (২৭ মে) এ আদেশ দেন।

এর আগে গত ১৪ মে ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের দায়ের করা রিটের প্রতিপক্ষ ও প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ১৯ শ্রমিক ‘শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল’ ও ‘শ্রমিক কল্যাণ তহবিল’ থেকে তাদের পাওনা ১ হাজার ৮২২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা দাবি করে হাইকোর্টে আবেদন করেন। আদালত গত ১৯ মে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। এরপর এক সপ্তাহ পিছিয়ে ২৭ মে শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়। 

এদিন দুপুরে আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ডাকা হলে ম্যারিকোর সাবেক শ্রমিকদের পক্ষের আইনজীবী আদালতকে জানান, বিষয়টি একটু জটিল এবং শুনানির জন্য একটু বেশি সময়ের প্রয়োজন। এর পর হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ বিষয়টি ঈদুল আজহার পরে শুনানির করার নির্দেশ দেন।

ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের বিরুদ্ধে শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও শ্রমিক কল্যাণ তহবিল গঠন না করার অভিযোগে ২০০৬-২০০৭ অর্থবছর থেকে ২০১২-২০১৩ অর্থবছর পর্যন্ত কর্মরত প্রাক্তন কর্মচারীদের পক্ষে ১৯ জন বাদী হয়ে ২০১৪ সালে ঢাকার শ্রম আদালতে মামলা করেন (মামলা নম্বর ৬৯১/২০১৪)। 

এরপর ২০১৮ সালে ম্যারিকো বাংলাদেশ মামলটি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশিন করে (৫৭৬/২০১৮)। পরবর্তীতে ২০২৫ সালের ১৪ মে সাবেক শ্রমিকদের পক্ষে ১৯ জন শ্রম আইনের ২৩৪ ও ২৪০(৩) ধারায় হাইকোর্টে ১ হাজার ৮২২ কোটি ৯৮ লাখ টাকার দাবিতে আবেদন করেন। আবেদনে মামলার রায় হওয়ার আগ পর্যন্ত দাবিকৃত টাকা ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের ভারতীয় মূল প্রতিষ্ঠান ম্যারিকো লিমিটেডের কাছে যাতে পাঠাতে না পারে সে বিষয়ে আদালতের আদেশ প্রার্থনা করেন।

বাংলাদেশের শ্রম আইনের ২৩৪ ধারায় শ্রমিক অংশগ্রহণ  তহবিল ও শ্রমিক কল্যাণ তহবিল গঠন বাধ্যতামূলক হলেও ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড ২০০৬-২০০৭ অর্থবছর থেকে ২০১২-২০১৩ অর্থবছর পর্যন্ত আইন অমান্য করে তহবিল গঠন করেনি। ২০১৩-২০১৪ অর্থবছর থেকে তারা তহবিল গঠন শুরু করে। 

ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের ৯০ শতাংশ শেয়ারের মালিক ম্যারিকো লিমিটেড ইন্ডিয়া। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে গত ১৬ বছরে প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। এর মধ্যে ৪১৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা রেমিটযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। যার মধ্যে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরেই রেমিটযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে ১ হাজার ৭৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা ১৬ বছরের মোট রেমিটযোগ্য টাকার প্রায় ৩৪ শতাংশ। এ অবস্থায় মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এবং প্রাক্তন শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের আগে আর কোনো অর্থ বিদেশে রেমিট না করার নির্দেশ দিতে হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়।

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ