হোয়াটসঅ্যাপে ছবি পাঠিয়ে তথ্য চুরি, নিরাপদে থাকবেন যেভাবে
Published: 27th, May 2025 GMT
তাৎক্ষণিক বার্তা আদান-প্রদানের পাশাপাশি সহজে কথা বলা ও ভিডিও কল করার সুযোগ থাকায় নিয়মিত হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন অনেকেই। ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও জনপ্রিয়তা পাওয়ায় হোয়াটসঅ্যাপে সাইবার হামলার পরিমাণও বাড়ছে। এত দিন অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন কল, ভুয়া লিংকের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটলেও এবার ছবির মাধ্যমে ফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করছে একদল হ্যাকার।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, হ্যাকাররা ‘স্টেগানোগ্রাফি’ নামের এক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছবির ভেতর ম্যালওয়্যার যুক্ত করে পাঠাচ্ছে। স্টেগানোগ্রাফি হলো এমন একটি প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে ছবির দৃশ্যমান পরিবর্তন ছাড়াই গোপনে কোড যুক্ত করা সম্ভব। সাধারণত জেপিইজি, পিএনজি, এমপিথ্রি বা এমপিফোর ফরম্যাটের ফাইলগুলোতে এ ধরনের কোড বসানো হয়। ফলে ব্যবহারকারীরা হ্যাকারদের পাঠানো ছবিগুলোকে সাধারণ ছবি মনে করে সহজেই ডাউনলোড করেন। ছবিগুলো ডাউনলোড করলেই ব্যবহারকারীদের অজান্তে ফোনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে। ম্যালওয়্যারটি গোপনে পাসওয়ার্ড, ওটিপি ও অন্যান্য সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করে নিয়মিত হ্যাকারদের কাছে পাঠাতে থাকে, যা কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ চুরি করে হ্যাকাররা।
আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে যে ৮ কাজ কখনো করবেন না ১০ জুন ২০২৪স্টেগানোগ্রাফিভিত্তিক ম্যালওয়্যার শনাক্ত করা সাধারণ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ, এসব সফটওয়্যার মূলত পরিচিত ভাইরাস বা আচরণগত অস্বাভাবিকতা খুঁজে বের করে। কিন্তু ছবি বা ভিডিওর ভেতরে থাকা ক্ষতিকর কোড ধরা পড়ে না। এ জন্য দরকার উন্নত ফরেনসিক বিশ্লেষণ ও আচরণ পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তি।
স্টেগানোগ্রাফিভিত্তিক ম্যালওয়্যার হামলা থেকে নিরাপদে থাকার জন্য হোয়াটসঅ্যাপের সেটিংস থেকে মিডিয়া অটো ডাউনলোড অপশন বন্ধের পাশাপাশি বেশ কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। অপরিচিত ব্যক্তিদের পাঠানো ছবি ডাউনলোড না করার পাশাপাশি ওটিপি, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নম্বর ও পাসওয়ার্ড তথ্য হোয়াটসঅ্যাপে আদান-প্রদান না করার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ য় টসঅ য প ম য লওয ড উনল ড ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, নদীর পানিও বাড়ছে
সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত আছে। জেলা শহরের কাছে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করলেও গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ৯০ সেন্টিমিটার। এ সময় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ৭১ মিলিমিটার।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, দুদিন ভারী বৃষ্টি হওয়াতে জেলার নদী ও হাওরে পানি বাড়ছে। তবে হাওরে এখনো পানি কম আছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা সুনামগঞ্জে একইভাবে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই পানি ভাটিতে নামলে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে স্বল্প মেয়াদে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর এলাকায় (যেখানে পানি পরিমাপ করা হয়) আজ শনিবার দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৭৮ মিটার, যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ২ মিটার নিচে। গতকাল একই সময়ে এখানে সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৫ দশমিক ৮৮ মিটার। এখানে ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৯০ সেন্টিমিটার। বর্ষা মৌসুমে এখানে সুরমা নদীর পানির বিপৎসীমা ৮ দশমিক ৮০ মিটার।
শুধু সুরমা নয়, ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে জেলার তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত নদ যাদুকাটাতে উজানের ঢলের পানি নামছে। এখানেও পানি বেড়েছে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জের পাটনাই, কুশিয়ারা, নলজুর, চেলা, চলতি, রক্তি, বৌলাই, খাসিয়ামারাসহ সব নদীর পানি বাড়ছে। মূলত ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বেশি বৃষ্টি হলে ভাটিতে থাকা সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢল নামে। এতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
তাহিরপুর উপজেলার লাউরেড়গড় এলাকার বাসিন্দা সাইদুর রহমান বলেন, শনিবার সকাল থেকে বেশি পরিমাণে পাহাড়ি ঢল নামছে। এতে উপজেলার হাওরগুলো ঢলের পানিতে ভরে গেছে। এভাবে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার শনিবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘একইভাবে বৃষ্টি আরও দুদিন হতে পারে। ঢলের পানি নেমে হাওরে যাচ্ছে। এই বৃষ্টি সুনামগঞ্জের জন্য অনেকটা স্বাভাবিক। আমরা মনে করছি না সুনামগঞ্জে এতে বন্যা হবে।’