সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এক গৃহবধূ তার বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ, হুমকি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগকারী গৃহবধূ তামান্না (২২) সিদ্ধিরগঞ্জের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গোদনাইল নয়াপাড়ায় স্বামীর সঙ্গে বসবাস করেন। 

তিনি জানান, তার বাবা মো.

মাহবুবুর রহমান (৫০), একজন পেশাদার সার্ভেয়ার এবং মা জাহিদা আক্তার মায়া (৪৫) নারায়ণগঞ্জ সদর থানার গোগনগর সৈয়দপুর এলাকার বাসিন্দা। তারা বিভিন্ন সময়ে তার স্বামীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১৪ লাখ টাকা ধার নেন। এর মধ্যে মাত্র ৪ লাখ টাকা ফেরত দিলেও বাকি ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।

তামান্নার অভিযোগ, টাকা ফেরত চাইলে তার বাবা-মা উল্টোা তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন শুরু করেন। তারা তার স্বামীকে মারধর করেন, প্রাণনাশের হুমকি দেন এবং মিথ্যা মামলার ভয় দেখান। তিনি আরও বলেন, গর্ভাবস্থা ও সন্তান প্রসবকালীন সময়েও তার পরিবারের কেউ কোনো খোঁজখবর নেয়নি, যা তাকে চরম মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেয়।

তামান্না বলেন, “বাবা সার্ভেয়ার হিসেবে এলাকায় সুনাম অর্জন করলেও পারিবারিকভাবে তিনি অত্যন্ত কঠোর ও নির্দয়। বর্তমানে তিনি আমাদের সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করছেন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দিচ্ছেন।” ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করে আইনি সহায়তা প্রার্থনা করেন। 

অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীম রেজা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিকবার অভিযুক্তদের থানায় হাজির হওয়ার জন্য বলা হলেও তারা সাড়া দেননি এবং মীমাংসার কোনো উদ্যোগও নেননি। ফলে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সার্ভেয়ার মাহবুবুর রহমান বলেন, “মেয়ের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি থানায় মীমাংসার জন্য যাব না। মামলা হলে আইনগতভাবেই মোকাবিলা করব।”

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ গ হবধ স দ ধ রগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ