বার্সেলোনায় তাঁরা সতীর্থ ছিলেন। এখন সেটা চলছে ইন্টার মায়ামিতে। লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজ বেশ কয়েক বছর ধরেই মাঠের সতীর্থ। মাঠের বাইরে তাঁরা অন্তরঙ্গ বন্ধুও। এবার ব্যবসায়িকভাবে জুটি বেঁধে এ সম্পর্ককে তাঁরা নিয়ে যাচ্ছেন পরের ধাপে।

সুয়ারেজ গত মঙ্গলবার জানিয়েছেন, জন্মভূমি উরুগুয়েতে তিনি একটি ক্লাব স্থাপন করেছেন। আর সেই ক্লাবে থাকছে মেসির ভূমিকাও।

আরও পড়ুনইয়ামালের চুক্তি স্বাক্ষরের ছবি কেন প্রকাশ করেনি বার্সা, কারণ জানলে অবাক হবেন ২ ঘণ্টা আগে

উরুগুয়ের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা সুয়ারেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে জানিয়েছেন, দেপোর্তিভো এলএস নামে পরিচিত ক্লাবটির নাম পাল্টে দেপোর্তিভো ‘এলএসএম’ রাখা হয়েছে এবং উরুগুয়ের চতুর্থ বিভাগে খেলবে এই ক্লাব। সুয়ারেজ ও মেসির নামের সঙ্গে মিল রেখেই ক্লাবের এই নতুন নামকরণ করা হয়েছে।

সুয়ারেজের ভাষায়, ‘দেপোর্তিভো এলএস আমার পারিবারিক স্বপ্ন, যেটা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। প্রায় ৩ হাজারের বেশি সদস্য নিয়ে আমরা বেড়ে উঠেছি। যে জায়গাকে আমি ভালোবাসি, যেখানে আমি বেড়ে উঠেছি, সেই উরুগুয়ে ফুটবলে কিশোরদের বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দিতে চাই।’

৩৮ বছর বয়সী সুয়ারেজ উরুগুয়ের জার্সি তুলে রেখেছেন গত সেপ্টেম্বরে। মেসির সঙ্গে বার্সেলোনায় ছয় মৌসুম খেলার পর মায়ামিতে দুই বছর ধরে তাঁরা সতীর্থ।
সেই ভিডিওতে সুয়ারেজের পাশে বসে থাকা মেসি বলেন, ‘আমি গর্বিত যে তুমি আমাকে বেছে নিয়েছ। সামনে এগিয়ে যেতে এবং সবচেয়ে বড় কথা এ বিষয়ে তোমার পাশে থাকতে আমি সবকিছু দিয়ে সাহায্য করতে চাই।’

ক্লাবের এই প্রকল্পে ৩৭ বছর বয়সী মেসির ভূমিকা এখনো নিশ্চিত করে জানা যায়নি। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ক্লাবের অংশীদার মানে সুয়ারেজের ‘পার্টনার’ হবেন মেসি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আরও জানিয়েছে, উরুগুয়ে ও ইন্টার মিলানের সাবেক অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার আলভারো রেকোবা হবেন এই ক্লাবের কোচ।

আরও পড়ুনআনচেলত্তির প্রথম ম্যাচে ব্রাজিলের একাদশে কারা থাকছেন ৩ ঘণ্টা আগে

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুয়ারেজের ঘোষণার সঙ্গে ক্লাবটির ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলও চালু করা হয়। প্রথম দুই ঘণ্টায় ৪০ হাজারের বেশি অনুসারী পেয়েছে ‘এলএসএম’। এখন অনুসারীর সংখ্যা ২ লাখ ৯৬ হাজার। মেসির এ প্রকল্পে অংশ নেওয়ার ঘোষণাটি ক্লাবের ইনস্টগ্রাম হ্যান্ডলে পোস্ট করা ভিডিওতে জানান সুয়ারেজ। ৮০ জন পেশাদার কর্মী রয়েছেন এই ক্লাবে।

উরুগুয়ের রাজধানী মন্টেভিডিওর উপকণ্ঠ সিউদাদ দে লা কস্তায় ২০১৮ সালে ২০ একর জায়গা নিয়ে স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরি করেন সুয়ারেজ ও তাঁর পরিবার। ৩ হাজারের বেশি সদস্যের জন্য এই স্পোর্টস কমপ্লেক্সে অনেক রকম প্রকল্প চালু আছে। ১৪০০ আসনের একটি স্টেডিয়ামও আছে এই ক্লাবের, যেটার মাঠ সিনথেটিক টার্ফে বানানো। স্টেডিয়ামের বাইরেও মাঠ আছে এই ক্লাবের।

মেসি ২০২৩ সালে মায়ামিতে যোগ দেন। মেজর লিগ সকারের এ ক্লাবে পরের বছর যোগ দেন সুয়ারেজ। ২০২৫ মৌসুম পর্যন্ত মায়ামিতে দুজনের চুক্তির মেয়াদ। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষ দিকে দুজনই মায়ামিতে চুক্তি নবায়ন করতে পারেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই ক ল ব

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই বিরোধিতা: ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’

জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিরোধী তালিকায় থাকা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৩০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত এবং একই অভিযোগে ৩৩ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার বা সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

আ.লীগে যোগ দেওয়া মুবিনকে আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার 

ববির ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

সিন্ডিকেট সভা সূত্রে জানা গেছে, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে ভূমিকায় থাকা ইবির ১৯ জন শিক্ষক, ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ‘শাস্তি নির্ধারণ কমিটি’ করবেন উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।

এদিকে একই অপরাধে জড়িত থাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট। যাদের পড়াশোনা শেষ হয়েছে, সেই শিক্ষার্থীদের সনদ বাতিল করা হবে। আর যারা অধ্যয়নরত, তাদের বহিষ্কার করা হবে।

এর আগে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে ভূমিকায় অবতীর্ণ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের চিহ্নিতকরণে গত ১৫ মার্চ আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন। 

এই কমিটি প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ, বিভিন্ন তথ্যচিত্র, ভিডিও এবং পত্রিকার খবর পর্যালোচনা করে তালিকায় থাকা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানবিরোধী এবং নিবর্তনমূলক কার্যকলাপের সংশ্লিষ্টতা পায়।

কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সর্বশেষ কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভায় তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সাময়িক বরখাস্তের তালিকায় থাকা শিক্ষকরা হলেন: ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ ও অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন ও অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. এইচ. এম আক্তারুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. মিয়া রাশিদুজ্জামান।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিনসহ আরো রয়েছেন, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহজাহান মণ্ডল ও অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাজেদুল হক, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা বানু, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন।

সাসপেন্ড হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকায় রয়েছেন প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখার উপ-রেজিস্ট্রার আলমগীর হোসেন খান ও আব্দুল হান্নান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরের সহকারী রেজিস্ট্রার ও কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুট, একই দফতরের উপ-রেজিস্ট্রার আব্দুস সালাম সেলিম, প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখার উপ-রেজিস্ট্রার ড. ইব্রাহীম হোসেন সোনা। 

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শাখা কর্মকর্তা উকীল উদ্দিনসহ তালিকায় নাম রয়েছে ফার্মেসি বিভাগের জাহাঙ্গীর আলম (শিমুল), আইসিটি সেলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জে এম ইলিয়াস, অর্থ ও হিসাব বিভাগের শাখা কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হোসেন, তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ দপ্তরের উপ-রেজিস্ট্রার (ফটোগ্রাফি) শেখ আবু সিদ্দিক রোকন এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরের সহকারী রেজিস্ট্রার মাসুদুর রহমানের।

বহিষ্কার ও সদন বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন: ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৩-১৪ বর্ষের বিপুল খান, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৪-১৫ বর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের মেহেদী হাসান হাফিজ ও শাহীন আলম, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের রতন রায়। 

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৪-১৫ বর্ষের মুন্সি কামরুল হাসান অনিকসহ তালিকায় রয়েছেন, মার্কেটিং বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের হুসাইন মজুমদার, বাংলা বিভাগের ২০১৬-১৭ বর্ষের তরিকুল ইসলাম।

ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের মৃদুল রাব্বী, ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের ফজলে রাব্বী, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শাকিল, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিমুল খান, আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের কামাল হোসেন, ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের মাসুদ রানা, আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের মেজবাহুল ইসলাম বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের তালিকায় রয়েছেন। 

সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের অনিক কুমার, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের আব্দুল আলিম, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের বিজন রায়, শেখ সোহাগ ও শাওনও এই শাস্তি পেয়েছেন। 

জুলাই অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করায় শাস্তি পেয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের তানভীর ও শেখ সাদি, সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের মাজহারুল ইসলাম, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের মনিরুল ইসলাম আসিফ, সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের মারুফ ইসলাম, চারুকলা বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের পিয়াস, বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের ফারহান লাবিব ধ্রুব, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের প্রাঞ্জল, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের নাবিল আহমেদ ইমন।

ফিনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের রাফিদ, লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের আদনান আলি পাটোয়ারি, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের লিয়াফত ইসলাম রাকিব এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের ইমামুল মুক্তাকী শিমুলও শাস্তির তালিকায় রয়েছেন। 

এদিকে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে প্রকাশ্যে বিরোধিতাকারী হিসেবে এই ৬৩ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিলেও তাদের উস্কানিদাতা এবং পেছন থেকে আন্দোলন দমনকারী অনেকেই ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। একই অভিযোগ অভিযুক্তদেরও। তবে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলমান রয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

ঢাকা/তানিম/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগের ভোটের সবাই বাদ, ‘যোগ্য’ নতুন ডিসি খুঁজে পাচ্ছে না সরকার
  • জুলাই বিরোধিতা: ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’