ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন পদত্যাগ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র দিলে পরিচালনা পর্ষদ তা গ্রহণ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তির জন্য পাঠিয়েছে। আর ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রেফাত উল্লাহ খানকে এমডি (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি কর্পোরেট ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

২০১৫ সালের নভেম্বরে এমডি ও সিইও হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংকে যোগ দেন সেলিম আর এফ হোসেন। আগামী বছরের মার্চে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। নয় মাস বাকি থাকতে তিনি পদত্যাগ করলেন। ২০২৪-২৫ মেয়াদে প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান। এখন সেখানেও পরিবর্তন আনতে হবে।

জানতে চাইলে সেলিম আর এফ হোসেন সমকালকে বলেন, ‘সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছি। আমার মনে হয়েছে এখন বিদায় নেওয়া উচিৎ। সে জন্য পদত্যাগ করেছি। এখন ভালো কিছু করার চেষ্টা করবো।’ তবে আগামীতে কী করার পরিকল্পনা করছেন সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি। ব্যাংকের কর্মীদের কাছে এক গ্রুপ ইমেইল বার্তায় পদত্যাগের বিষয়টি জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যাংকে বুধবারই তার শেষ কর্মদিবস।

ব্যাংক খাতের সংস্কার নিয়ে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর বিআইবিএমের এক সভায় তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে লক্ষ্য করে বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের তদবিরের জন্য ব্যাংকিং খাত পাগল হয়ে যায়। আত্মীয়-স্বজনকে চাকরি দিতে হবে, পদোন্নতি দিতে হবে। বদলি করতে হবে। একদম তলা থেকে ওপর পর্যন্ত তদবিরের পর তদবির আসে। বিভিন্ন সুবিধার জন্য আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোকে ব্লাকমেইলিং করতে দিতে পারি না।’ 

এই বক্তব্য নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তিনি ক্ষমা চেয়ে ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। পরে ব্যাংকটির পর্ষদ বিবৃতি দিয়ে জানায়, এমডির বক্তব্যের সঙ্গে তারা একমত নয়। এর সঙ্গে ব্যাংকের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এরপরও তার মন্তব্যের কারণে সৃষ্ট বিভ্রান্তির জন্য ব্যাংক গভীরভাবে দুঃখিত। এই পদত্যাগের সঙ্গে ওই সময়ে দেওয়া বক্তব্যের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা জানা যায়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পদত য গ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ