ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য হরিয়ানায় একই পরিবারের সাত সদস্য বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। স্থানীয় একজন পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া।

কর্মকর্তার মতে, হরিয়ানার পঞ্চকুলা শহরে একটি গাড়ির ভেতরে আত্মহত্যা করেছেন ওই সাত জন। গাড়ির ভেতর থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়েছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম খবর অনুসারে, মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোরে একটি গাড়ির ভেতরে কয়েক জনকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়ির দরজা ভেঙে সাত জনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন। তাদেরকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা সবাইকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের দুশ্চিন্তা বাড়ছে: অধীর চৌধুরী

ভারতের উপকূলে বিপজ্জনক পণ্যবাহী জাহাজডুবি, সতর্কতা জারি

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই পরিবারের সদস্যেরা উত্তরাখণ্ডের দেহরাদূনের বাসিন্দা। সোমবার ওই পরিবারের সদস্য প্রবীণ মিত্তল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে হরিয়ানার বাগেশ্বরধামে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার সময়ই এই ঘটনা ঘটে। সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার রাতের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে বলে মনে করা হচ্ছে। গাড়িতে ছিলেন ৪২ বছর বয়সী প্রবীণ মিত্তল, তার বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী এবং তিন সন্তান- দুই মেয়ে, এক ছেলে।

ভারী ঋণ এবং ব্যর্থ ব্যবসা এই ঘটনার পিছনে কারণ বলে জানা গেছে। 

পুলিশ দুই পৃষ্ঠার একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে ঘটনাস্থল থেকে। পরিবারের এই কঠোর পদক্ষেপের কারণ উল্লেখ করা হয়েছে নোটে। এতে লেখা হয়েছে ঋণের কারণে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার কারণে এই চরম পদক্ষেপ নিচ্ছেন তারা।

যা ঘটেছে তার সবকিছুই তার দোষ এবং তার শ্বশুরকে ঝামেলা না করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেছেন প্রবীণ মিত্তল। মরদেহগুলো একটি বেসরকারি হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র র

এছাড়াও পড়ুন:

আন্তর্জাতিক শুল্কের কারণে ব্যবসায়ে ব্যয় বেড়েছে

যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে শুল্ক বেড়ে যাওয়ার প্রভাবে ব্যবসায়ে ব্যয় বেড়ে গেছে। আগামীতে আরও বাড়তে পারে। বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসির সাম্প্রতিক এক জরিপে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো এমন তথ্য দিয়েছে।

জরিপে উঠে এসেছে ক্রমবর্ধমান ব্যয়, সরবরাহ চেইনে বিঘ্নতা, শুল্ক ও পরিবর্তনশীল বাণিজ্যনীতির প্রভাবে বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কৌশল ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে।

এইচএসবিসি ‘ট্রেড পালস’ নামে এ জরিপ সম্প্রতি প্রকাশ করেছে। জরিপে বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের ৫ হাজার ৭০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের বর্তমান শুল্ক ও বাণিজ্য বিষয়ে পরিকল্পনা ও মনোভাবের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। দুই-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে শুল্ক ও বাণিজ্য অনিশ্চয়তার কারণে ব্যয় বৃদ্ধির মুখোমুখি হয়েছে এবং তারা মনে করছে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। 

গত ৩০ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত জরিপ পরিচালিত হয়। জরিপে বাংলাদেশের ২৫০ প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকেই শুল্কের কারণে ব্যয় বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে। তবে অংশগ্রহণকারীদের উল্লেখযোগ্য অংশ আগামীতে আন্তর্জাতিক ব্যবসা সম্প্রসারণে আশাবাদী। অর্ধেকের মতো উত্তরদাতা জানিয়েছে, সম্প্রসারণে তাদের কৌশলগত পরামর্শের দরকার হবে। এইচএসবিসি বাংলাদেশ জরিপের বিষয়ে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।

জরিপে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশের ৫৪ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ৬১ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের ৫২ শতাংশ উত্তরদাতা চীনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশের ৬৫ শতাংশ, ভারতের ৫৪ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৫১ শতাংশ ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াচ্ছে। যুক্তরাজ্য (৪৬%), ভারত (৬২%) এবং বাংলাদেশের ৫৮ শতাংশ উত্তরদাতা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধির আশাবাদ বজায় রয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছে ভারত (৯৬%), বাংলাদেশ (৯৫%) ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (৯৪%)।

জরিপে অর্ধেকের বেশি অংশগ্রহণকারী সাপ্লাই চেইন কৌশলের জন্য ক্রমবর্ধমান খরচকে এক নম্বর উদ্বেগ হিসেবে দেখছে। ৮৫ শতাংশ উত্তরদাতা করপোরেট উচ্চতর খরচ বা বাজার পরিবর্তনের প্রতিফলনের জন্য তাদের ঊর্ধ্বমুখী মূল্য নির্ধারণ কৌশল নিয়েছে অথবা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তিন-চতুর্থাংশের বেশি প্রতিষ্ঠানকে তাদের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক মডেল পুনর্বিবেচনা করতে হচ্ছে। যদি শুল্ক সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা আগামী দুই বছর ধরে চলতে থাকে, তাহলে ৪৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের আন্তর্জাতিক সম্প্রসারণ কৌশল পুনর্বিবেচনা করবে এবং ৩৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের দেশীয় বা আঞ্চলিক বাজারে মনোযোগ দেবে।

এইচএসবিসি গ্লোবাল ট্রেড সলিউশনের প্রধান ভিভেক রামাচন্দ্রন বলেন, শুল্ক এবং বাণিজ্য অনিশ্চয়তার বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তারা এ পরিস্থিতিতেও তাদের কার্যক্রমে সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে এবং পরিস্থিতি মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।  

বাংলাদেশের জরিপের ফলাফল সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব উর রহমান বলেন, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে আশাবাদী মনোভাব দেখিয়েছেন। এইচএসবিসি বৈশ্বিক দক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কে সক্ষমতার মাধ্যমে গ্রাহকদের সঙ্গে কাজ করার জন্য এবং তাদের বৈশ্বিক সুযোগের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য সবসময়ই পাশে আছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ