হবিগঞ্জের কালেঙ্গা সীমান্ত দিয়ে আরও ১৯ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
Published: 26th, May 2025 GMT
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার কালেঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ১৯ বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল রোববার গভীর রাত থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত চুনারুঘাটের কালেঙ্গা সীমান্ত থেকে তাঁদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিজিবির দাবি, বিএসএফ তাঁদের নিজ সীমান্তে একত্র করে কাঁটাতারের গেট খুলে এই নারী, পুরুষ ও শিশুদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৫ শিশু, ৮ নারী ও ৬ পুরুষ আছেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক এবং কুড়িগ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হবে বলে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সোমবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিজিবি কালেঙ্গা ক্যাম্পের হাবিলদার জাকারিয়া।
ঘটনার খবর পেয়ে কালেঙ্গা ক্যাম্পে যান হবিগঞ্জ ৫৫ বিজিবির সহকারী পরিচালক (এডি) হাবিবুর রহমান এবং চুনারুঘাট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুব আলম। তাঁরা প্রথম আলোকে বলেন, গভীর রাতের যেকোনো সময় কালেঙ্গা সীমান্ত দিয়ে কাঁটাতারের গেট খুলে ১৯ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ।
এই ১৯ জন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ও নাগেশ্বরী উপজেলার বাসিন্দা। তাঁদের কেউ ১৮ বছর, আবার কেউ তারও বেশি সময় ধরে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
ইসমাইল হোসেন নামের একজন বলেন, ‘আমরা ভারতের হরিয়ানায় ১৮ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। কাজ করতাম স্থানীয় ইটের ভাটায়। ২ দিন আগে হঠাৎ করে সিআইডি পুলিশ ধরে নিয়ে আসে এবং সীমান্তে বিএসএফের কাছে সোপর্দ করে।’
এ বিষয়ে জানতে হবিগঞ্জ ৫৫ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৭ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুসহ ১৭ জনকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তাদেরকে বাংলাদেশ ভূ-খণ্ড থেকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোরে বিএসএফ সদস্যরা ওই ১৭ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দেয়। তাদের মধ্যে চারজন নারী, চারজন পুরুষ এবং নয়জন শিশু।
এদিন বিকেলেই তাদেরকে গোমস্তাপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ১৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম।
আটককৃতরা হলেন—কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার কাশিপুর গ্রামের মৃত জেয়ার ব্যাপারীর ছেলে মফিজুল হক (২৬), তার স্ত্রী মোছা. মনজু বেগম (২২), তাদের সন্তান মোছা. মিতু আক্তার (১৩), মো. বেলাল (৪) ও মরিয়ম (২); একই উপজেলার দাশিয়ারছড়া-বালাটরি এলাকার সামসুদ্দিনের ছেলে শাহাজুল ইসলাম (৪২), তার ছেলে মামুন মিয়া (১৮), মো. মাসুদ (১৩) ও রিদয় ইসলাম (৪); নাগেশ্বরীর এগার মাথা এলাকার মৃত বক্তার আলীর স্ত্রী রফিয়া বেগম (৬০) ও তার মেয়ে ববিতা বেগম (৩৪); গোসাইবাড়ি এলাকার অতুল চন্দ্র বর্মণের ছেলে বুলু চন্দ্র বর্মণ (৪০) ও তার স্ত্রী সুনোতি রানী (৩৪), তাদের সন্তান সুশান্ত চন্দ্র বর্মণ (৮), সুমন চন্দ্র বর্মণ (৬), গোপাল চন্দ্র বর্মণ (৪) ও বুলবুলি চন্দ্র বর্মণ (১৬)।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিরা কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন। সেখানে গিয়ে তারা বিভিন্ন স্থানে কাজ করতেন। চলতি বছরের ১৭ মে ভারতের হারিয়ানা প্রদেশ থেকে তাদেরকে আটক করে স্থানীয় পুলিশ। সেখান থেকে ট্রেনযোগে তাদেরকে হাওড়া জেলায় আনা হয়। পরে ২৪ মে ভারতের ৮৮ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ইটাভাটা ক্যাম্পের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। ইটাভাটা ক্যাম্পের বিএসএফের সদস্যরা মঙ্গলবার ভোরে ভারতের ওপারের চিলারদাড়া এলাকা হয়ে বিভিষণ সীমান্তের লালমাটিয়া এলাকা দিয়ে ওই ১৭ জনকে ঠেলে পাঠায়। পরে তাদেরকে আটক করে বিজিবি।
নওগাঁ ১৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুর ইসলাম মাসুম জানিয়েছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার সুবাদে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, তারা সবাই বাংলাদেশি। দীর্ঘদিন আগে কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে অবৈধভাবে গিয়ে ইটের ভাটায় কাজ করতেন তারা। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে নারী-পুরুষ ও শিশু আছে।
গোমস্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রইস উদ্দিন জানিয়েছেন, বিএসএফ সদস্যরা ১৭ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। পরে বিজিবি তাদের আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/শিয়াম/রফিক