বড় গরু নিয়ে দুশ্চিন্তা খামারির ছোট-মাঝারিতে স্বস্তি
Published: 26th, May 2025 GMT
কোরবানির ঈদের জন্য পালন করা বড় আকারের গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কিশোরগঞ্জের খামারিরা। গত ঈদের আগে ‘ছাগল-কাণ্ড’ ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন করে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হচ্ছে তাদের। যারা এসব গরু কিনতেন, তাদের বেশির ভাগই আত্মগোপনে। সম্পদশালী অন্য ব্যক্তিরাও ঝুটঝামেলা এড়াতে দামি পশু কিনতে ইতস্তত বোধ করছেন। কয়েকদিনের অভিজ্ঞতা থেকে এমনই তথ্য জানিয়েছেন জেলার কয়েকজন খামারি। যদিও মধ্যম আকারের গরু নিয়ে স্বস্তিতে আছেন তারা।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, কিশোরগঞ্জের ৫৪২টি খামারে এবার কোরবানির পশু লালন করা হয়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৬১৯টি। জেলায় চাহিদা আছে ১ লাখ ৮০ হাজার ৩৬১টি পশুর। উদ্বৃত্ত থাকবে ৩২ হাজার ৪৫৮টি পশু।
কয়েকজন খামারির ভাষ্য, গত বছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তৎকালীন সদস্য মতিউর রহমানের ‘ছাগল কাণ্ড’ আলোচনায় এসেছিল। ১৫ লাখ টাকায় কেনা তাঁর ছাগলের ছবি প্রচার করেন ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত। তা নিয়ে কেলেঙ্কারির ঘটনাটি ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মধ্যে এক রকম আতঙ্ক তৈরি করেছে।
কিশোরগঞ্জ শহরতলির বয়লা এলাকার সানজিদ এগ্রো ফার্ম প্রতিবছরই বড় বড় গরু লালন করে। ২০১৭ সাল থেকে এই খামার শুরু হয় জানিয়ে মালিক সানজিদ হাসান বলেন, গত বছর তিনি ৩৫টি গরু লালন করেছিলেন। এর সবগুলোই বিক্রি হয়। নানা বিষয় বিবেচনা নিয়ে এবার কমিয়ে ২০টি গরু লালন করছেন। শাহিওয়াল, ফ্রিজিয়ানসহ বিভিন্ন জাতের গরুর দাম দেড় লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকার মধ্যে।
এই খামারে চারটি বড় গরু আছে। এগুলোর মধ্যে ১৪শ কেজি ওজনের গরুটির নাম ‘বাদশা’। দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ টাকা। ‘রাজা’ নামের ১৩শ কেজি ওজনের গরুটির দাম ১২ লাখ টাকা হাঁকছেন সানজিদ। এ ছাড়া ‘বাহাদুর’ নামে ৯০০ কেজি ওজনের গরুর জন্য সাড়ে ৭ লাখ টাকা এবং ‘সুলতান’ নামে ৭৫০ কেজি ওজনের গরুর দাম হাঁকছেন সাড়ে ৫ লাখ টাকা। বাড়ির অদূরে অবস্থিত শোলাকিয়ার গরুর হাটেই ৩ জুন এগুলো তুলবেন বলে জানালেন।
সানজিদ হাসান বলেন, গত বছর ঈদের ১০ দিন আগে তিনটি গরু বিক্রি করেছিলেন। এবার এখনও কোনো গরু বিক্রি হয়নি। তিনি মনে করেন, তাঁর গরুগুলো আকারে বড় হওয়ায় লালন-পালনে সমস্যা হয়। তাই বেশি আগে কেউ নিতে চান না।
তবে মাঝারি গরুর খামারিরা কিছুটা স্বস্তিতে আছেন। জেলার করিমগঞ্জের নিয়ামতপুরে বড় খামার রয়েছে ব্যবসায়ী এরশাদ উদ্দিনের। গত বছর তিনি ১৫০টি গরু লালন করেছিলেন। এবার করেছেন ১০০টি। এগুলোর দাম এক লাখ থেকে চার লাখ টাকার মধ্যে।
এরশাদ উদ্দিনের ভাষ্য, গতবার ঈদের ১০ দিন আগেই তিনি ১৫০টি গরু বিক্রি করেছিলেন। গতকাল সোমবার পর্যন্ত এবারের পালন করা ১০০টি গরুর মধ্যে ৮০টি বিক্রি করেছেন। দাম কিছুটা কম হওয়ায় আগেই বিক্রি হচ্ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ
চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।
এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”
তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”
এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।
অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।
ঢাকা/অমরেশ/এস