নিষিদ্ধ সংগঠনে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে বাকৃবি প্রেসক্লাবের অনুমোদন
Published: 26th, May 2025 GMT
নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) প্রেসক্লাবের অনুমোদন স্থগিত করা হয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) বাকৃবি প্রশাসন এ স্থগিতাদেশ জারি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. হেলাল উদ্দীনের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বাকৃবি প্রেসক্লাব (বাউপিসি)’ নামক অনুমোদিত সাংবাদিক সংগঠনের কয়েকজন সদস্য নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। সেই সঙ্গে তারা ফেসবুক পেজ এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পোর্টালে এমন কিছু সংবাদ প্রকাশ করেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করেছে।
আরো পড়ুন:
সিএসই বিভাগে নকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইবি শিক্ষকের অনুরোধ
চাকসুতে আদিবাসীবিষয়ক পদের দাবি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী সংগঠনগুলোর
এতে অনুমোদনের সময় নির্ধারিত শর্তাবলির ১ ও ৪ নম্বর ধারা লঙ্ঘিত হওয়ায় সংগঠনটির অনুমোদন স্থগিত করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
গত বছর ১১ ডিসেম্বর জারি করা আদেশের (নং: শা-৭/নোটশীট/২১৬/সংস্থাপন) মাধ্যমে ছয়টি শর্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংগঠনটিকে অনুমোদন দেয়।
শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল—বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত না থাকা, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন কাজ থেকে বিরত থাকা, রাষ্ট্রবিরোধী বা সামাজিক অপরাধে সম্পৃক্ত না থাকা এবং প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় সংগঠনটির অনুমোদন বাতিলের ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।
এদিকে, সোমবার (২৬ মে) দুপুরে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উগ্র আচরণ, সাংবাদিক হিসেবে ক্ষমতা প্রদর্শন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে বাকৃবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন রায়হান আবিদ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিনি কনফারেন্সে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম চলাকালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিলেন। তবে গত ৫ আগস্টের পরে ভোল পাল্টিয়ে ছাত্রদলের বিভিন্ন দলীয় প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া শুরু করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভর্তি কার্যক্রম চলাকালীন রায়হান আবিদ বারবার কক্ষে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এতে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তার কাছে কারণ জানতে চাইলে তিনি উল্টো অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং তর্কে জড়ান। এসময় শিক্ষার্থীরা তার উগ্র আচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি সামনে এনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে শিক্ষার্থীরা তাকে চড়-থাপ্পর দিয়ে ধাওয়া করেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, রায়হান আবিদ একসময় তৎকালীন বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি তায়েফ রিয়াদের একান্ত সহযোগী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ছাত্রলীগ নেতা এম এ ইউসুফের বেশ ঘনিষ্ঠ ছিলেন। সে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উগ্র আচরণ, হলে ক্ষমতা প্রদর্শন করে আসছিল। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের পদধারী হওয়ায় সব জায়গায় ক্ষমতা দেখাত সে।
রায়হান আবিদ দৈনিক জনকণ্ঠ, ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস, দৈনিক আমাদের সময় ডটকম, ডেইলি এশিয়ান এজ, দেশের ডাকসহ কয়েকটি অনলাইন পোর্টালের বাকৃবি প্রতিনিধি ছিলেন। বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড.
তার বিরুদ্ধে এই ক্লাবের ফেসবুক পেজ থেকে একাধিক শিক্ষক ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ ও নানা অপপ্রচারে লিপ্ত হওয়ার বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত সাংবাদিক রায়হান আবিদ বলেন, “আমাকে আকস্মিকভাবে কোনো কারণ ছাড়াই ৭-৮ জন এসে মারতে থাকে। আমি এখন ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি আছি। ডাক্তার আমাকে কানের দুইটা টেস্ট দিয়েছে। আমি এক কানে কিছু শুনতে পারছি না।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আবদুল আলীম বলেন, “আমি ভর্তি কার্যক্রমে ব্যস্ত ছিলাম। দুপুরের দিকে টিএসসি কক্ষের বাইরের দিকে একটা হট্টগোল শুনতে পাই। আমাদের সহকারী প্রক্টর সেখানে যান এবং কয়েক মুহূর্ত পরেই ফিরে আসেন। সেখানে ঠিক কি হয়েছে আমার জানা নেই।”
ঢাকা/লিখন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর প রক শ স গঠন ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
অশোভন আচরণ, শিষ্টাচারবহির্ভূত বিরুদ্ধাচরণ কাম্য নয়: সৈয়দ এমরান সালেহ
আগামীকাল সোমবার ময়মনসিংহের টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি।
ময়মনসিংহে এনসিপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ বলেছেন, ‘ময়মনসিংহ শান্তির জনপদ। এখানে রাজনৈতিক শিষ্টাচার মেনেই আমরা রাজনীতি করি। আশা করছি সব রাজনৈতিক দল সেই শান্তি বজায় রেখে নিজ নিজ কর্মসূচি পালন করবে। এতে অশোভন আচরণ, শিষ্টাচারবহির্ভূত বিরুদ্ধাচরণ, অশ্লীল মন্তব্য বা কুৎসা রটনা কাম্য নয়।’
আজ রোববার দুপুরে ময়মনসিংহ নগরের টাউন হল মোড়ে গণ–অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গ্রাফিতি অঙ্কন ও গণসংগীত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে এমরান সালেহ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের বুকের ভেতর থেকে ফ্যাসিবাদের জগদ্দল পাথর হয়তো এক বছর আগে নেমে গেছে। আমরা এখন মুক্তকণ্ঠে কথা বলতে পারছি। ৫ আগস্ট আমরা গণ–অভ্যুত্থানে বিজয় অর্জন করতে পেরেছি। কিন্তু সে অর্জন ছিল আংশিক। পরিপূর্ণ বিজয় তখনই হবে, যখন দেশে বহু আকাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারব এবং জনগণের শাসন আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পারব। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারব। এর মধ্য দিয়েই আমরা পরিপূর্ণ বিজয় অর্জন করতে পারব।’
সৈয়দ এমরান সালেহ আরও বলেন, ‘গত এক বছর একটা দীর্ঘ সময়। আমরা ভাবিনি এত সময় লেগে যাবে। এখন দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই দেশে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়েই আমরা যে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ পাব বা সরকার পাব, সেই সংসদ ও সরকারের মধ্য দিয়েই এই গণ–অভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা, সেটাকে আমরা বাস্তবায়নের দিকে নিয়ে যেতে পারব।’
ময়মনসিংহ মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর টাউন হল ও ধোপাখলা মোড় এলাকায় জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের স্মৃতি ধারণ করে দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি অঙ্কন করেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেস আলী ও আবু ওয়াহাব আকন্দ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ।