ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে এক ছেলে ও এক মেয়েকে রেখে আত্মহত্যা করেছেন স্বামী-স্ত্রী। রোববার রাতে উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের কুড়েরপাড়ে এ ঘটনা ঘটে। 

স্বজনেরা জানিয়েছেন, শুরুতে জরিনা বেগম (২৩) কেরির ট্যাবলেট (চালের পোকা দমনের ওষুধ) সেবন করেন। তাঁকে বাঁচানো সম্ভব নয় বুঝতে পেরে স্বামী আল আমিনও একই ওষুধ সেবন করেন। 

আল আমিন (২৮) কুড়েরপাড়ের নান্নু মিয়ার ছেলে। তাঁর স্ত্রী জরিনা একই ইউনিয়নের নোয়াপাড়ার ইদ্রিস মিয়ার মেয়ে। আল আমিন পেশায় ইজিবাইক চালক। 

জরিনার ভাই আনোয়ার হোসেনের ভাষ্য, সংসারে অভাব-অনটনের কারণে অনেকদিন ধরে তাঁর বোন ও ভগ্নিপতি মানসিক চাপে ছিলেন। আল আমিন ঋণের টাকায় কেনা ইজিবাইক চালাতেন। কিছুদিন আগে সেটি বিক্রি করে দিলে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এর জের ধরে রোববার রাতে প্রথমে জরিনা বেগম কেরির ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে স্বামী আল আমিনও একই ট্যাবলেট সেবন করেন। প্রতিবেশীদের সহায়তায় স্বজনেরা রাত ১০টার দিকে তাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যান। জরুরি বিভাগে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন জরিনা। রাত ১টার দিকে ওই হাসপাতালেই মারা যান আল আমিনও।

লালপুর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো.

শাহজাহান মিয়া জানান, লোকমুখে শুনেছেন প্রথমে স্ত্রী ও পরে স্বামী কীটনাশক পান করেছিলেন। কী কারণে তারা কীটনাশক পান করেছিলেন, এর সঠিক কারণ জানেন না।

পুলিশ লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গে রাখে। সোমবার বিকেলে সেখানে পাওয়া যায় প্রতিবেশী দেলোয়ার আহমেদ আকাশকে। তাঁর ভাষ্য, এ দম্পতির মধ্যে আগে কখনও মনোমালিন্যের কথা শোনেননি। আল আমিনের বাবা অন্য এলাকা থেকে জমি কিনে এখানে বসবাস শুরু করেন। তিনি শুনেছেন, আল আমিন টুকটাক মাদক সেবন করতেন, সঙ্গও তেমন ভালো ছিল না। তাঁর মা সামসুন্নাহারও আলাদা থাকেন। তিনি (মা) দেড় শতক জমি বিক্রির টাকায় ছেলেকে অটোরিকশা কিনে দিয়েছিলেন। 

দেলোয়ার আহমেদের ভাষ্য, ব্যক্তিগত ঋণ পরিশোধের জন্য অটোরিকশাটি আল আমিন বিক্রি করে দেন। এ নিয়ে মা ও স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য দেখা দেয়। বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে স্ত্রী জরিনা কীটনাশক সেবন করেন। বিষয়টি টের পেয়ে আল আমিন তাঁর কাছ থেকে ট্যাবলেট কেড়ে নেন। 

প্রতিবেশীরা শুরুতে জরিনাকে হাসপাতালে নিয়ে যান জানিয়ে দেলোয়ার বলেন, স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি আঁচ করেই হয়তো আল আমিন ভয়ে স্ত্রীর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া কীটনাশক সেবন করেন। পরে রাতেই হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। আল আমিনের ঋণের বিষয়টি মা-স্ত্রী টের পেলেও পরিমাণ কতো কেউই জানতেন না। 

আশুগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন সোমবার বিকেলে বলেন, মরদেহ দুটি সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থার প্রক্রিয়া চলছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় ট য বল ট ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রদল ও বাম জোটের ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ অব্যাহত রেখেছে: ছাত্রশিবির

ছাত্রদল ও বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে অভিযোগ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির। শনিবার সংগঠনটির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বিবৃতিতে বলেছেন, নব্য ফ্যাসিবাদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে ছাত্রদল ও বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো। 

শিবিরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থী নিপীড়ন, নারী নির্যাতন, চাঁদাবাজি, মাদক বাণিজ্য, ছিনতাই, সিট দখল, অপপ্রচার, ট্যাগিং, র‌্যাগিং ও হামলাসহ অপরাধমূলক সংস্কৃতি অব্যাহত রয়েছে। ঢাকা ও কক্সবাজার পলিটেকনিক, সরকারি গ্রাফিক্স আর্টস কলেজ, কুয়েটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে সন্ত্রাস ও অপরাজনীতির উদাহরণ তৈরি করেছে। 
চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে ভর্তিচ্ছুদের জন্য স্থাপিত শিবিরের হেল্প ডেস্কে হামলার জন্য ছাত্রদলকে দায়ী করে বিবৃতি বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ইসলামিয়া কলেজ ও রংপুরেও বাঁধা দিয়েছে। শুক্রবার ফরিদপুরে ইভটিজিংয়ে বাঁধা দেওয়ায় কলেজছাত্রীকে নির্যাতন করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। নারীবাদীরা ছাত্রদলের এ ধরনের গুরুতর অপরাধে মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকে। 

শিবিরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে,  শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ায় দুই নারী শিক্ষার্থীকে হল ছাড়া করার হুমকি দেয় ছাত্রদল। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঢাকতে বাম ছাত্রসংগঠনগুলোকে ব্যবহার করে ক্যাম্পাসে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। ছাত্রদল ও বাম জোটের ট্যাগিং ও দায় চাপানোর রাজনীতিও চলছে পুরনো কায়দায়। 

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শিবির মারা জায়েজ ছিল, জায়েজ আছে, জায়েজ থাকবে’- লিখে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন রাজশাহী মহানগর ছাত্রদল নেতা আহনাফ তাহমিদ অর্জন। লাশের রাজনীতির বৈধতার বয়ান উৎপাদনে ছাত্র ইউনিয়ন নেতা শাহরিয়ার ইব্রাহিম আবরার ফাহাদের হত্যা জায়েজ ছিল বলে অভিমত দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ